রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১২:২৫:০৩

মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে ইলিশের দামে বড় পতন! ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়ে

মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে ইলিশের দামে বড় পতন! ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়ে

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ঘন কুয়াশা সত্ত্বেও অগ্রহায়নের ভোরে মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম মৎস্য আড়তে দেখা গেল জমজমাট ইলিশের হাট। রুপালি জাতীয় মাছের স্বাদ নিতে আসা ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়ে মুখর ছিল পুরো আড়ত এলাকা।

দুই দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ইলিশের দাম কমেছে সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা। তবু বাজারে অন্য মাছের উর্ধ্বমুখী দরে অসন্তোষ ভোক্তা ও পাইকারদের।
 
হাটে সোয়া কেজি ওজনের বড় ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২,৬০০ টাকায়। এক কেজি ওজনের ইলিশের দর দাঁড়িয়েছে ২,২০০ টাকা। ছোট ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। অন্যদিকে বাজারে নিষিদ্ধ জাটকা প্রকাশ্যে বিক্রি হওয়ায় উদ্বেগ জানিয়েছেন পরিবেশবাদী ও নিয়মিত ক্রেতারা।
 
ইলিশ ছাড়াও হাটে উঠেছে চিতল, মৃগেল, আইড়, বোয়াল, রুই, কাতল, পাঙ্গাস, শোল, কৈ-শিংসহ বিভিন্ন দেশি–বিদেশি মাছ। রয়েছে হিমায়িত সামুদ্রিক মাছও। তবে বেশিরভাগ মাছের দামই ভোক্তাদের নাগালের বাইরে বলে অভিযোগ।
 
অনেক ক্রেতা অভিযোগ করেন, ‘ইলিশের দাম কিছুটা কমলেও অন্য মাছের দাম একেবারেই নিয়ন্ত্রণে নেই। সিন্ডিকেটের কারণে বাজার সহনীয় থাকে না।’

মিরকাদিমের আড়তদাররা বলছেন, নদীতে ইলিশ ধরা কমে যাওয়ায় এবং সরবরাহ আগের তুলনায় নিম্নমুখী হওয়ায় বাজারে চাপ তৈরি হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পরিবহন সংকট।
 
মৎস্য  ব্যবসায়ী মিরকাদিম মৎস্য আড়ত সমিতির সভাপতির সাবেক সভাপতি  হাজী রুহুল আমিন জানান, ধলেশ্বরীর মূল প্রবাহ সরে যাওয়ায় এখন আড়তসংলগ্ন লঞ্চঘাট ব্যবহার করা যায় না। ফলে নদীপথে মাছ আনার খরচ বেড়ে গেছে।
 
মিরকাদিম মৎস্য আড়ত সমিতির সভাপতি আল হেলাল রয়েল বলেন, ‘এটি দেশের অন্যতম বৃহৎ মাছের হাট। এখানে ৪৩টি আড়তকে ঘিরে তিন হাজারের বেশি মানুষের জীবিকা চলে। সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়ে যাচ্ছে। পরিবহন খরচও এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি।’
 
ধলেশ্বরী তীরের শতাব্দীপ্রাচীন এই হাটে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত চলে লেনদেন। মাত্র ২–৩ ঘন্টার মধ্যেই বিক্রি হয় প্রায় কোটি টাকার মাছ।
 
মিরকাদিম আড়তে মাছের চলতি দর (প্রতি কেজি) 

ইলিশ ৪০০–২,৬০০ টাকা, নদীর পাঙ্গাস ৭০০–১,০০০ টাকা, চাষের পাঙ্গাস ১৫০–২০০ টাকা, চাষের রুই ৩০০–৩৮০ টাকা, চাষের কাতল ৪৫০–৫৫০ টাকা, নদীর কাতল ৬০০–৭০০ টাকা, দেশি বোয়াল ৭০০–৮০০ টাকা, চাষের বোয়াল৫০০–৬০০ টাকা, গলদা চিংড়ি৬০০–১,০০০ টাকা, নদীর আইড় ১,০০০–১,২০০ টাকা, চাষের কৈ ১৮০–২০০ টাকা, দেশি কৈ ১,০০০–১,২০০ টাকা, দেশি শিং ৮০০–১,০০০ টাকা, চাষের শিং৩০০–৪০০ টাকা, চিতল ৪০০–৭০০ টাকা, কোরাল ৬০০–৮০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৬০–২৫০ টাকা, পাবদা ২৮০–৩৫০ টাকা
 
বাজারে সরবরাহ কম, পরিবহন সংকট ও নিষিদ্ধ জাটকার দাপট—এসব মিলিয়ে মিরকাদিমের মাছের বাজারে বেড়েছে অস্বস্তি, ক্ষোভ বাড়ছে ভোক্তা ও পাইকার উভয়ের মধ্যে। তবে আড়তদাররা আশা করছেন, নদীতে মাছ বাড়লে দ্রুতই বাজার স্থিতিশীল হয়ে উঠবে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে