রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ০৪:৫০:৩৪

প্রেমের টানে মুন্সীগঞ্জে চীনা যুবক, নাম পাল্টে জেসিকাকে করেছেন বিয়ে

প্রেমের টানে মুন্সীগঞ্জে চীনা যুবক, নাম পাল্টে জেসিকাকে করেছেন বিয়ে

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : মুন্সীগঞ্জের টংগিবাড়ীতে প্রেমের টানে ছুটে এসেছেন চীনের তরুণ লি ইয়াং। বাংলাদেশে এসে তিনি নিজের নাম রেখেছেন আবদুল্লাহ। এরপর ফেসবুকে পরিচিত হওয়া কাঠাদিয়া গ্রামের মঞ্জুরি আক্তার জেসিকাকে বিয়ে করে এখন শ্বশুরবাড়িতেই বসবাস করছেন। এ ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় ব্যাপক আগ্রহ ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দেড় বছর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে লি ইয়াং-এর সঙ্গে পরিচয় হয় জেসিকার। পরে ভাষা ট্রান্সফার অ্যাপের সাহায্যে নিয়মিত কথা বলতে বলতে তাদের সম্পর্ক প্রেমে রূপ নেয়। ছয় মাস আগে থেকেই লি ইয়াং বাংলাদেশে এসে জেসিকাকে বিয়ে করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদেশি নাগরিকদের বিয়ে করে প্রতারণার নানা সংবাদ দেখে জেসিকা শুরুতে রাজি ছিলেন না। পরে চীনা যুবকটি নিজের মা-বাবার সঙ্গে জেসিকার মায়ের কথা বলিয়ে দিলে তারা কিছুটা আশ্বস্ত হন।

১৪ নভেম্বর সকালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন লি ইয়াং। সেখান থেকে জেসিকা তাকে সরাসরি মুন্সীগঞ্জে নিয়ে যান। পরে সদর উপজেলার মীর কাদিম এলাকার একটি কাজি অফিসে ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের সময় লি ইয়াং নিজের নাম পরিবর্তন করে ‘আব্দুল্লাহ’ রাখেন। পরে চীনা দূতাবাসে বিয়ের কাগজপত্রের এফিডেভিট করেন নবদম্পতি।

সরেজমিনে দেখা যায়, জেসিকার বাড়িতে চলছে উৎসুক মানুষের ভিড়। বাড়ির বাইরে বের হলেই আবদুল্লাহকে ঘিরে ধরছেন স্থানীয়রা। জেসিকা জানান, তারা তিন বোন ও এক ভাই। বাবা তিন বছর আগে মারা গেছেন। এসএসসি পাস করে তিনি মা ও ছোট ভাইকে নিয়ে থাকতেন। 

জেসিকা জানান, আবদুল্লাহ আমাকে অনেক বুঝিয়েছে। বলেছে, সবাই খারাপ নয়। ছয় মাস ধরে বারবার বাংলাদেশে আসতে চাইছিল। আমি নিষেধ করলেও সে বলেছে, আমাকে ছাড়া তার চলবে না। তাই শেষ পর্যন্ত এসেছে, এবং আমরা বিয়ে করেছি।

তিনি আরও বলেন, আবদুল্লাহ এক মাস মেয়াদি ভিসায় বাংলাদেশে এসেছেন। জেসিকার ভিসার প্রসেসিং চলছে। ভিসা পেলে তিনি স্বামীর সঙ্গে চীন চলে যাবেন। সে বলেছে, চীনে গিয়ে যদি আমার মন খারাপ হয়, তবে আবার আমাকে বাংলাদেশে নিয়ে আসবে।

পরিবারের সদস্যরা জানান, আবদুল্লাহ খুব সহজ-সরল এবং ভদ্র স্বভাবের। তিনি স্থানীয়দের মতোই পরিবারের সঙ্গে একই খাবার খাচ্ছেন। মাছ খেতে তার বিশেষ পছন্দ। 

জেসিকার এক ফুফু বলেন, মেয়েটা কোনো ভুল করেনি। ধর্ম অনুযায়ী বিয়ে করেছে। সম্পর্কটাও পবিত্র। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।

স্থানীয় বাসিন্দা বিপু মাদবর জানান, আমার ভাতিজির সঙ্গে চীনা যুবকের সম্পর্ক ছিল। প্রেমের টানে সে বাংলাদেশে এসেছে। তার আচরণ খুবই ভদ্র।

পুলিশের গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, যুবকের প্রকৃত নাম মি. লি ইয়াং। বাবার নাম লি গুয়াং। তিনি চীনের রাজং সিটির নানজিয়াং কান্ট্রির বাসিন্দা। সম্পর্কের একপর্যায়ে তিনি বাংলাদেশে এসে বিয়ে করেন এবং বর্তমানে স্ত্রী জেসিকাকে নিয়ে কাঠাদিয়ায় অবস্থান করছেন।

এ বিষয়ে টংগিবাড়ী থানার ওসি মো. সাইফুল আলম জানান, খবর পাওয়ার পর আমরা প্রথমে শুক্রবার রাতে পুলিশ পাঠাই। পরে আবার গোয়েন্দা পুলিশ পাঠিয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেছি।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে