নিউজ ডেস্ক: শনিবার সকালে পাইকপাড়া কবরস্থানের কাছে তিন তলা ভবনটি ঘিরে পুলিশের অভিযান চলে। এক ঘণ্টার মধ্যে ‘অপারেশন হিট স্ট্রং টোয়েন্টি সেভেন’ শেষ হয় বলে জানান পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক।
অভিযান শেষে শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “অপারেশন শেষে আমরা ভেতরে ঢুকে দেখতে পাই তিনজন জঙ্গি নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে একজনের চেহারা তামিম চৌধুরীর যে ছবি আমাদের কাছে আছে, তার সঙ্গে হুবহু মিলে যাচ্ছে। এতে স্পষ্ট সে তামিম চৌধুরীই হবে।”
অন্য দুজনের পরিচয় পাওয়া না গেলেও অভিযানে থাকা গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার ছানোয়ার হোসেন বলেন, এদের একজন জঙ্গি দলটির ‘গুরুত্বপূর্ণ’ কেউ বলে তাদের ধারণা।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাংবাদিকদের বলেন, “মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী এই অভিযানে নিহত হয়েছে এবং তার সঙ্গে তার দুই সহযোগী… তাদের পরিচয় আমরা ইনভেস্টিগেশনের পরে জানাব। আমরা মনে করি, তামিম চৌধুরীর সবচেয়ে বড় সহযোগী এখানে নিহত হয়েছে।”
গুলশান হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশি তামিমকে চিহ্নিত করেছিল পুলিশ। তাকে ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা ছিল। তাকে ‘নব্য জেএমবি’র প্রধান বলছে পুলিশ।
তামিমের সঙ্গে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা রয়েছে সেনাবাহিনীতে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকের জন্যও। জিয়া আরেক জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহর নেতৃত্বে রয়েছেন বলে পুলিশের দাবি।
এছাড়া গুলশান হামলার আরেক ‘হোতা’ হিসেবে নুরুল ইসলাম মারজানের নাম বলছে পুলিশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই ছাত্রও জেএমবির নেতা বলে পুলিশের দাবি।
সম্প্রতি চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা বলেছিলেন, মারজান পুলিশের ‘নেটওয়ার্কের’ মধ্যে রয়েছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, “তামিম চৌধুরীর চ্যাপ্টার এখানে শেষ হয়েছে। বাকি যে জঙ্গিরা রয়েছে তাদের আমরা শিগগিরই ধরতে পারব।”
নারায়ণগঞ্জের এই বাড়িটি এই মাসের শুরুতে তামিমরা ভাড়া নিয়েছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ প্রধান শহীদুল হক বলেন, জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। সেই সুযোগ তারা গ্রহণ না করে পুলিশের দিকে গ্রেনেড ও গুলি ছোড়ে। তখন পুলিশ অভিযানে যায়।
অভিযানে থাকা ছানোয়ার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জঙ্গিরা প্রচুর গুলি ছুড়ছিল, কল্যাণপুরের চেয়েও এখানে গুলি ছুড়েছিল বেশি। তারা ছয়টি গ্রেনেড ছুড়েছিল।”
তিনি জানান, ঘরের দরজার কাছে দুজনের লাশ পড়েছিল, তামিমের লাশ ছিল ঘরের ভেতরে। তামিমের কাছে গ্রেনেড এবং বাকি দুজনের একজনের কাছে এ কে-২২ রাইফেল এবং পিস্তল ছিল।- বিডিনিউজ
২৬ আগস্ট, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস