নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে কুকুর লেলিয়ে রিকশাচালক আবদুর রাজ্জাককে বর্বর নির্যাতনের ঘটনায় ওই দুটি কুকুর জব্দ করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ জামতলায় নির্যাতনকারীর বাসা হতে ওই দুটি কুকুর জব্দ করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার এসআই ফায়জুর বৃহস্পতিবার আসামি রুপুর বাড়িতে গিয়ে বিদেশী কুকুর ২টি জব্দ করে রুপুর মা শিউলী বেগমের হেফাজতে রেখে আসেন। ওই বাড়ির ছাদে বিরল প্রজাতির চিল ও বাজপাখিও দেখা গেছে। এসব পাখি পোষার কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনে রুপুর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হবে বলে এসআই ফায়জুর জানান।
তিনি বলেন, রুপুর বাড়ি থেকে জব্দ করা কুকুর ২টি ইংল্যান্ডের ‘রড হুইলার’ জাতের। এছাড়া বাজ ও চিলগুলো প্রায় বিলুপ্ত প্রজাতির।
এদিকে ৬ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। ঘটনার ৩ দিন পর গত ৭ আগস্ট মঙ্গলবার দুইজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ২-৩ জনকে আসামি করে নির্যাতনের শিকার রিকশাচালক রাজ্জাক ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা দায়েরের পর আরো তিন দিন কেটে গেছে।
বর্বর এই ঘটনার পর ছয়দিন পেরিয়ে গেলেও আসামিদের কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় এলাকবাসী।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শাহ মঞ্জুর কাদের বলেন, আজ না হয় কাল আসামিদের গ্রেফতার হতেই হবে। পুলিশ আসামিদের গ্রেফতারের জন্য কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাতে জামতলা এলাকার আবদুর রহিমের বাড়ির প্রহরী মহিউদ্দিনের কাছে পাওনা ৭ হাজার টাকা আনতে গেলে বাড়ির মালিকের ছেলে মাহাবুবুর রহমান রুপু তার বাড়ির প্রহরী মহিউদ্দিনের পক্ষ নিয়ে পাওনাদার রাজ্জাককে মারধর করে বাড়ির ছাদে নিয়ে যায়। সেখানে পোষা বিদেশী ২টি কুকুরের ঘরে রাজ্জাকে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। কুকুরগুলোর হামলায় রাজ্জাক গুরুতর আহত হলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
এদিকে ঘটনার শিকার আবদুর রাজ্জাকের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। বুধবার নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের নার্সরা তাকে ইনজেকশন পুশ করতে অপারগতা প্রকাশ করে ডাক্তারের মাধ্যমে ইনজেকশন পুশ করতে পরামর্শ দেন। সেই সঙ্গে রাজ্জাকের ব্যবহৃত থালা, বাটিসহ অন্যান্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র আলাদা করে দিতেও পরামর্শ দেয়া হয় তার স্ত্রী শেফালীকে।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২২ এপ্রিল চট্টগ্রামে বন্ধুদের লেলিয়ে দেওয়া জার্মান প্রজাতির ডোবারম্যান জাতের কুকুরের কামড়ে আহত হয় হিমাদ্রি মজুমদার নামে ‘এ’ লেভেলের এক স্কুলছাত্র। ঘটনার পর ২৭ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় হিমাদ্রি। ঘটনাটি ওই সময় দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। ওই ঘটনায় পিতা-পুত্রসহ পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল চট্টগ্রামের একটি আদালত।