নারায়ণগঞ্জ : কাঁচপুরে চার লেন বিশিষ্ট দ্বিতীয় সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে খুলে দেওয়া হবে সেতুটি। এতে করে কাচঁপুরে র্দীঘদিনের যানজটের ভোগান্তি থেকে মুক্তি মিলবে চালক ও যাত্রীদের।
সেতু বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক। ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের প্রবেশ পথের ট্রানজিট রুট শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর কাচঁপুর সেতু। সেতুটি ১৯৭৭ সালে নির্মাণ করা হয়েছিল। দু’লেন দু’লেন চার লেন বিশিষ্ট এই সেতুটি দিয়ে গড়ে প্রতিদিন ৩০ হাজারের বেশি যানবাহন চলাচল করে। ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে কাচঁপুর সেতু পর্যন্ত আট লেন বিশিষ্ট সড়ক। চার লেনে গাড়ি এসে কাচঁপুর সেতুতে যানবাহন উঠতে হতো দু’লেনে। এতে প্রায় প্রতিদিনই দুঃসহ যানজটের ভোগান্তি পোহাতে হতো যাত্রী ও চালকদের। পাঁচ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে সময় লাগত দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। এই ভোগান্তি থেকে মুক্তির জন্য বাংলাদেশ সরকারের সেতু বিভাগ ও জাপানের (জাইকার) যৌথ অর্থায়নে দ্বিতীয় কাঁচপুর, দ্বিতীয় মেঘনা ও দ্বিতীয় মেঘনা গোমতি নদীর ওপর এ তিনটি সেতুর কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে। এরই মধ্যে নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৬ মাস আগেই শেষ হয়েছে কাচঁপুর সেতুর কাজ নির্মাণ কাজ। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা।
নারায়ণগঞ্জের কাচঁপুরের বাসিন্দা আরাফাত রহমান বলেন, ‘দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। যত দ্রুত সেতুটি উদ্বোধন করে যানবাহন চলাচল কারার জন্য খুলে দেওয়া হবে, তত দ্রুত মানুষ ভোগান্তির হাত থেকে রক্ষা পাবে।’
স্টার লাইন বাসের চালক সাহাবুদ্দিন মিয়া বলেন, ‘এই সড়কটি খুলে দেওয়া হলে দীর্ঘ দিনের ভোগান্তির হাত থেকে রক্ষা পাব। এজন্য সরকারকে দ্রুত সেতুটি উদ্বোধন করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।’
দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতুর অ্যাডমিন ম্যানেজার নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘৩৯৭ দশমিক ৩০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১৮ দশমিক ১ মিটার প্রস্থ চার লেন বিশিষ্ট এই সেতুটি নিমার্ণ করা হয়েছে ৬ টি স্প্যানের ওপর। জাপানের চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত একটি প্রতিষ্ঠান সেতুটির কাজ পায়। বাংলাদেশে জাপান যৌথভাবে এই প্রথম জাপানের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার মাধ্যমে কাঁচপুর দ্বিতীয় সেতুর নিমার্ণ কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধু উদ্বোধনের উপেক্ষা।’
দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতুর ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার ফারিহা আজম বলেন, ‘জাইকার অর্থায়নে বাংলাদেশে প্রথম স্টিল পাইল শিট পাইল এবং আরসিসি সিআইপি পাইল, আরসিসি পিয়ার এবং স্টিল ন্যারো বক্সগার্ডা সুপার স্ট্রাকচারে এই প্রযুক্তিটি ব্যবহার করা হয়েছে। নয়া সেতুটির আয়ুকাল ধরা হয়েছে একশ বছর।’
দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতুর অতিরিক্ত প্রজেক্ট ডিরেক্টর রেহানা হক বলেন, ‘দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতুটি নির্মাণ করতে ব্যয় হয়েছে ৯৫০ কোটি টাকা। নতুন সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার পরই পুরাতন কাঁচপুর সেতুর সংস্কার কাজ শুরু হবে। এতে পুরাতন সেতুর সংস্কারে ব্যয় হবে ২৭০ কোটি টাকা এবং কাঁচপুর চার রাস্তার পয়েন্টে ওভারপাস নির্মার্ণে ব্যয় হবে ৮০ কোটি টাকা। মোট ব্যয় হবে ১৩শ’ কোটি টাকা। এসব কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৯ এর ডিসেম্বর মাসে। কিন্তু জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলো টাইম সিডিউল ভালভাবে মেনে চলার কারণে নির্ধারিত সময়ের ছয় মাস আগেই সব কাজ শেষ হয়েছে।’