নারায়ণগঞ্জ থেকে : চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমান বন্দর থেকে দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের বিজি ফ্লাইট ১৪৭ ছিনতাই চেষ্টাকারী পলাশ মাহমুদ ওরফে মাহিবি জাহান প্রসঙ্গে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ।
সোমবার বেলা ৩ টায় সাংবাদিক সম্মেলনে নিহত পলাশ মাহমুদ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন। এসপি হারুন অর রশিদ বলেন, চট্টগ্রাম বিমান বন্দর থেকে বিমান ছিনতাই চেষ্টার মূল হোতা পলাশ সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেছি। আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সে মাদরাসার ছাত্র ছিল। দাখিল পাশ করার পরেই পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হতে থাকে।
তার বাবা মায়ের কাছ থেকে জানা যায়, সে বিভিন্ন চলচ্চিত্র টিমের সাথে কাজ করতো বলে জানায় পলাশ। ঘটনার আগে গত শুক্রবার দুবাই যাওয়ার কথা বলে বাসা ছাড়ে সে। পরবর্তীতে পুলিশ ও গণমাধ্যম কর্মীরা ব্যাপারটি জানালে পরিবার তাদের ছেলের ব্যাপারে নিশ্চিত হন।
সম্মেলনে এসপি আরো জানান, পলাশের বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা নেই। তবে জানতে পেরেছি অতীতে নারী ঘটিত একটি মামলা ছিল তার বিরুদ্ধে। এলাকার লোকজনের সাথে তেমন মিশতো না। এ ছাড়া বেশ কিছু বছর পূর্বে দুবাই লোক পাঠানোর কথা বলে প্রতারণা করার অভিযোগ দিয়েছে এলাকাবাসী।
পলাশের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে পুলিশ সুপার জানান, পলাশের পরিবার জানিয়েছে তাদের বাসায় দুইবার অভিনেত্রী শিমলা এসেছিলো। এবং তারা বিবাহিত বলেও দাবি করা হয়। এ ব্যাতিত তার অন্য কোনো বিষয় জানতো না তার পরিবার। মূলত পরিবারের সাথে বিচ্ছিন্ন থাকতো সব সময়।
এই ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ পুলিশের ভূমিকা কি হবে জানতে চাইলে এসপি বলেন, আমরা আপাতত তথ্য নিশ্চিতের কাজ করেছি। র্যাব থেকে তাকে আসামি দাবি করা হলেও আমরা সেই তথ্য পাইনি, তবে র্যাবের দাবিকে ভুল বলছি না, সে আসামি হতেও পারে। মামলা নারায়ণগঞ্জ হওয়ার সম্ভাবনা নেই তাই আমরা ঘটনা সম্পর্কে কিছু বলতে পারবো না। তবে যদি তদন্তের স্বার্থে আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হয় তখন বিস্তারিত আরো জানার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। নিহত পলাশ সোনারগাঁও উপজেলার মঙ্গলেরগাঁও এলাকার দুধঘাটা এলাকার পিয়ার জাহানের ছেলে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বিমানের নতুন উড়োজাহাজ ময়ূরপঙ্খী রবিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১৪২ জন যাত্রী ও পাঁচজন ক্রু নিয়ে দুবাই যাচ্ছিল। কিছু সময় পর বিমানটি ১৫ হাজার ফুট উপরে ওঠার পর বিমানের যাত্রী সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামের পিয়ার জাহানের ছেলে মাহাদী একটি পিস্তল দেখিয়ে বিমানটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালায়।
এ সময় চালক বিমানটিকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করান। এরপর প্রায় ৩ ঘণ্টার টান টান উত্তেজনার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কমান্ডো অভিযানে মাহাদীর মৃত্যুর মধ্যদিয়ে বিমান ছিনতাই চেষ্টার ঘটনার অবসান ঘটে। এ সময় মাহাদীর হাতে থাকা অস্ত্রটি একটি খেলনা পিস্তল ছিলো বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।