নারায়ণগঞ্জ : চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কমান্ডো অভিযানে নিহত পলাশ আহমেদের লাশ সোনারগাঁওয়ে তার পৈতৃক বাড়ির কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সোয়া ৯ টার দিকে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামের সেনবাগ কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।
এর আগে সকাল ৮টার দিকে পলাশ আহমেদের লাশ চট্টগ্রাম থেকে পিরোজপুরের দুধঘাটা গ্রামে আনা হয়। সোমবার রাত ১২টার দিকে পলাশের মরদেহ তার বাবা পিয়ার জাহান সরদারের কাছে বুঝে দেন চমেক কর্তৃপক্ষ। এরপর তিনি ছেলের লাশ নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন।
এর আগে দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) পলাশের লাশে ময়নাতদন্ত করা হয়। সন্ধ্যায় বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় সিএমপির পতেঙ্গা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। মামলায় পলাশ মাহমুদ ছাড়াও অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়েছে।
পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উৎপল বড়ুয়া জানান, সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০১২ এর ৬ ধারা এবং বিমান নিরাপত্তা বিরোধী অপরাধ দমন আইন, ১৯৯৭ এর ১১ (২) ও ১৩ (২) ধারায় মামলাটি দায়ের হয়েছে।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সিভিল এভিয়েশন বিভাগের প্রযুক্তি সহকারী দেবব্রত সরকার বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বিমান ছিনতাই চেষ্টায় একজনই জড়িত ছিলেন। পলাশ আহমেদের নামে সেই যুবক রবিবার রাতে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে কমান্ডো অভিযানে নিহত হন।
সিএমপির পতেঙ্গা থানার ওসি উৎপল বড়ুয়া জানান, সোমবার দুপুরে পলাশের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। রাতে বাবা পিয়ার জাহান সর্দার এসে লাশ শনাক্ত করেন। পরে তিনি লাশ বুঝে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে চলে যান।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিজি-১৪৭ রবিবার বিকালে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পরপরই ওই যুবক অস্ত্র ঠেকিয়ে জিম্মি করেন বিমানের ক্রুদের। সেই অবস্থাতেই বিমানের পাইলট চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানটি অবতরণ করান। যাত্রী ও ক্রুদের নামিয়ে আনার পর কমান্ডো অভিযান চালানো হয়।
অভিযান পরিচালনাকারীরা জানিয়েছেন, বিমান ছিনতাইয়ে জড়িত যুবক তার স্ত্রীর সঙ্গে সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। পরে জানা যায়, তিনি চিত্রনায়িকা শিমলার স্বামী ছিলেন। অবশ্য চার মাস আগে শিমলা তাকে তালাক দেন বলে দাবি করেছেন। পলাশের কাছ থেকে একটি অস্ত্র উদ্ধারের কথা জানানো হলেও পরে পুলিশ দাবি করে, সেটি খেলনা পিস্তল।
এই ঘটনায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।