নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে নিয়ে তোলপাড় হয়েছে। দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে সোনারগাঁয়ের একটি রিসোর্টে অবস্থানকালে বিকালে তিনি স্থানীয়দের ঘেরাওয়ের শিকার হন। এ সময় মামুনুল হক দাবি করেন, সঙ্গে থাকা ওই নারী শরিয়তসম্মত তার দ্বিতীয় স্ত্রী আমিনা তৈয়ব।
অন্যদিকে, স্থানীয় সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে মাওলানা মামুনুল হককে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদকালে পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীরা মিছিল বের করেন এবং রিসোর্টটি ঘেরাও করে রাখেন। সন্ধ্যার পর হেফাজতের নেতা-কর্মীরা ওই রিসোর্টে ভাঙচুর চালান এবং মাওলানা মামুনুল হক ও ওই নারীকে উদ্ধার করে নিয়ে যান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখছি।
সন্ধ্যার আগে সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তবিদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, এখানে মামুনুল হক একজন নারীকে নিয়ে উঠেছেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারীকে তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করেছেন। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। পরে বিস্তারিত জানানো হবে। এই খবর পেয়ে এলাকার লোকজন ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের কিছু নেতা-কর্মী তার কক্ষটি ঘিরে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশও আসে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এখানে রয়েছেন। পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এসেছেন।
জানা গেছে, মাওলানা মামুনুল হককে ঘেরাওয়ের খবরে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা ‘রয়েল রিসোর্ট’ নামে ওই অবকাশ যাপন কেন্দ্রটিতে ছুটে যান। সেখানে মামুনুল সংবাদকর্মীদের বলেন, আমার বক্তব্য পরিষ্কার, আমরা এখানে একটু রিফ্রেশমেন্টের জন্য এসেছিলাম। এখানে অনেক উচ্ছৃঙ্খল লোক এসেছে। আপনারা দেখেছেন। আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। স্থানীয় আলেমদের কাউকে জানিয়ে তিনি এখানে এসেছেন কি না, জানতে চাইলে মামুনুল বলেন, না, আমি জানাইনি। যেখানে যাই মানুষজন ভিড় করে। এ জন্য আমি একটু আলাদা করে এসেছিলাম।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রিসোর্টে হামলা চালিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নেন হেফাজত কর্মীরা। মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করা হয়েছে এ খবরে হেফাজতের হাজারো কর্মী মিছিল নিয়ে রিসোর্টে আসেন। এ সময় রিসোর্টে ব্যাপক ভাঙচুর চালান তারা। এরপর তাকে উদ্ধার করে পাশের একটি মসজিদে নিয়ে যান। এ সময় রিসোর্টের মধ্যে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম, এসিল্যান্ড গোলাম মোস্তফা মুন্না, নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) টিএম মোশাররফ হোসেন, সোনারগাঁ থানার ওসি (তদন্ত) তবিদুর রহমানসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা।
পরে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোশাররফ হোসেন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মাওলানা মামুনুল হককে থানায় নেওয়ার পথে রিসোর্টে হামলা চালান হেফাজতের কর্মীরা। পরে মামুনুল হককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। সেখানে হামলা চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান হেফাজতের কর্মীরা।বিডি-প্রতিদিন