এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, কেউ কেউ দলীয় এমপি-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন। এসব করার মূল কারণ হলো নিজেদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা। প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আঞ্চলিক দায়িত্ব পালনে আসেন। তারা সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন। তাদের বিরুদ্ধে সু-নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে প্রমাণসহ অভিযোগ করুন। অন্যথায় তাদের ছোট করবেন না।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ রাইফেলস ক্লাবে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির আন্দোলনের বিষয়ে শামীম ওসমান বলেন, উনারা যদি মনে করেন উনারা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন ও লড়াই করছেন, তাহলে ২০১৩-১৪ সালে তারা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারলেন কেন? পরিসংখ্যান বলছে, ওই সময়ে ৩ হাজার ৩৩৬ জন মানুষকে আগুনে পোড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে ৫০০ মানুষ আগুনে পুড়ে মারা গেছে। ওরা যদি নিজেদের গণতান্ত্রিক দল মনে করে তবে ওরা নিজের বুকের রক্ত দিক। কিন্তু তা না করে সাধারণ মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারবে- এটা কোনো গণতান্ত্রিক দলের আন্দোলনের মাধ্যম হতে পারে না। এসব করে ওরা গণতন্ত্রের কথা বলবে আর আমরা ওদের মেনে নিব? না। আমি সংসদেই বলেছি, আপনি জাতির পিতার কন্যা। আপনি ওদের সাথে গণতন্ত্র চর্চা করেন, আমি করবো না। আমি বিএনপি-জামায়াতকে গোনায় ধরি না। তবে আমি খন্দকার মোস্তাক আর মীর জাফর ধরনের লোকদের ভয় পাই।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে উনি বললেন, শামীম ওসমান আমার বড় ভাই। উনার সাথে আমার কোনো দ্বন্দ নাই। কেউ কেউ দেখলাম হঠাৎ করে এমপি-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। এর কারণ কী? এর কারণ হচ্ছে আমি উনাদেরকে প্রকাশ্যে বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে বলেছিলাম। এখন নামলেতো আবার বিএনপি-জামায়াত ও সুশীলদের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। যারা শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার করবেন, তাদের সাথে আগের রাতে মিটিং করেন কেউ কেউ। তিনি বলেন- ডিসি-এসপি আমাদের থেকে টাকা খায়। এমন যদি হয়ে থাকে তবে আপনি অভিযোগ করেন। হঠাৎ করে আপনি ট্যাক্স বাড়িয়ে দিলেন। সামনে নির্বাচন, এই সময়ে ট্যাক্স কেন বাড়িয়ে দিলেন? আপনি নগরবাসীর সম্পূর্ণ ট্যাক্স তুলতে পারেন না। তাহলে নতুন করে ট্যাক্স বাড়াবেন কেন? মশার ওষুধের জন্য মানুষজন মারা যাচ্ছে, অথচ বলছেন মশার ওষুধ ভালো না। যদি ভালো না হয় তবে অন্য জায়গা থেকে আনেন। এই যে বিষোদগার করা হচ্ছে তার কারণ হলো নিজেদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা।
শামীম ওসমান বলেন, অনেকে আজকে প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকে জড়িয়ে বাজে ও উশ্ছৃঙ্খল ভাষায় স্লোগান দিচ্ছেন। আমাকে গালি দেন, মারেন-কাটেন আপত্তি নাই, কিন্তু বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার প্রশ্নে কোনো আপস হবে না। অনেকে দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত হয়ে বলে দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করেন। আমি দুঃখিত। আপনি যখন প্রতীক নিয়ে কাজ করবেন, তখন দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করতে পারবেন না। আপনাকে আপনার দলকে প্রেজেন্ট করতে হবে। প্রত্যেকটা এমপি-মন্ত্রী যেভাবে করে, ঠিক সেভাবে। এ সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।