সোমবার, ১৬ মে, ২০১৬, ১০:০৯:০০

‘স্টেডিয়ামের সামনে ওঁৎ পেতে ছিল র‌্যাবের সদস্যরা’

‘স্টেডিয়ামের সামনে ওঁৎ পেতে ছিল র‌্যাবের সদস্যরা’

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কমিশনার নজরুল ইসলামসহ ৭ জনকে তুলে নেয়ার আগে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক রোডের খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের সামনে ৮-১০ র‌্যাব সদস্যকে ওঁৎ পেতে থাকতে দেখেছি’।  তাদের গায়ে কালো রঙের পোশাক এবং কাঁধে ইংরেজিতে র‌্যাব লেখা ছিল।  ওই সময় ভেবেছিলাম, র‌্যাব সদস্যরা হয়তো কোনো চেকপোস্ট বসাবেন।  তখন তাদের সবার হাতে অস্ত্র ছিল’।

সোমবার নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে চাঞ্চল্যকর ৭ খুনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সিদ্ধিরগঞ্জের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী সাক্ষ্য দিতে গিয়ে এভাবেই কথা বলেন।

সাক্ষ্য গ্রহণের সময় নূর হোসেন, র‌্যাবের সাবেক কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, আরিফ হোসেন, এমএম রানাসহ ২৩ আসামির সবাই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মোহাম্মদ আলী ঢাকার ফকিরেরপুল এলাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।  ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঘটনার দিন নারায়ণগঞ্জ আদালতে একটি মামলায় বড় ভাই মোস্তফা কামালসহ তিনি হাজিরা দিতে আসেন।  

দুপুর ১২টায় হাজিরা শেষে আদালতের সামনে থেকে বন্ধন পরিবহনের একটি বাসে চড়ে তিনি তার কর্মস্থলে যাওয়ার পথে খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের সামনে একদল র‌্যাব সদস্যকে ওঁৎ পেতে থাকতে দেখতে পান।

তিনি তার কর্মস্থলে পৌঁছার পর তার বড় ভাই মোস্তফা কামাল তাকে ফোনে জানান, কাউন্সিলর নজরুলসহ ৭ জনকে র‌্যাব তুলে নিয়ে গেছে।  তার ভাই তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, এ খবর তিনি (মোহাম্মদ আলী) জানেন কি না? তখন তিনি না সূচক জবাব দিয়েছিলেন বলে আদালতকে জানান।

পরে মোহাম্মদ আলী দুপুর ৩টার দিকে অফিস থেকে সিদ্ধিরগঞ্জের বাসায় ফেরার পথে সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এসে দেখতে পান, বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে।  

সেখানে তিনি কাউন্সিলর নজরুলের শ্বশুর শহিদুল ইসলাম, নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম এবং নজরুলের ভাই আবদুস সালামকে দেখতে পান।

ঘটনার ৩ দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে লাশ ভেসে উঠলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর থেকে তিনি জানতে পারেন যে, র‌্যাব সদস্যরা এই ৭ জনকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুমের চেষ্টা করেছিল।

৭ খুনের ঘটনায় সোমবার আদালতে ৩ জন ম্যাজিস্ট্রেটসহ মোট ৫ জন সাক্ষ্য দেন।  সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক সাক্ষ্য নেয়ার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন আগামী ২৪ মে।

সোমবার আদালতে সাক্ষ্য দেন নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদ, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইদুজ্জামান শরীফ, নারায়ণগঞ্জের সাবেক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনোয়ারা বেগম, সিদ্ধিরগঞ্জের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী এবং অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবীর।
১৬ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে