নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান বলেছেন, বিগত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামের সঙ্গে বিএনপি ঘরানার সাংবাদিক শফিক রেহমানের বাসায় বসে ৫ মিলিয়ন ডলার লেনদেন হয়েছে। ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীকে বসিয়ে আইভীকে জয়ের সুযোগ করে দেয়া হয়েছিল। পরে আইভী যে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থী ছিলেন সেটাও বারবার প্রমাণ দিয়েছে।
আমার বিরুদ্ধে কথা বলেছে সমস্যা ছিল না। কিন্তু আমার নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নিয়েও বিষোদগার করেছেন। অনেক সময়ে আমাদের দল, জননেত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কেও বিরূপ মন্তব্য করেছেন। আমাকে খালেদার মতো খুনি গডফাদার বলেছেন। কিন্তু আমার আগের দিন আর নাই। আমার সেই বয়স আর আগের শামীম ওসমান থাকলে অনেক কিছু দেখিয়ে দিতাম। ধোপার মতো ধুয়ে ফেলতাম।’
শামীম ওসমান আসন্ন সিটি নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, এবার আর সে খেলা খেলতে দেয়া হবে না। নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দুই হাত তুলে মহানগরের সভাপতি পরীক্ষিত আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেনকে সমর্থন জানিয়েছেন। তাই আগামীতে ইনশাআল্লাহ আনোয়ার ভাই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকার প্রতীক পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হবে। আর ওই নির্বাচন হবে আন কনটেস্ট। বিএনপির প্রার্থী কে হয় আমি দেখবো। তবে আনোয়ার ভাই আন কনটেস্ট পাস করবে এটা নিশ্চিত।’
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ শহরের ইসদাইরে বাংলাভবন কমিউনিটি সেন্টারে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় শামীম ওসমান এসব কথা বলেন। সভায় বক্তারা আগামী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যেন মেয়র পদে আইভী কোনোভাবেই দলের নমিনেশন না পায় সেদিকে খেয়াল রাখার আহ্বান জানান।
তারা বলেন, আইভী আওয়ামী লীগের কেউ না। তাঁর মনোনয়ন ঠেকাতে হবে আর সেজন্য আমাদের সকলকে এক থাকতে হবে। এখন থেকেই আমাদের ত্যাগী নেতাকর্মীদের একত্রিত হতে হবে।’ দেশের সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে শামীম ওসমান বলেন, ‘এখন থেকে আবার নতুন খেলা শুরু হবে। আগামী ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে দেশে আবারও বোমাবাজি, গ্রেনেডবাজি শুরু হবে। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’ সম্প্রতি উপমন্ত্রীর মর্যাদা পেয়েছেন সিটি করপোরেশন মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী।
ওই প্রসঙ্গে শামীম ওসমান বলেন, ‘উপমন্ত্রীর মর্যাদা শেষ সময়ে দেয়া হলেও সামনে যেহেতু আনোয়ার ভাই মেয়র হবেন সেহেতু আনোয়ার ভাই এটাকে উপভোগ করতে পারবেন। আর আমাকে এর আগেও তিনবার মন্ত্রিত্ব দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। কিন্তু আমি নেই নাই। কারণ আমি জনগণের জন্য কাজ করতে চাই।’ সভাপতির বক্তব্যে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন সিটি নির্বাচনে নিজের প্রার্থিতার কথা বলেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের প্রশাসক আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল হাই, মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি চন্দন শীল, সহ-সভাপতি গোপীনাথ দাস, মাসুদুর রহমান খসরু, সামসুজ্জামান খান ভাষানী, রোকনউদ্দীন আহম্মেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, অ্যাডভোকেট মাহামুদা আক্তার মালা, জিএম আরাফাত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিএম আরমান, শাহ নিজাম, আইন বিষয়ক সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট এস এম ওয়াজেদ আলী খোকন,
নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নাজমুল আলম সজল, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি মতিউর রহমান মতি, ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরিফুল হক হাসানসহ মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিটি ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং নাসিকের ২৭টি ওয়ার্ডের অধিকাংশ কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।-এমজমিন
২২ জুলাই, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ