নেত্রকোনা: নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় পারভীন আক্তার (১৬) নামে এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার প্রেমিক জহিরুল ইসলাম ওরফে জহির শেখের বিরুদ্ধে। গত বুধবার ঢাকার রামপুরা এলাকা থেকে পুলিশ জহিরকে গ্রেফতার করেছে।
নিহত পারভীন আক্তার কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটী ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের ওয়াহেদ আলীর মেয়ে। গ্রেফতার জহিরুল ইসলাম নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বাকলজোড়া ইউনিয়নের চারিগাঁও গ্রামের মৃত আবদুল খালেকের ছেলে।
রং নাম্বারে প্রেম, তারপর ঘটলো ভয়ানক ঘটনা! পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, পারভীন আক্তারের সঙ্গে প্রায় ৯ মাস আগে মোবাইল ফোনে রং নাম্বারে এক সন্তানের জনক জহিরুল ইসলাম ওরফে জহির শেখের পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই সুবাধে গত ১৭ জুলাই পারভীন আক্তারকে ফুঁসলিয়ে বাড়ি থেকে নিয়ে যায় জহির। বিবাহিত থাকার বিষয়টি গোপন করে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে।
বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হলে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে জহির পারভীনকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে গ্রামের জনৈক এমদাদের নিচু জমিতে মরদেহ মাটি চাপা দেয়। ঘটনার পর জহির কাজের সন্ধানে ঢাকায় চলে যায় এবং পারভীনের মোবাইলটি বন্ধ রাখে। প্রায় এক মাস পর পরভীনের মোবাইলটি চালু করে জহির।
এদিকে বিভিন্ন স্থানে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পারভীন আক্তারকে না পেয়ে তার বাবা ওয়াহেদ আলী ৩০ জুলাই কলমাকান্দা থানায় সাধারণ ডায়রি করেন। কলমাকান্দা থানা পুলিশ মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে জহিরের অবস্থান শনাক্ত করে।
বুধবার ঢাকার রামপুরা থেকে কলমাকান্দা থানার এসআই মারুফুজ্জামান ও এএসআই শফিকুল ইসলাম আসামিকে গ্রেফতার করে বৃহস্পতিবার কলমাকান্দা থানায় নিয়ে আসে ও তার কথামত দুর্গাপুরে তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তার দেখানো জায়গায় মাটি খুঁড়ে প্রেমিকার চুল ও কাপড়ের অংশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পারভীন আক্তারের বাবা ওয়াহেদ আলী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পুলিশ জহিরুল ইসলামকে নেত্রকোনা আদালতে পাঠিয়েছে।
কলমাকান্দা থানা পুলিশের এসআই মারুফুজ্জামান জানান, জহিরুল ইসলামের দেয়া তথ্য মতে মাটি খুঁড়ে চুল ও কাপড়ের অংশ সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।
কলমাকান্দা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল করিম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জহিরুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করেছে।