নেত্রকোনার দুর্গাপুরে 'আমি নিজের ইচ্ছায় মরেছি, এতে আমার স্বামীর কোনো অন্যায় নেই, আমি মরলে যেন আমার স্বামী আরেকটা বিয়ে করে...,' চিরকুটে এমনই সব কথা লিখে আত্মহনন করলেন স্ত্রী। পরে হাওয়া (১৮) নামের ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গতকাল সোমবার (২৯ নভেম্বর) রাতে পৌর শহরের ভাঙ্গা ব্রিজ এলাকার স্বামীর বসতঘর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ মঙ্গলবার সকালে লাশের পোস্টমর্টেমের জন্য নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহনুর এ আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, নিহত গৃহবধূ উপজেলার চন্ডিগড় ইউনিয়নের সাতাশী গ্রামের কৃষক ফজলুল করিমের মেয়ে। তার স্বামীর নাম হাসান মিয়া। স্থানীয় একটি ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন তিনি।
পুলিশ ও আশপাশের লোকজন জানান, তিন মাস আগে তাদের বিয়ে হয়। প্রতিদিনের মতো সোমবার সকালে ইটভাটায় কাজ করতে চলে যান হাসান মিয়া। এরপর হাওয়া তার শ্বশুরকে তাকে বাপের বাড়ি দিয়ে আসতে বলেন। শ্বশুরও তাকে নিয়ে যান এবং সারাদিন সেখানে থেকে বিকেলে আবারো শ্বশুরের সাথে চলে আসেন স্বামীর বাড়ি। এরপর শ্বশুর তাকে বাসায় রেখে বাজারে যান।
পার্শ্ববর্তী বাসার মাহফুজা জানান, সোমবার রাত ৮টার দিকে তিনি ডাল মিশ্রণের ঘুটনি আনার জন্য হাওয়ার কাছে যান। এ সময় তিনি দেখেন যে হাওয়ার নিথর দেহ ঘরের আড়ায় ঝুলছে। তার চিৎকারে লোকজন এসে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
মৃত্যুর আগে হাওয়া তার চিরকুটে লিখেছেন, ‘আমি নিজের ইচ্ছে মরেছি। এতে আমার স্বামীর কেনো অন্যায় নেই। আমি মরলে যেন আমার স্বামী আরেকটা বিয়ে করে। আমি খারাপ মানুষ তাই মরে যাচ্ছি। আমি মরলে আমার সব জিনিসপত্র আমার বাড়িতে দিয়ে দেয় আমার মা বাবার কাছে। আর সবার প্রতি আমার সালাম। আসসালামু আলাইকুম। ইতি- হাওয়া। আমাকে মাফ করে দিও সবাই।’
ওসি আরো জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং লাশ উদ্ধার করে থানায় নেয়। চিরকুট পাওয়ার কথা তিনি স্বীকার করেন। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য আজ মঙ্গলবার সকালে নেত্রকোনা মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এখনই আমরা চিরকুটের বিষয়টি ভাবছি না।