জেলা প্রতিনিধি নোয়াখালী : নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) আসনে দুই হেভিওয়েট প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
একই দিন একই সঙ্গে দুই নেতার মনোনয়নপত্র দাখিল শেষে পাল্টা পাল্টি বক্তব্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক লড়াই। জমে উঠতে শুরু করেছে দুই নেতার নির্বাচনী মাঠ।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ওবায়দুল কাদেরের নির্বাচনী এলাকায় মনোনয়নপত্র দাখিলের পূর্ব-নির্ধারিত কর্মসূচি থাকলেও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে পৌঁছতে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে আড়াইঘণ্টা বেশি সময় লেগে যায়।
মনোনয়ন জমা ও ভোট চাইতে কাদের এলাকায় আসছেন এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল বিশেষ করে চরাঞ্চল থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষ মিছিল নিয়ে উপজেলা সদরে উপস্থিত হন।
এ সময় নৌকা-নৌকা স্লোগানে রাস্তাঘাট-অলিগলি মুুখরিত হয়ে উঠে। তবে ওবায়দুল কাদের মানুষের ভালোবাসা দেখে আপ্লুত হন। সেইসঙ্গে নির্বাচনী আচরণবিধি যাতে ভঙ্গ না হয় সে জন্য নেতাকর্মীদের ঘটনাস্থল ত্যাগের নির্দেশ দেন।
দুপুর ১টার দিকে নেতাকর্মীদের নিয়ে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সালের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন কাদের।
মনোনয়ন জমা শেষে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির অবস্থা এতটাই খারাপ যে, মির্জা ফখরুল কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছেন। দলছুট ও জনবিচ্ছিন্ন নেতারা যতই বিএনপির সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন ততই বিএনপির জনসমর্থন হারিয়ে যাচ্ছে, তাদের জনপ্রিয়তা কমে যাচ্ছে এবং ভাটা পড়বে জোয়ারে। তাদের ভাঙা হাট জমবে না।
তিনি আরও বলেন, যারা নির্বাচনের এক মাস আগে সিইসির পদত্যাগ দাবি করে তাদের উদ্দেশ্যে পরিষ্কার। এ মুহূর্তে সিইসির পদত্যাগের দাবিতে তারা বুঝাতে চায়, আসলে নির্বাচন বানচাল করতে চায় তারা।
বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ কোম্পানীগঞ্জে গণজোয়ার নেমেছে। মওদুদ আহমদ বলেছেন এক মাস পর কোম্পানীগঞ্জে কী চিত্র তা দেখতে পারবেন। কিন্তু আজ তার উল্টো চিত্র। সর্বত্র নৌকার জোয়ার। কোনো সমাবেশ না করলেও লাখ লাখ মানুষ এসেছে। কেবল নোয়াখালী নয়; সারা দেশে আজ নৌকার গণজোয়ার শুরু হয়েছে। ডিসেম্বর বিজয়ের মাসে নৌকা ভাসতে ভাসতে বন্দরে গিয়ে ভিড়বে।
তিনি বলেন, আমি নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করতে চাই না। সরকারি গাড়ি না এনে নিজের ব্যক্তিগত গাড়ি এনেছি। গাড়িতে পতাকা ছাড়া এসেছি। কোথাও কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা নেইনি। এটাই তো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড।
এদিকে, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে একই কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
এ সময় তার সঙ্গে স্ত্রী হাসনা মওদুদসহ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন। মওদুদের স্ত্রী হাসনা মওদুদও একটি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
মনোনয়নপত্র জমা শেষে মওদুদ আহমদ বলেন, সারা দেশে বিএনপির গণজোয়ার দেখে আজ আওয়ামী লীগের অনেক সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা নির্বাচন করতে পারবেন না হাইকোর্টের এমন রায়ের বিষয়ে মওদুদ বলেন, নিম্ন আদালতের কোনো সাজা চূড়ান্ত সাজা নয়। এ বিষয়ে শুনানি ও হাইকোর্ট রয়েছে। পরবর্তীতে আপিল ও সুপ্রিম কোর্ট রয়েছে। শেষ আদালত যে রায় দেবেন তারপর বুঝা যাবে কে ভোট করতে পারবেন আর কে পারবেন না।
সিইসির পদত্যাগ প্রসঙ্গে মওদুদ বলেন, আরও আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ করা বা ছুটিতে যাওয়া উচিত ছিল। সাবেক সিইসি তো নির্বাচনের আটদিন আগে ছুটিতে গিয়েছিলেন। বর্তমান নির্বাচন কমিশন আস্থা অর্জন করতে পারেনি। শুধু মাত্র সরকারি দলের আস্থা আর্জন করলে তো হবে না। বিরোধী দলগুলোর আস্থাও অর্জন করতে হবে।-জাগো নিউজ