নোয়াখালী : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, আমার গাড়িতে হামলা করেছে আমার প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী বাহিনী। এতে আমার গাড়ি ও আমার বহরের একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। অল্পের জন্য আমি প্রাণে বেঁচে গেছি। হামলায় আমার ৫জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এ ঘটনার পর এ নির্বাচনী এলাকায় আমার জীবনের নিরাপত্তা নেই। রবিবার বাটইয়াতে গণসংযোগ করতে পারিনি। আমার প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীদের আক্রমনের মুখে চলে এসেছি।
আজ সোমবার দুপুর ১টায় নোয়াখালী ৫ আসনের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মানিকপুরস্থ তার নিজ বাসভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মওদুদ আহমদ বলেন, আজ দেশের নির্বাচনী এলাকাগুলোতে সেনাবাহিনী এসেছে। এতে মনে করেছিলাম আগামী দিনগুলোর নির্বাচনী কার্যক্রম সুন্দরভাবে করতে পারব। আমার এলাকায় ধানের শীষের কর্মীরা নির্বাচনী কার্যক্রম চালানোর সময় তাদেরকে প্রতিপক্ষের লোকেরা মারধর করে এবং নির্বাচনী প্রচারের সময় সিএনজি গাড়ি ভাঙচুর করে পানিতে ফেলে দেয়। এরপর থেকে থেকে ৮দিন আমার প্রচার-প্রচারণা বন্ধ থাকে।
তিনি ওবায়দুল কাদেরকে ইঙ্গিত করে বলেন, আমার প্রতিপক্ষ প্রকাশ্যে পথসভায় গত ১০ ও ১১ ডিসেম্বর বলেছেন, ধানের শীষের পোস্টার লাগানো যাবে না। আমাকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন। তার ঘোষণা অনুযায়ী তার সন্ত্রাসী বাহিনীরা এ ব্যাপারে উজ্জীবিত হয়ে পুরো এলাকা জুড়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতেছে।
তিনি বলেন, আজ সোমবার সকাল থেকে চরকাঁকড়া ও সিরাজপুর ইউনিয়নের গণসংযোগের কথাছিল। বিষয়টি ওসিকে অবহিত করা হয়েছে। যখন আমি সকাল ১১টায় নতুন বাজারে পৌঁছলাম তখন মানুষের ঢল নামে। হঠাৎ করে আমার প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ৫জন ধানের শীষের নেতাকর্মীকে আহত করে। আহতরা হলেন- বেলায়েত হোসেন, নুরুল আফসার, রাকিব এবং নাঈমুল হক কাটার ও আলমগীরকে। আমি নিজেই একজন প্রার্থী। আমার ব্যবহৃত গাড়ি ও আমার সাথে থাকা কর্মীদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এর কিছুক্ষণ পর পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উল্টো আহত দুজন নেতাকে গ্রেপ্তার করে।
তিনি জানান, বিষয়টি আমি নোয়াখালী জেলার সেনাবাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত লে. কর্নেল মনির সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও জেলা রিটার্নিং অফিসারকে জানিয়েছি। আমার নির্বাচনী এলাকায় সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নাই। সন্ত্রাসীবাহিনী বাড়ি বাড়ি গিয়ে মহিলাদেরকে ভয়-ভীতি দেখায় এবং পুরুষ ভোটাররা কেন্দ্র গেলে তাদের ওপর হামলা হবে। আমার জীবনের নিরাপত্তা নেই। আমি আর গণসংযোগে যাবো না।
তিনি বলেন, ৮টি গায়েবি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩ শত লোক নেতাকর্মী তাদের হামলায় আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৫০জন গুরুতর আহত। তারা ঢাকা, চট্টগ্রামে চিকিৎসা নিচ্ছে। কেউ জেল খানায় আছে। এ আসনে সেনাবাহিনীকে নিয়োগ করা হলো তাদের সফলতা আসবে, এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা ফিরে আসবে এবং প্রার্থীসহ নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, তাহলে আমি গণসংযোগ চালিয়ে যাব। আমার পৌরসভার সভাপতি ও সম্পাদকসহ অনেক নেতাকর্মী জেলে আছেন। তাদের জামিন হওয়ার সাথে সাথে আবার মামলা দেওয়া হয়।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চরকাঁকড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোশারেফ হোসেন বাহার, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান মো. নোমান, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
এরআগে সকালে মওদুদ আহমেদ সকালে তার নির্বাচনী এলাকা কোম্পানীগঞ্জের চর কাঁকড়া ইউনিয়নের নুতন বাজারে গাড়ি থেকে নেমে গণসংযোগ করতে গেলে স্থানীয় একদল যুবক তার সংগে থাকা দুটি মাইক্রোবাস ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ গিয়ে দুজনকে আটক করে।