আরাফাতুর রহমান, নোয়াখালী প্রতিনিধি: আগামীকাল রোববার ২০ মার্চ নোয়াখালীর কবিরহাট পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দুই মেয়র প্রার্থী ৩০ সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১০ নারী প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ ভাবে গ্রহণের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন ও জেলা ও পুলিশ প্রশাসন সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। সকল প্রার্থীরাই ভোটারদের কাছে এলাকার রাস্তাঘাট কালভাট, ব্রীজ নির্মান, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগসহ বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কর্মকান্ডের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এটি এই পৌরসভার ৪র্থ নির্বাচন।
জানা যায়, গত ০১ ডিসেম্বর ১৯৯৭ সনে কবিরহাট পৌরসভা কার্যক্রম শুরু হয়। তখন এটি ছিল গ শ্রেণির পৌরসভা। ২০০৩ সালে এটি খ শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হয়। ১০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ পৌরসভার লোকসংখ্যা ৪৫ হাজার এবং ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ৩৯৭ জন। কেন্দ্র সংখ্যা ৯টি, ভোটার কক্ষ হল ৩৯ টি। কেন্দ্রগুলো হ্েছ-কবিরহাট সরকারী কলেজ, কবিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়, এতিম খানা, পূর্ব ফতেহ জংপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পূর্ব ঘোষ বাগ সঃ প্রাঃ বিঃ ইন্দ্রপুর সঃ প্রাঃ বিঃ, দক্ষিণ ঘোষবাগ সঃ প্রাঃ বিঃ, উত্তর আলীপুর সঃ প্রাঃ বিদ্যালয় ও উত্তর ঘোষবাগ সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়। উল্লেখ্য, কবিরহাট পৌরসভার প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০০ সালে এবং প্রথম মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন মরহুম হাজী মোঃ ইদ্রিছ। কিন্তু তিনি শপথ নেওয়ার আগেই তিনি মারা গেলে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর উপ-নির্বাচনে বিএনপির ফখরুল ইসলাম দুলাল মেয়র নির্বাচিত হন। ২০০৫ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পার্থী মোঃ আলা বক্স টিটু মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১১ এর নির্বাচনে বর্তমান মেয়র জহিরুল হক রায়হান বিপুল ভোটের ব্যাবধানে নির্বাচিত হন।
কবিরহাট পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামীলীগ সমর্থিত নৌকার প্রার্থী বর্তমান মেয়র জহিরুল হক রায়হান ও তার প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী বিএনপি সমর্থিত ধানের শীষের প্রার্থী ও কবিরহাট পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জুর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। গণসংযোগ ও প্রচারনায় বর্তমান মেয়র জহিরুল হক রায়হান এগিয়ে রয়েছেন। জহিরুল হক রায়হান বলেন, তিনি বিগত ৫ বছরে পৌর মেয়রের দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে পৌরবাসীর মতামত ও তাদের সঙ্গে নিয়ে এলাকার ব্যপক উন্নয়নমুলক কাজ করেছেন। তাই এবারের নির্বাচনে পৌরবাসী তাকে বিপুল পরিমান ভোটের ব্যবধানে জয়ী করবেন বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এদিকে বিএনপির প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জু সুষ্ঠু ও নিরোপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, তার দলীয় ভোটাররা যদি যথাসময়ে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেন তাহলে তার বিজয় নিশ্চিত। সুষ্ঠু ও নিরোপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তিনি নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এই নির্বাচনে উত্তর ঘোষবাগ কেন্দ্রটি সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিএনপি প্রার্থীর দাবী। তবে নির্বাচন রিটার্নিং অফিসার এ পৌরসভার নির্বাচনে কোন ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র নেই দাবী করে বলেন, সবগুলো কেন্দ্রই গুরুত্বপূর্ণ।
নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে বিপুল পরিমাণ পুলিশ, এক প্লাটুন বিজিবি, র্যাবের ২টি মোবাইল টীম, পুলিশের ৩টি মোবাইল টীম, ২টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, ৬জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও ১জন জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটকে নিয়োজিত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কবিরহাট পৌরসভার রিটার্নিং অফিসার ও জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্মতা মোঃ মনির হোসেন ও কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিনা ইসলাম বলেন, নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরোপেক্ষ অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
১৯ মার্চ, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এইচএস /কেএস