রবিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৬, ০৯:৩৬:৩৬

পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হল আড়াই হাজার শিক্ষার্থী

পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হল আড়াই হাজার শিক্ষার্থী

আরাফাতুর রহমান, নোয়াখালী প্রতিনিধি:নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার হরণী ইউনিয়নের বয়ারচরের প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী গত শনিবার শুরু হওয়া প্রথম সাময়িক পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। এতে সরকারি ও বেসরকারি ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রয়েছে।
লক্ষ্মীপুরের রামগতির চরগাজী ইউনিয়ন ও নোয়াখালীর হাতিয়ার বয়ারচরের সীমানা নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত মঙ্গলবার বিদ্যালয়গুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। লক্ষ্মীপুরের রামগতির চরগাজী ইউনিয়নের লোকজন তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সীমানা নিয়ে লক্ষ্মীপুরের রামগতির চরগাজী ইউনিয়ন ও নোয়াখালীর হাতিয়ার বয়ারচরের বাসিন্দাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। সম্প্রতি এ নিয়ে বয়াচরের বাসিন্দাদের ওপর একাধিকবার হামলা ও ভোটার তালিকা হালনাগাদে বাধা দেওয়া হয়।
সর্বশেষ রামগতির চরগাজীর লোকজন গত মঙ্গলবার হরণী ইউনিয়নের বয়ারচরের ১০টি সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়। বিদ্যালয়গুলো হলো মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, টাংকির বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফরেস্ট সেন্টার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাহাবুদ্দিন সমাজ প্রাথমিক বিদ্যালয়, মোল্লাগ্রাম বয়ারচর প্রাথমিক বিদ্যালয়, মিরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, দশদাগ আদর্শগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর-পশ্চিম গাবতলী অমি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর দরবেশ প্রাথমিক বিদ্যালয়, মীর আদর্শগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তালা দেওয়ার কারণে এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ হয়ে যায়।
টাংকির বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, গত মঙ্গলবার সকালে চরগাজী ইউনিয়নের ৫০-৬০ জন লোক বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অফিস ও শ্রেণিকক্ষ থেকে বের করে দেন। এ সময় তাঁরা বিদ্যালয় থেকে যাবতীয় খাতাপত্র, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির কার্ডসহ বিভিন্ন নথিপত্র নিয়ে যান এবং অফিস ও শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। একইভাবে তাঁরা ইউনিয়নের আরও নয়টি বিদ্যালয়েও তালা ঝুলিয়ে দেন।
মোহাম্মদপুরের একাধিক অভিভাবক বলেন, সীমানা নিয়ে বিরোধের কারণে বিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়ায় তাঁদের সন্তানদের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

হাতিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ভবরঞ্জন দাস বলেন, তিনি শুনেছেন বয়ারচরের বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে শিক্ষকদের বের করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিদ্যালয়ে তালা ঝোলানো হয়েছে কি না, তা তিনি জানেন না।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসনাত মো. মঈন উদ্দিন বলেন, সীমানা নিয়ে বিরোধের জের ধরে বয়ারচরের ১০টি বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে রামগতির লোকজন। এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নিতে পুলিশকে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এ কারণে শিক্ষার্থীরা গত শনিবার পরীক্ষা দিতে পারেনি।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম আরিচুল হক বলেন, বিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। এ ছাড়া তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জেলার শীর্ষ পর্যায় থেকে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
লক্ষ্মীপুরের রামগতি চরগাজী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাওহীদুল ইসলাম বলেন, তিনি কয়েক দিন ধরে ঢাকায়। শুনেছেন শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে কিছু বিদ্যালয়ে সমস্যা চলছে। কিন্তু তালা ঝোলানো হয়েছে কি না তিনি জানেন না।
২৪ এপ্রিল ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস

 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে