বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১০:৫৭:৪৪

‘পরীক্ষা দিতে না দিয়ে কবরে পাঠালো ফারুমাকে’

‘পরীক্ষা দিতে না দিয়ে কবরে পাঠালো ফারুমাকে’

নোয়াখালী : ২শ' টাকা চুরির অপবাদে পরীক্ষা দিতে না দিয়ে কবরে পাঠালো স্কুলছাত্রী ফারুমা আক্তারকে (১০)।  এমন অভিযোগ নিহত স্কুলছাত্রীর পরিবারের। পরীক্ষার আগে স্কুল আঙিনায় শিক্ষিকার সামনেই স্কুলছাত্রীকে ব্যাপক মারধর করা হয়।  স্কুল থেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর লাশ হলো ফারুমা।

জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।  নিহত শিশু ফারুমা আক্তারের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।  ফারুমাকে নির্যাতনের পর হত্যার অভিযোগ এনে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছে তার পরিবার।

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে চরকাঁকড়া ৪নং ওয়ার্ডের নিজ বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে ফারুমার দাফন সম্পন্ন হয়।  ফারুমা আক্তার দিনমজুর সাহাব উদ্দিনের মেয়ে ও চরকাঁকড়া আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী।

নিহতের বড় বোন শাহানাজ আক্তার অভিযোগ করেন, তাদের একই বাড়ির মোস্তফার স্ত্রী মুন্নি বেগম তার ২শ' টাকা চুরি হয়েছে বলে অপবাদ দিয়ে তার ছোট বোন ফারুমাকে স্কুল থেকে ধরে এনে বাড়িতে নিয়ে আসে।  বাড়িতে এনে মুন্নি ২শ' টাকার জন্য ফারুমার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়।  

এতে ফারুমার শরীরের বিভিন্ন অংশ কালো হয়ে যায় ও একটি হাত ভেঙে যায়।  এসময় বাড়িতে তার বাবা-মা কেউ ছিল না।  পরে সুকৌশলে মুন্নি ফারুমাকে তাদের ঘরের ভেতরে নিয়ে ফারুমার পরনের ওড়না দিয়ে তাকে ঘরের সাথে ঝুলিয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।  এ হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

নোয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী জানান, ময়নাতদন্ত শেষে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে গলায় ফাঁস দেয়ার কারণে ফারুমার মৃত্যু হয়েছে।  

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুর রহমান সাজিদ জানান, বিষয়টি আত্মহত্যা বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।  তবে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করায় মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।  এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।  ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।

২৭ এপ্রিল বুধবার সকালে বিজ্ঞান পরীক্ষা দিতে স্কুলে যায় ফারুমা।  পরে তাদের বাড়ির মোস্তফার স্ত্রী মুন্নি বেগম তার ২শ' টাকা চুরি হয়েছে এমন অভিযোগ এনে স্কুলে গিয়ে শিক্ষিকার সামনে ফারুমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।  

পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেই মুন্নি স্কুল আঙিনায় ফারুমাকে ব্যাপক মারধর করে।  পরে তাকে ধরে বাড়িতে নিয়ে আসে।  সন্ধ্যায় ফারুমার বাবা বাড়িতে এসে ঘরের দরজা খুলে ভেতরে ফারুমাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে চিৎকার করতে থাকেন।

তার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এসে বিষয়টি থানায় অবগত করে।  খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঝুলন্ত অবস্থায় ফারুমার মৃতদেহ উদ্ধার করে।
২৮, এপ্রিল ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে