আব্দুল লতিফ রঞ্জু, চাটমোহর (পাবনা) : একসময় বিকেল হলেই রাস্তার মোড়ে বসে চলতো আড্ডা। কেউ খেলতো তাস, কেউ বা কেরাম। কেউবা বড়দের সঙ্গে চা-স্টলে বসে খোশগল্পে মেতে উঠতো। তবে একটি মাঠ পরিবর্তন করে দিয়েছে এলাকার শিশু-কিশোর ও তরুণদের মানসিকতা।
এখন বিকেল হলেই সবাই মাঠে চলে আসে ফুটবল খেলতে। গত তিন বছরে পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। চাঁদা তুলে আবাদি জমি ভাড়া নিয়ে চলছে ফুটবল খেলা। শুনতে আশ্চর্যজনক মনে হলেও এটাই সত্য।
গ্রামটিতে খেলার মাঠ নেই। তাই ফুটবলপ্রেমী সজিব, রিপন, শরিফসহ বেশ কয়েকজন তরুণ নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে আবাদি জমিটি ভাড়া নেওয়ার পরিকল্পনা করে। পরে বিষয়টি তারা স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল কুদ্দুস রেজাকে জানায়। তাদের উদ্যোগে জমির মালিক দুই ভাই আবুল হোসেন ও ছকির উদ্দিনের কাছ থেকে দেড় বছরের চুক্তিতে ভাড়া নেওয়া হয়। এ বছর তাদের দিতে হয়েছে ১২ হাজার টাকা। ফুটবল কেনা হয়েছে চাঁদা তুলে। সেখানে এখন প্রতিদিন খেলাধুলা হয়। গড়ে তোলা হয়েছে ফুটবল ক্লাবও।
জমির মালিক আবুল হোসেন বলেন, সারা বছর জমিটিতে ফসল হতো। টাকা মূল উদ্দেশ্য নয়, খেলাধুলা করলে ছেলেরা খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকবে- এই চিন্তা থেকে জমিটি লিজ (ভাড়া) দেওয়া হয়েছে।
কৃষক আয়েন উদ্দিন বলেন, বয়সের ফারাক থাকলেও আমি তাদের সঙ্গে প্রতিদিন বিকেলে খেলতে নেমে পড়ি। সারা দিন মাঠে কাজ করে বিকেলে ছোটদের সঙ্গে ফুটবল খেলায় অংশ নিতে আমারও বেশ ভালো লাগে।
ইউপি সদস্য আব্দুল কুদ্দুস রেজা বলেন, বয়সের কারণে এইসব ছেলেদের মনে নানারকম বাজে চিন্তা আসে। অনেকেই অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। তাই তাদের সঙ্গে প্রতিদিন বিকেলে সঙ্গ দেই। এ ছাড়া শারীরিক ও মানসিকভাবে উপকৃত হবে তারা। এ ক্ষেত্রে এলাকার অনেকেই সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু নেট ও ফুটবলের সংকট রয়েছে বলে তিনি জানান।-কালের কণ্ঠ