ভাঙ্গুড়া (পাবনা): আপত্তিকর অবস্থায় হাতেনাতে আটক ডাক্তার। পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারি মেডিক্যাল অফিসার ও এক সন্তানের জনক রুবেল আহমেদের (২৭) বিরুদ্ধে এক মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। যা সাড়ে ৩ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চলছে।
জানা গেছে, হাজী গয়েজ উদ্দিন মহিলা মাদরাসার দ্বিতীয় বর্ষের জনৈক ছাত্রীর (১৭) সাথে রুবেলের প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। সেই প্রেমের টানে সাড়া দিয়ে ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে ধর্ষণের সময় হাতেনাতে স্থানীয়রা তাকে গ্রেফতার করে। এসময় গ্রাম্য শালিশের মাধ্যমে তার কাছ থেকে সাড়ে ৩ লাখ জরিমানা আদায় করে। এনিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার পারভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের টলটলিয়াপাড়ায় । ভিক্টিমের পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, রুবেল আহমেদ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের মেয়ের সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। ঘটনার দিন রাতে মেয়ের ঘরে রুবেল আহমেদের অবস্থান টের পেয়ে বাড়ির লোকজনসহ গ্রামবাসী আপত্তিকর অবস্থায় তাকে আটক করেন। পরে ওই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মহির উদ্দিন ও বর্তমান ইউপি সদস্য হারুন অর রশিদকে ডেকে এনে ধর্ষক রুবেলকে গণধোলাই দিয়ে তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়।
তখন ধর্ষক রুবেলকে ধর্ষিতার ঘরের বারান্দার খুঁটির সাথে বেঁধে রেখে চলে দেনদরবার। অবশেষে ধর্ষকের কাছ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা আদায় করে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান হেদায়েতুল্লাহ হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি মীমাংসার অযোগ্য হওয়ায় আমি রাতেই ঐ দরবারের স্থান ত্যাগ করি।
ইউপি সদস্য হারুন অর রশিদ বলেন, মেয়েলি ঘটনা তাই মেয়ের চাচা রমজান আলী বিষয়টি টাকার বিনিময়ে মীমাংসা করে নিয়েছেন।
ধর্ষিতার মা বলেন, আমার কোনো উপায় নেই তবে মীমাংসা হয়েছে কিন্তু কোনো টাকা হাতে পাইনি।
ধর্ষিতা বলেন, ‘আমি কোনো মীমাংসা চাই না। সে আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। তাই আমার দাবি তা হলো রুবেলকে আমার সাথে বিয়ে দিতে হবে, নতুবা আমি আত্মহত্যা করব।’
এ বিষয়ে জনৈক কাজি বলেন, ওই পরিবারের লোকজন ঘটনার দিন নিকাহ নিবন্ধনের জন্য আমাকে বাড়িতে ডেকে নিয়েছিল। আমি গভীর রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু টাকার বিনিময়ে বিষয়টি রফাদফা হওয়ায় আমি ভোর রাতে বাসায় ফিরে আসি।
ভাঙ্গুড়া থানার ওসি (তদন্ত) আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণের ঘটনা মীমাংসার অযোগ্য। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।