পাবনা প্রতিনিধি: মাদক বিক্রি কিংবা ঘুষ খেয়ে রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার বাস্তব গল্প আমরা ইদানিং হরহামেশাই শুনি। কিন্তু ঘি ভেজাল ঘি বিক্রি করে রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার বাস্তব গল্প নিশ্চয় আপনারা কেউ কখনো শুনেননি। আজ এমনি একটি গল্প থাকছে আপনাদের জন্য।
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার পৌর শহরের সরদারপাড়া মহল্লায় শহিদুল ইসলাম এবং তার শশুর শামসুল আলম একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে ঘি তৈরির কারখানা খুলে বসেন। কারখানার প্রধান ফটক সারা দিন বন্ধ রাখা হতো। অপরিচিত লোকদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হতো না। কারণ ভেতরে তৈরি করা হতো ভেজাল ঘি। পরে তৈরিকৃত ভেজাল ঘি পাইকারি দরে পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হতো। এভাবে রাতারাতি জামাই-শ্বশুর হয়ে যান কোটিপতি। পাম অয়েল ও বাটার অয়েল মিশিয়ে চুলায় জ্বাল দিয়ে জামাই-শ্বশুর মিলে তৈরি করতেন এই ভেজাল ঘি।
অবশেষে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাতে অভিযান চালানো হয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদুর রহমান। এ সময় ওই কারখানা থেকে ৪০ মণ ভেজাল ঘি, ৫ ব্যারেল পাম অয়েল, ৩৭ কার্টুন বাটার অয়েল, ৪ বস্তা ঘির ফ্লেবার ও ঘি তৈরির সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়।
এদিকে অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে ভেজাল ঘি তৈরির মূলহোতা কারখানার মালিক পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগর গ্রামের সুলতান শাহের ছেলে শহিদুল ইসলাম পালিয়ে যান।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদুর রহমান জানান, ওই কারখানা থেকে ভেজাল ঘি তৈরির সময় হাতেনাতে আটক করা হয় ছয়জনকে। এর পর রাতেই জব্দকৃত মালামাল জনসম্মুখে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগর গ্রামের বাসিন্দা মিলন, বিষ্ট, কামরুল ইসলাম, জীবন ঘোষ, শহিদুল ইসলাম ও ভাঙ্গুড়া পৌর সদরের সরদারপাড়া মহল্লার রজব আলী।
পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯-এর ৪৩ ধারায় প্রত্যেককে এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি শহিদুল ইসলাম ও তার শ্বশুর শামসুল আলমের বিরুদ্ধে পুলিশকে মামলা করার নির্দেশ দেন। অভিযানে সহযোগিতা করেন ভাঙ্গুড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাজেদুল ইসলাম ও সঙ্গীয় ফোর্স।