পাবনা থেকে : ইউএনওর কাছে দরিদ্র পরিবারের আবদার ছিল একসঙ্গে বসে দুপুরের খাবার খাওয়া। ইউএনও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কোনো এক ছুটির দিনে তাদের বাড়িতে এসে দুপুরের খাবার খাবেন।
এবার সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করলেন পাবনার চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরকার অসীম কুমার। শুধু প্রতিশ্রুতি রক্ষাই নয়, কাউকে না জানিয়ে নিজেই মাছ-মাংস, দই এবং কাঁচাবাজার করে পাঠিয়ে দেন সেই বাড়িতে।
এরপর শুক্রবার দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের মণ্ডলপাড়া গ্রামের দরিদ্র ভ্যানচালক ওয়াহাব প্রামাণিক তার স্ত্রী কোহিনূর বেগম, তিন মেয়ে শীলা, শিখা, সীমা ও ছেলে কাওসারের সঙ্গে বসে দুপুরের খাবার খান।
সীমা চাটমোহর মহিলা ডিগ্রি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় বাণিজ্য বিভাগে জিপিএ-৫ এবং তার বড় বোন শিখা খাতুন ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে কৃতীত্বের সঙ্গে পাস করেছেন।
দরিদ্রতার কশাঘাতে জর্জরিত অসহায় পরিবারের মেয়ে সীমা-শিখা ভালো ফল করেও যখন তাদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। পরে ১ আগস্ট সীমাদের বাড়িতে গিয়ে তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ান ইউএনও। এ সময় তাদের দুই বোনের লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন তিনি।
ওই সময় ইউএনওর কাছে সীমার বাবা-মা দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য আবদার করেন। সে সময় অন্য এক ছুটির দিনে খাবার খাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ইউএনও।
উল্লেখ্য, সীমা পড়াশোনা শেষ করে পুলিশ অফিসার এবং শিখা স্বাবলম্বী হয়ে পরিবারের অভাব দূর করতে চায়। দরিদ্রতার মধ্যে ভবিষ্যতে দুই বোনের সেই স্বপ্নপূরণ হবে কিনা এমন শঙ্কা যখন অসহায় পরিবারটিকে তাড়া করছিল, ঠিক তখন ইউএনও সরকার অসীম কুমারের আশ্বাসে হাসি ফুটেছে অসহায় পরিবারে।
এ ছাড়া ওই পরিবারের ভাঙ্গাচোরা বসতঘর দেখে ঘর মেরামত, সীমার মা কোহিনূর খাতুনকে একটি সেলাই মেশিন এবং ছোট ভাই কাওসারকে একটি বাই সাইকেল উপহার দেয়া হবে বলেও জানান ইউএনও।