ভাঙ্গুড়া (পাবনা): করোনা পরিস্থিতিতে ডিম ও মুরগির দাম নিম্নগামী। এ অবস্থায় পাবনা ভাঙ্গুড়া এলাকার ছোট ও মাঝারি পোল্ট্রি খামারের মালিকরা পড়েছেন বিপাকে। অর্ধেক দামেও ক্রেতা পাচ্ছেন না তারা।
সূত্র জানায়, ডিম উৎপাদনের জন্য উপজেলায় প্রায় আড়াই ’শ নিবন্ধিত পোল্ট্রি খামার রয়েছে। এরমধ্যে সোনালি মুরগির খামার ১৪৫টি, লেয়ার মুরগির খামার ৫৫টি ও হাঁসের খামার রয়েছে ৩৫টি। এসব খামার থেকে প্রতিদিন এক লাখের বেশি ডিম উৎপাদিত হয়। এর বাইরে অর্ধ শতাধিক অনিবন্ধিত খামার রয়েছে। এছাড়া মাংসের চাহিদা পূরণের জন্য উপজেলায় মাঝারি ও বড় আকারের ১১৪ টি ব্রয়লার মুরগির খামার রয়েছে। এসব খামার থেকে প্রতিদিন সহস্রাধিক পরিমাণ মুরগি স্থানীয় বাজারে বিক্রি হয়।
ব্যবসায়ীরা জানান, এক হাজার ডিম উৎপাদন করতে খামারিদের খরচ হয় সাড়ে সাত থেকে আট হাজার টাকা। আড়ৎদাররা তা কেনেন আট থেকে সাড়ে আট হাজার টাকায়। সংগৃহীত ডিম ট্রাকযোগে খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, রাজশাহী, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে বিক্রি করা হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে বাজার কমে গেছে। বিক্রি অথবা মজুত নিয়ে সংকট তৈরী হওয়ায় অর্ধেক দামেও ডিম কিনছেন না ব্যবসায়ীরা। ভাঙ্গুড়ায় খুচরা বাজারে ৪০০ টাকায় ১০০ ডিম বিক্রি করতে দেখা গেছে। অথচ কয়েকদিন আগেও তা বিক্রি হয়েছে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকায়।
পোল্ট্রি ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমার খামারে প্রায় ৩৩ ‘শ লেয়ার মুরগি আছে। প্রতিদিন তিন হাজার মুরগি ডিম দেয়। এসব মুরগির খাবার ও ঔষধ বাবদ প্রতিদিন ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকা ব্যয় হয়। কিন্তু বর্তমানে প্রতিদিন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০/ ১২ হাজার টাকায়। এতে প্রতিদিন ৫/৬ হাজার টাকার লোকসান গুনতে হচ্ছে।’
আরেক ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমার বিক্রি উপযোগী প্রায় ৮০০ ব্রয়লার মুরগি রয়েছে। কয়েকদিনে মাত্র ৬০টি মুরগি বিক্রি করতে পেরেছি। এরই মধ্যে মুরগি মা'রা যেতে শুরু করেছে।’
ভাঙ্গুড়া বাজারের আড়ৎদার আব্দুস সাত্তার বলেন, ’বাইরের কোনো জেলার ব্যবসায়ীরা এখন আর ডিম ক্রয় করছে না। কিন্তু খামারিদের চা'পে আমাদের ডিম কিনতে হচ্ছে। এখন কোনভাবে ডিম মজুদ করতে পারছিনা।’
ভাঙ্গুরা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ’ভাইরাসের সং'ক্রমণ ঘটবে এমন গুজবে মানুষ ডিম ও মুরগি খাওয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে পোলট্রি ব্যবসায় ধ্ব'স নেমেছে।’