ঈশ্বরদী (পাবনা) : পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডে ছেলে-মেয়ের সঙ্গে ল'ড়াই করবেন মা, মেয়ে-জামাইয়ের সঙ্গে শাশুড়ি। চাচা ল'ড়াই করবেন ভাতিজি-ভাতিজার সঙ্গে। দেবরের ল'ড়াই হবে ভাবির সঙ্গে। মু'খোমু'খি অবস্থানে ভাই-বোন। এ নিয়ে বিব্র'তকর অবস্থায় পড়েছেন উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগসহ এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। আর ভোটাররা পড়েছেন দ্বি'ধায়।
তবে প্রয়াত এমপি ও ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরিফ ডিলুর ছোট ভাই লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান শরিফের ভাষ্য, মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা যে ছয়জন পরিবারের সদস্য হিসেবে নিজেদের দা'বি করছেন, তাঁদের মধ্যে চারজনের দা'বির সারবত্তা নেই। তাঁর মতে, বিয়ের পর মেয়ে কখনো বাবার পরিবারের সদস্য থাকতে পারেন না। সেখানে মেয়ের জামাই কিংবা খালাতো ভাই বা ভাগ্নিজামাই কিভাবে পরিবারের সদস্য হন, তা তাঁর বোধগম্য নয়।
আনিসুর রহমান শরিফ বলেন, ‘ছয়জনকে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর পরিবারের সদস্য উল্লেখ করে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেলে সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। এসব নিউজে আমরা অস'ন্তুষ্ট এবং বিব্র'ত বো'ধ করছি।’
তাঁর সা'ফ কথা, তাঁদের পরিবার থেকে দুজন ফরম তুলেছেন। একজন হলেন প্রয়াত এমপির স্ত্রী কামরুন্নাহার শরিফ, অন্যজন ছেলে গালিবুর রহমান শরিফ। কামরুন্নাহার শরিফ বয়োবৃ'দ্ধ। তাই পরিবারের একমাত্র যোগ্য প্রার্থী গালিবুর রহমান বলেও মন্ত'ব্য করেন তিনি।
মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা প্রয়াত এমপির ‘পরিবারের ছয় সদস্য’ হলেন তাঁর স্ত্রী উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামরুন্নাহার শরিফ, ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য গালিবুর রহমান শরিফ, মেয়ে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মাহজেবিন শিরিন পিয়া, মেয়ের জামাই ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টু, খালাতো ভাই প্রয়াত এমপির ব্যক্তিগত সহকারী বশির আহমেদ বকুল ও ভাগ্নিজামাই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাবিবুর রহমান।
আকর্ষণীয় প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন তিন তরুণ। তাঁরা হলেন গালিবুর রহমান শরিফ, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন মৎস্যজীবী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ সহসাধারণ সম্পাদক শিল্পপতি প্রকৌশলী আব্দুল আলিম এবং বঙ্গবন্ধু কেন্দ্রীয় পরিষদের সদস্য চিসিং বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিল্পপতি জালাল উদ্দিন তুহিন।
আওয়ামী লীগের এই অংশের নেতাকর্মীরা মনে করেন, শামসুর রহমান শরিফের মৃ'ত্যুর পর ঈশ্বরদী-আটঘড়িয়ায় যে রাজনৈতিক প'রি'স্থি'তির উ'দ্ভব হয়েছে, তাতে তিন তরুণের যেকোনো একজনকে মনোনয়ন দেওয়াই হবে স'ঠিক সিদ্ধা'ন্ত। এ ছাড়া তাঁদের কাছে আস্থা অর্জন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রবিউল আলম বুদু সরদারও।
আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর এই আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আসনটিতে দীর্ঘকাল ধরে একক আধিপত্য ছিল প্রয়াত এমপি ডিলুর। এই কারণে বারবার তাঁর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বি'তা করে মনোনয়ন ফরম তুলেও দলীয় মনোনয়ন পাননি কেউ। এবার তাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বি'তার সেই সুযোগ নিতে চান।
তবে এত প্রার্থীর ভিড়ে প্রয়াত ডিলুর ছেলে গালিবুর রহমান শরিফকেই প্রথম পছন্দ বলে ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে। সূত্র মতে, দুই উপজেলায় ডিলুর রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজগুলো ছেলে গালিবকে দিয়েই সমাপ্ত করা সম্ভব।
ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান মিন্টু কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গালিবুর রহমান শরিফ উচ্চশিক্ষিত, বিচক্ষণ। বাবার মৃত্যুর পর ঈশ্বরদী-আটঘড়িয়ায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল তা বিচক্ষণতার সঙ্গে পূরণ করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। দুই উপজেলার দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছেন।’ তাঁর দাবি, ঈশ্বরদী ও আটঘড়িয়া উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যানরাও গালিবকেই সমর্থন দিয়েছেন।-কালের কণ্ঠ