এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : পাবনার চাটমোহরে ঋণ খেলাপির মামলা করায় রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক ও অন্য কর্মীদের মারধর এবং ব্যাংক ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে লোকমান হোসেন নামের এক যুবদল নেতা ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুর দুইটার দিকে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ফৈলজানা শাখায় এ ঘটনা ঘটে। শাখা ব্যবস্থাপক শামসুজ্জামান নয়নকে আহত অবস্থায় পার্শ্ববর্তী আটঘরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযুক্ত লোকমান হোসেন ফৈলজানা ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ফৈলজানা ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক।
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ফৈলজানা শাখার মূখ্য কর্মকর্তা এস এম বশির উদ্দিন জানান, ২০১৮ সালে ব্যাংকের ফৈলজানা শাখা থেকে ৩ লাখ টাকা সিসি ঋণ নেন ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ও ইউপি সদস্য লোকমান হোসেন। এই ঋণ প্রতিবছর নবায়ন করতে হয়। কিন্তু গত দুই বছর ধরে তিনি এই ঋণ সময়মত নবায়ন করেননি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেউ ঋণ নবায়ন না করলে ব্যাংকের নিয়মানুযায়ী তিনি ঋণ খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হন এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন।
সেই হিসেবে সময়মতো ঋণ পরিশোধ না করায় ব্যাংকের নিয়মকানুন মেনে আদালতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ লোকমান হোসেনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন। গত ২৫ মে'২৫ তারিখে পাবনার অর্থঋণ আদালতে মামলা করা হয়। মামলা নম্বর ৮৪।
মামলা দায়েরের বিষয়টি শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে বেশকিছু লোকজনসহ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ফৈলজানা শাখায় গিয়ে হামলা করে অফিস ও টেবিলের গ্লাস ভাঙচুর এবং শাখা ব্যবস্থাপক শামসুজ্জামান ও অনান্য কর্মচারীদের মারধর করে আহত করা হয়।
এ সময় ব্যাংকের মধ্যে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে লোকজন দ্বিগবিদ্বিক ছোটাছুটি শুরু করেন। পরে স্থানীয়রা এসে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক শামসুজ্জামানকে উদ্ধার করে আটঘরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে এবং অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ সদস্যরা।
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ডিজিএম হেলাল উদ্দিন বলেন, লোকমান হোসেনের নের্তৃত্বে ১৫/২০ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ব্যাংক শাখায় প্রবেশ করে। এ সময় পূর্বের একটি কৃষি ঋণ সংক্রান্ত বিষয় ম্যানেজার শামসুজ্জামান নয়নের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হামলা করে ম্যানেজার ও অন্য কর্মচারীদের মারধর করে। এছাড়া ভাঙচুর করা হয় ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টার ও আসবাবপত্র। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান এই কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অভিযুক্ত লোকমান হোসেনের মোবাইলে বার বার ফোন দিলেও মোবাইল বন্ধ পাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
লোকমান হোসেনের দলীয় পদবি নিশ্চিত করে চাটমোহর উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব ফারুক হোসেন বলেন, বিষয়টি শুনেছি এবং ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথাও বলেছি। লোকমান হোসেন যদি অন্যায় করে থাকে তবে তার বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে আইনি সহযোগিতা করা হবে।
চাটমোহর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ব্যাংকটির শাখা ব্যবস্থাপক বাদী হয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মামলা দায়েরের পর পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।