শরীফুল আলম: এক ব্যক্তি তার একমাত্র ছেলেটাকে নিয়ে একটা গাধার পিঠে চড়ে সফরে যাচ্ছিল। পথে কিছু লোকের পাশ দিয়ে যাবার সময় শুনল, দেখো দেখো কি নিষ্ঠুরতা ! দুই দুইটা মানুষ একটা গাধার পিঠে চড়েছে। বোবা এই প্রানিটার প্রতি তাদের এতটুকু মায়া নেই। এ মন্তব্য শুনে লোকটা গাধার পিঠ থেকে নেমে ছেলেকে গাধার পিঠে বসিয়ে হাটা শুরু করল। একটু পর অারেক দল লোকের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় শুনল, দেখো দেখো লোকটা তার ছেলেকে একটুও অাদব কায়দা শেখায়নি তাই সে যাচ্ছে হেটে অার ছেলেটা যাচ্ছে গাধার পিঠে চড়ে। এ কথা শুনে লোকটা নিজে গাধার পিঠে চড়ে বসল অার ছেলেটাকে গাধার লাগাম ধরে হাটতে বলল। কিছুদূর যাবার পর অন্য একদল লোকের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় শুনল, দেখেছো কি নির্দয় পিতা! কচি ছেলেটাকে হাটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে অার নিজে অারাম করে গাধার পিঠে চড়ে যাচ্ছে। একথা শুনে তিনি নেমে গিয়ে গাধার পিঠ খালি রেখে লাগাম ধরে ছেলের সাথে হাটতে শুরু করল। কিছুটা পথ হেটে যেতেই অন্য এক দল লোক বলতে শুরু করল এমন নির্বোধ লোক কখনো দেখেছো? এত স্বাস্থ্যবান একটা গাধা থাকতে নিজেরা কষ্ট করে হেটে যাচ্ছে। কথাগুলো শুনে অার সইতে না পেরে অবশেষে গাধাটাকেই কাধে তুলে নিয়ে হাটতে শুরু করল লোকটা ।
.
অামাদের সমাজের চিত্রটা অাসলে এমনই। অাপনার পছন্দ হোক অার না হোক সমাজে কিছু মানুষ থাকবেই যারা সব সময়ই অন্যের সমালোচনায় মুখর থাকবে। অাপনি যেভাবেই চলেন অার যত ভাল ভাবেই চলেন না কেন কিছু মানুষের সমালোচনা থেকে কোন ভাবেই বাঁচতে পারবেন না। সমাজের সব মানুষকে একসংগে খুশি রাখা চরম অসম্ভব একটা কাজ। পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ মহাম্মদ(স:) পর্যন্ত এটা পারেননি। এমনকি সর্বশক্তিমান অাল্লাহ সুবহানাল্লাহ তায়ালা সয়ং কাফের, বেঈমান, ইহুদি, নাসারাদের সমালোচনার শিকার হয়েছেন। কেউ বলেছে অাল্লাহ সন্তান নিয়েছেন, কেউ বলেছে ফেরেশতারা অাল্লাহর কন্যা, কেউ বলেছে মুসা(অা:) অাল্লাহর পুত্র, কেউ বলেছে ঈসা(অা:)অাল্লাহর পুত্র, ইত্যাদি গর্হিত মন্তব্য করে মহান অাল্লাহর মহা পবিত্রতার উপর নোংরা অপবাদ অার সমালোচনা রং লাগিয়েছে। অথচ এরাও অাল্লাহরই সৃষ্টি।
.
কাজেই সমাজের মানুষগুলো সমালোচনা করবে এটা ধরে নিয়েই সমাজে চলতে হবে। পৃথিবীর কোন মানুষের সাথে যেমন কোন মানুষের চেহারার মিল নেই। তেমনি মিল নেই তাদের মনের। একেক জনের মন একেক রকম। এই ভিন্নতা সহজাত। এটা সৃষ্টিকর্তার এক অপার মহিমা। অন্যদিকে সমস্ত জান্নাতবাসীদের মন হবে একটা। অর্থাৎ তাদের মনে অনু পরিমান মতপার্থক্য থাকবেনা।
.
যদি অাপনি চিলের ডানার নিচে গিয়েও লুকান তবুও সমালোচকরা অাপনাকে খুজে বের করে অাপনার সমালোচনা করবে। সমাজে বসবাস করতে হলে সমালোচনা সইতেই হবে। এর কোনই বিকল্প নেই। অাবার সমাজের বাইরে গিয়েও বাস করতে পারবেন না।
যে মানুষের সমালোচনা হজম করতে পেরেছে সে অনেক বড় হতে পেরেছে।
-(Collected)
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস