ফ্রেন্ডদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম । হঠাৎ পাশে একটা মোবাইল পরে থাকতে দেখলাম। কেউ নিশ্চয়ই ভুলে ফেলে রেখে গেছে। খুব দামি কোন হ্যান্ডসেট না। নোকিয়া ২৭০০। ফোনটা তুলেই প্রোফাইলে নাম দেখলাম আজাদ। এরপর ডায়াল লিস্ট চেক করলাম।
একজনকে ফোন করে জিজ্ঞেস করলাম এই ফোনের মালিককে কোথায় পাওয়া যাবে! লোকটি ওই মুহূর্তে তেমন কোন জবাব
দিতে পারলো না। কললিস্টের দ্বিতীয় স্থানে দেখলাম 'শুকতারা' নামে একজনের নাম্বার সেভ করা।
ডায়াল কল, মিসড কল, রিসিভ কল সবখানেই শুকতারাকে দেখতে পেলাম। বুঝতে পারলাম ইনি আজাদ ভাইয়ের কিছু লাগেন এবং তাকে হয়তো আদর করে শুকতারা ডাকা হয়।
ঐ মোবাইলে চার্জ না থাকায় আমার নিজের নাম্বার থেকে কল করলাম শুকতারাকে। রিসিভ করল একটা মেয়ে।
আমি বললাম, 'হ্যালো, কে শুকতারা বলছেন?'
মেয়ে তো পুরাই ২২০ ভোল্টের শক খেলো নিজের ভালবাসার মানুষের মুখের ডাক অন্য কারো কাছে শুনে। সাথে সাথে ফোনটা সাথে থাকা একটা ছেলেকে দিয়ে দিল। ছেলেটাই আজাদ ছিল। কথা হলো আজাদের সাথে ।
একটু পর এসে মোবাইলটা নিয়ে গেল আজাদ। ভাবছিলাম আজাদের সাথে শুকতারাও আসবে । কিন্তু দুঃখের ব্যাপার শুকতারাকে দেখতে পেলাম না। সম্ভবত লজ্জায় আসেনি ।
ভাগ্য ভাল ছেলেটা মেয়েটার নাম অন্য কিছু দিয়ে সেভ করে নাই। শুকতারা না হয়ে যদি 'জান' নামে সেভ করত তাহলে কি অবস্থাটা হতো? আমাকে ফোন দিয়ে বলতে হতো, হ্যালো 'জান', এখানে কি আজাদ নামের কেউ আছে?
অনেক ছেলেপুলে তো আরও রোমান্টিক নামে নিজের গার্লফ্রেন্ডের নাম্বার সেভ করে। আমার এক ফ্রেন্ড যেমন নিজের গার্লফ্রেন্ডের নাম 'বউ' নামে সেভ করেছে। এরকম হলে কি হতো একবার চিন্তা করলেই শরীরের লোম দাঁড়িয়ে যায়!
তাই, নিজের প্রিয়জনের নাম্বার সেভ করার আগে শতবার ভাবুন। মনে রাখবেন, একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না ।
লেখকঃ মেহেদি হাসান দিনার ।