সুদীপ বিশ্বাসঃ আজ ২২ শে শ্রাবন. ১৯৪১ সালের এই দিনে কবি গুরু আমাদের ছেড়ে অসীমে পাড়ি দেন।
রবীন্দ্রনাথ আমাদের চির চলার সাথী। বর্ষায় মনে পড়ে তাঁর গান। আকাশের চাঁদ দেখে গাইতে ইচ্ছে করে তার গান.প্রেম ,দুঃখ ,সুখ,স্মৃতি কাতরতা সহ জীবনের সব অধ্যায় নিয়ে আছে রবীন্দ্রনাথের হৃদয়াগ্রাহী গান,কবিতা।
তবে আমরা অনেকেই রবীন্দ্রনাথের ছবি আঁকার কথা জানিনা.শিল্পপ্রেমী রবীন্দ্রনাথ যে ছবিগুলো এঁকেছিলেন তা এখন ররবীন্দ্রনাথের চিত্রকর্ম হিসেবে পরিচিত। তাঁর আঁকা ছবির সংখ্যা আড়াই হাজরের বেশী।
তিনি পেশাদার চিত্র শিল্পি ছিলেন না, কিন্তু তাঁর চিত্রকলার প্রধান বৈশিষ্ট্য তাঁর নিজস্ব স্বকীয়তা । রবি ঠাকুর শৈশবে মেনে নিয়েছিলেন যে ছবি আঁকার ব্যাপারটি তাঁর জন্য নয়। নিতান্তই খেলার ছলেই তিনি আঁকতে শুরু করেছিলেন তারপরে একসময় তা নেশা হয়ে দাঁড়ায়।
রবি ঠাকুর ছবির নামকরণ পছন্দ করতেন না। তিনি বলতেন ছবি প্রকৃতপক্ষে তাই ছবিটি
দেখে যা মনে হয়।
রবির চিত্রকর্মকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছেঃ মুখমণ্ডল বা মুখাবয়বের
ছবি ,অদ্ভুত কাল্পনিক প্রাণীর ছবি এবং প্রাকৃতিক দৃশ্যের ছবি। যদিও এর বাইরেও ছবি আছে। কিন্তু অধিকাংশ ছবি এর যে কোন একটি ভাগে পড়ে ।
তাঁর আঁকার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল কী আঁকবেন তা স্থির না ক’রেই ঠাকুর কলম-কাগজ নিয়ে আঁকতে বসতেন। প্রথমে তিনি কলমের টানে ,রেখার পর রেখা, বিন্দুর পর বিন্দু, তুলিতে ছোপের পরে ছোপ দিয়ে গেছেন একের পর এক আর কাগজে ফুটে উঠেছে ছবি।
নিজের আঁকা ছবি সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন "ঐগুলি কেবল রেখাই নয়, ঐগুলি তার
থেকেও কিছু বেশি, আমার চিত্রাঙ্কিত স্বপ্ন এক কাব্যিক কল্পনার দর্শন "
তিনি তাঁর চিত্র সাধনার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও পেয়েছেন। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে প্যারিস শহরের পিগ্যাল
আর্ট গ্যালারীতে তাঁর প্রথম শিল্প প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
তার পর থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রবি ঠাকুরের ছবির প্রদর্শনীর আয়োজন করা
হয়েছে। প্রতিটি প্রদশর্নী শিল্পগুনীদের মুগ্ধ করে।
এছাড়া কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিভিন্ন ধরনের খাবার ভালোবাসতেন এবং কখনো কখনো নিজ হাতে রান্নাও করতেন।
বিভিন্ন দেশ ভ্রমনের সময় সেসব জায়গার খাবারের প্রতি তাঁর ভালোবাসা জন্ম নেয়।
প্যাটিস, স্যুপ, পাই, কাটলেট, রোস্ট, কাবাব খেতে তিনি ভালোবাসতেন।
সর্বগুনে গুনান্বিত রবীন্দ্রনাথ গানও গাইতেন, নিজের লেখা গানের সুর ও করতেন ।
বিভিন্ন বই পড়তে পড়তে জানতে পারলাম তিনি অভিনয়ও করেছেন বাল্মিকী প্রতিভায় নাম ভূমিকায় তিনি অভিনয় করেছিলেন। এমনকি তিনি সে সময়ের বিখ্যাত কুস্তিগির হিরা সিংয়ের কাছে কুস্তিবিদ্যা শিখেছিলেন।
জ্ঞানীরা খুব কম সময়ের জন্য নিদ্রা যায় রবিন্দ্রনাথ তার ব্যতিক্রমী হবে কেন?
গভীর রাতে ঘুমাতেন, উঠতেন শেষ রাতে। ভোর থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত কবি একটানা লিখতেন।
সকাল ৭টায় খাবার সেরে আবার লিখতেন, ফাঁকে ফাঁকে তিনি চা বা কফি পান করতেন।
রবীন্দ্রনাথ এক মহাসমুদ্রের নাম, তাকে সারা জীবন জানার পরও জানার শেষ হয়না।
৬ আগস্ট ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস