বালক বালিকাকে বিয়ে করতে চায়। প্রস্তাব নিয়ে গেল চৌধুরী সাহেবের কাছে।
-তুমি যে আমার মেয়েকে বিবাহ করবে কি আছে তোমার? জলদগম্ভীর কন্ঠে জানতে চাইলো চৌধুরী সাহেব।
-আমাকে বিয়ে করলে আপনার মেয়ের অসুখ বিসুখ কম হবে!
-কেন?
-কেননা আমার সেন্স অব হিউমার খুব ভালো। আমাকে বিয়ে করলে ও সবসময় হাসিখুশি থাকবে। আর সবসময় হাসিখুশি থাকলে রোগ কম হয়।
-শোন হে ছোকড়া। আমার মেয়ের হাসির দরকার হলে আমি ওকে Mr. Bean এর ডিভিডি কিনে দিবো। তোমাকে দরকার নেই। তুমি আসতে পারো।
বালক ফিরলো ব্যর্থ মনে। মেয়ের বিয়ে হলো বড় ব্যবসায়ীর সাথে। সম্পদের কোন অভাব নেই। অভাব একটা জিনিসের। হাসি ! হাসতে ভুলে গেল বালিকা! হলো কঠিন রোগ। যার সৃষ্টি বিষন্নতা থেকে। অবস্থা দিন দিন খারাপ হতে থাকলো।
চৌধুরী ছুটলো সেই বালকের কাছে। কেঁদে কেটে পায়ে পড়ার উপক্রম।
-আমার মেয়েকে বাঁচাও তুমি। পুরানো অভিমান ভুলে বালক ছুটলো হাসপাতালে। বালিকাকে দেখে সে অবাক। শুকিয়ে কাঠ। চোখের নিচে আঁধার।
-এ অবস্থা কি করে হলো?
-ও হাসছে না আজ অনেকদিন। চৌধুরি সাহেব করুণ স্বরে জবাব দিলো।
-কেন আপনি ওকে Mr. Bean এর ডিভিডি কিনে দেন নি? অবাক স্বরে বালকের প্রশ্ন।
তারপর এক মূহুর্ত। এই কথা শুনে হঠাৎ খিলখিল হাসিতে ভেঙ্গে পড়লো বালিকা। সেরে গেল রোগ। সুস্থ স্বাভাবিক জীবন শুরু হলো তার।
বালক আবার নামলো রাজপথে। একা। কেউ জানে না, সে নিজে হাসে না আজ অনেকদিন। অন্যকে হাসাতে পারলেও নিজের হাসি মুছে গেছে অনেক আগে। একলা পথিক হয়ে রসিকতা করতে করতে নিজে নির্মম রসিকতায় ঘুরে বেড়াচ্ছে নির্মম শহরে।
লেখক: সাখাওয়াত হোসেন মুন্না ।