রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৭:১৯:২৩

অপেক্ষায় এখনো আমি

ল ২০২৮.....
নিলয় সাহেব বসুন্ধরা সিটি মল এ এসেছেন তার মেয়ে
অধরা কে নিয়ে। অধরা এর বয়স ৫ বছর।
নিলয় এদিক সেদিক ঘুরে কিছুই পাচ্ছিলেন না মনের মত।
শেষে ৩য় তলায় উঠে বাচ্চাদের কাপড় এর দোকানে
গেলেন।
সেখানে গিয়েই কিছুটা অবাক হলেন।
.
.
নীরা না?
হম নীরাই তো। সাথে ছেলেটা কে? নীরার ছেলে হয়তো।
অনেক কিউট।কথা বলবো? নীরা চিনবে তো?
চিনতে না পারলেও অবাক হবার মত কিছুই হবে না। ১২টা
বছর মানে ১যুগ কম সময় নয়।
.
.
নীরা নিলয় কে দেখে চিনতে পেরেছে এবং অনেক আবেগ
ভরা দৃষ্টিতে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে।এই সেই নিলয় যে
নীরা স্বপ্ন সুখের ভান্ডার খুলে বসেছিল একদিন।কিন্তু
সেদিন এর সেই নিলয় আর আজকের এই নিলয় এর অনেক
পার্থক্য। সেদিন নিলয় ছিল বেকার যুবক আজ অনেক বড়
কিছু।
.
.
আপনি নীরা না? আই মিন নাভিয়া তারান্নুম নিরু?
নীরা এই কথা টা শুনে থমকে দাড়ায়।এই ডাক উপেক্ষা
করার শক্তি আল্লাহ তাকে দেন নি। তাই ফিরে তাকিয়ে
বলল জি তুমি ঠিক বলছ।নিলয় অবাক নীরা একটুও বদলায়
নি।ঠিক ১যুগ আগের মতই আছে।
কেমন আছ নিলয়?
বেচে আছি।
তোমার কাছে সময় থাকলে চল কফি খেতে খেতে কথা
বলি।
নীরার না করার ক্ষমতা কখনো ছিলনা এখনো নেই। নীরা
কফি শপ এ গিয়ে ৩য় টেবিলে বসল ঠিক ১২বছর আগের মত
করে।
.
.
:কেমন আছ নীরা?
:ভালই, তুমি ?
:ভাল নেই বললেই কি আমাকে ভাল রাখতে পারবে নীরা?
:তুমি এখনো আগের মতই আছ অনেক রাগি, অনেক জেদি।
:না, আমি আর রাগি জেদি কিছুই নেই, থাকলে তুমি
অন্যের ঘর করতে না।
: আবার সেই কথা?
: বাদ দাও নীরা। বল তোমার স্বামী কেমন আছে? কোথায়
এখন ইঞ্জিনিয়ার সাহেব? তোমার ছেলেটা অনেক কিউট।
কি নাম ওর?
:স্বামী? আছে কোথাও। ওর নাম আরশ।
তোমার মেয়ের নাম কি? তোমার সহধর্মিণী এর নাম কি?
কেমন আছে?
.
.
:ওর নাম অধরা। আমার ভাইয়ার মেয়ে।ওর আব্বু আম্মু নেই।
আর আমার কপালে বিয়ে লিখা নেই।
:তুমি এমন কেন বলত নিলয় ? বিয়ে টা করনি কেন? এখন কি
কর?
:বিয়ে তো করতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমার হবু স্ত্রী এর
বিয়ে হয় এক ইঞ্জিনিয়ার এর সাথে তখন আমি বেকার
তাই আর পড়ে বেকারত্ব ঘুচাতে গিয়ে আর বিয়ে করার সময়
হয়ে উঠে নি।এখন IFIC BANK এ চাটার্ড একাউন্টস পদে কাজ
করি। তোমার বর এর কথা বললে না কেন?
:বর থাকলে তো বলব?
:মানে?
.
.
:মানে আমি বিয়ে করিনি।তোমাকে দেয়া খবর টা
সাজানো ছিল।আরশ আমার বড় আপুর ছেলে। আজ ওকে
নিয়ে একটু ঘুরতে বের হয়েছি। ডাক্তার এর পেশায় সময়
পাই না।
:এই কাজ টা কেন করেছিলে?
:দরকার ছিল নিলয়। তোমাকে কি করে বুঝাবো যে আমার
কাছে তোমার প্রথম প্রত্যাশা "নিলীমা" যাকে আমি
কখনই তোমাকে দিতে পারব না।
আমি কখনই মা হতে পারব না নিলয়। আর আমি তুমি
আমাদের নিলীমা কে নিয়ে এত স্বপ্ন দেখতে যে কখনো
বলতেও পারিনি সাহস করে। তাই এমন টা করতে হইছে।
.
.
:আমাকে বললে আমি সব মেনে নিতাম
:আমি জানি নিলয় তুমি আমার জন্য সব করতে পারো।
আমি জানি তুমি হাসিমুখে আমাকে মেনে নিতে। কিন্তু
আমি পারতাম না তোমার ওই পরাজিত মুখটি দেখতে।
:নীরা আমি এখনো তোমারি আছি।আমি তোমাকে
নিয়েই স্বপ্ন দেখি। যেমন নিলয় তোমার আগে ছিল ঠিক
তেমনি রেখেছি।
:তুমি বদলাবে না।আমি এজন্যই সেদিন তোমার সামনে
আসিনি। তোমার সামনে আসলে আর তোমার এই
মায়াভরা মুখটা দেখলে মিথ্যা বলতে পারিনা।আমিও
তোমার আছি নিলয় কিন্তু আমরা এক হব না, আমি যে
তোমাকে নিলীমা দিতে পারব না।
:আমাদের একটা মেয়ে আছে অধরা। আহ থেকে অধরা হবে
নিলীমা আহসান অধরা।
আর কি চাই।
:এখনো আমি তোমার।
:আমিও তোমার নিলয় কিন্তু আর কত করবে আমার জন্য।
আমাকেও কিছু করতে দাও। জীবনে কি দাও নি আমাকে
আর কত দিবা?
:আমি তো আমাকেই তোমার হাতে দিতে চাই।নিয়ে নাও
:হম নিব।এবার নিব।তোমাকে ছাড়া আমি আর থাকতে
পারছি না।নিলয় আমি তোমার.........
.
.
.
তারপর শুরু হল নিলয় নীরার জীবন চলা দীর্ঘ ১যুগ পর।একেই
বলে ভালবাসা।যাকে ভালবাসি তার জন্য যদি অপেক্ষাই
করতে না পারি তাহলে কেমন ভালবাসা।
লেখকঃ নিলয় আহসান নিশো (বৃষ্টিহীন বর্ষাকাল)
২৫ জুলাই ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে