পাঠকই লেখক ডেস্ক: কাক ডাকা ভোরে প্রতিদিনের মতো আজও সাইকেলে করে কোচিংয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম আমি আর শাকিল।
শাকিল আমার খুব ভালো একটা বন্ধু। কিছুটা পথ যেতেই শাকিলকে বললাম, দোস্ত কোচিংয়ে যেতে ইচ্ছে করছে না। চল যাই, আজ তুই আর আমি বালিকা স্কুলের সামনে সময় কাটাবো।
শাকিলও আমার কথায় সাড়া দিয়ে বললো, চল যাই...।
সামনে বাজার...! বাজার থেকে কিছুটা পথ দূরেই বালিকা স্কুল। বাজারে যেতেই আমাদের আরেক বন্ধু কালামের সাথে দেখা হলো। বন্ধু হিসেবে কালাম খুবই ভালো।
কালামকে দেখেই আমি ডেকে বললাম, এই দোস্ত এদিকে আয়।
মৃদু হেসে কালাম বললো, কি বল...।
আমি কালামকে বললাম, চল দোস্ত বালিকা স্কুলের সামনে থেকে ঘুরে আসি। আর কয়টা ডানা কাটা পরী দেখে আসি। দিনটা ভালো কাটবে।
কালাম বললো, না, আমি যাবো না.. তোরা যা।
এতোক্ষণ পর যেন শাকিলের মুখে কথা ফুটলো।
শাকিল বললো, আরে কালাম তুই আর কি যাবি...! তুই তো একটা হিজড়া।
কালাম বললো, কি আমি হিজড়া!
আমি হেসে বললাম, তুই হিজড়া নাতো কি? হিজড়া না হলে তুই তো আমাদের সাথে যেতে রাজি থাকতি।
কালাম বললো, ওকে.. চল যাবো।
বালিকা স্কুলের সামনে গিয়েই সিগারেট জ্বালিয়ে টানতে শুরু করলাম। আর সুন্দরী মেয়েদের দেখে আজেবাজে কমেন্ট করতে থাকলাম। ওরে... জিনিস একটা... আবার কোনো একটা মেয়েকে দেখে বলে উঠলাম, দোস্ত ওই দেখ একটা মাল যাচ্ছে।
আমার এমন আচারণে কালামের মনটা মুহূর্তেই যেন নীরব হয়ে গেলো। কোমল সুরে বললো, দোস্ত মেয়েদের দেখে এসব বলিস না। ওরাতো আমাদেরই বোনের মতো। চল এখানে আর এক মুহূর্তও থাকবো না।
আমি বললাম, দোস্ত আর দুই-একটা ডানা কাটা পরী দেখেই চলে যাবো।
হঠাৎ করেই পেছন থেকে ডাক পড়লো, এই ভাইয়া তুই এখানে কি করিস? কোচিংয়ে যাসনি?
কিছুটা চমকিত কণ্ঠে বললাম, ইয়ে মানে... এইতো আসলাম... এমনিতেই। যা বোন ক্লাসে যা।
মেয়ে দুটি কিছুটা দূরে যেতেই কালাম আমাকে বললো, দোস্ত কে রে মালটা? জটিল তো...
আমি বললাম, এই কালাম মুখ সামলিয়ে কথা বল, ও আমার ছোট বোন।
কালাম আমাকে বললো, তুই যে এতোক্ষণ ধরে মেয়েদেরকে কি সব আজেবাজে নামে ডাকলি... কাউকে ডাকলি জিনিস বলে, আবার কাউকে বললি মাল একটা। ওরাও তো কারো না কারো বোন ছিল।
আমি আর নিজেকে সামলে রাখতে পারলাম না...! আমার দুই হাতে কালামের পা জড়িয়ে ধরে বললাম, আমার ভুল হয়ে গেছেরে কালাম... তুই আমাকে মাফ করে দে।
কালাম আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো, ওঠ তুই তোর ভুল বুঝতে পেরেছিস এটাই অনেক, চল কোচিংয়ে যাই।
লেখক: এফ.এম. রনি