আমি: আব্বু টাকা দেন।
আব্বু: কিসের টাকা?
আমি: ইন্টারনেটের বিল দিতে হবে।
আব্বু: কতো?
আমি: ৫৫০ টাকা।
আব্বু: এখন টাকা আছে কিন্তু দেয়া যাবে না লাগবে। কালকে নিস।
আমি: কালকে অফিস বন্ধ (ডাহা মিছা কথা)।
আব্বু: তাইলে পরশু নিস।
আমি: অফিস থেকে গতকাল বিলের জন্য কল দিয়েছিলো (এইডা ডাহার একধাপ উপরের মিছা কথা)।
আব্বু: কানের কাছে ঘ্যানর ঘ্যানর করিস নাতো।
আর কোন কথা না বলে আমি তখন মুখটা কালো করে আমাদের দোকান থেকে বের হয়ে গেলাম। এমন সময় শুনি আব্বু পিছন থেকে ডাকছে 'ওই রাজু ওই???'
আমি: কি বলেন?
আব্বু: বিল যেন কতো?
আমি: ৫৫০ টাকা।
আমাকে আব্বু ১০০ টাকার ৭টা নোট দিল। আমি ১৫০ টাকা ফেরত দিলাম আব্বুকে।
আব্বু: নিয়ে যা পুরোটাই।
আমি: লাগবে না এতো টাকা।
আব্বু: থাব্রা মাইরা দাঁত ফালাইয়া দিমু। বজ্জাত পুলা। টাকা দিছি নিয়া সামনে থেইকা দূর হ।
একটা মুচকি হাসি দিয়ে পুরো টাকাটাই পকেটে ভরে আব্বুর দিকে তাকালাম তার অনুভুতি দেখতে। কোনো অনুভুতি দেখলাম না।
সামনের দিকে হাঁটা ধরলাম। ৫ সেকেন্ড পর আবার আব্বুর দিকে তাকালাম। দেখলাম উনি এখন মুচকি হাসছেন। আমার তাকানো দেখে অপ্রস্তুত হয়ে বললো 'এখনও যাস নাই?'
আমি: যাইতেছি তো।
এইভাবেই চলছে আমাদের মধ্যবিত্ত জীবন। আমার বয়সী ৯৫% ছেলের একই অভিজ্ঞতা আছে আমার বিশ্বাস। মুখ কালো করে বাবার কাছে টাকা চাওয়া অতঃপর বাবার শত কষ্টের টাকা ছেলেকে দেয়া ছেলের মুখের হাসির জন্য।
লেখক: মেহেদি হাসান রাজু ।