মেয়ের পড়াশোনায় মন নেই। পড়তে বসলেই শুধু ফাঁকিবাজি। স্কুল থেকে দেওয়া হোমওয়ার্ক রোজ অসম্পূর্ণ, বকাঝকা, শাস্তি। কিছুতেই কিছু হয় না। মেয়ের জন্য চিন্তায় চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে চিনের জি লুয়াংয়ের। পড়াশোনায় মেয়ের মন ফেরাতে আকাশপাতাল ভাবনাচিন্তা করেই চলেছেন গুইঝো প্রদেশের এই ব্যক্তি।
শেষপর্যন্ত একটা উপায় পেলেন৷ বাড়ির কুকুর ফান্টুয়ানকে দিলেন ট্রেনিং৷ সাদা চারপেয়ের জন্য প্রশিক্ষক রেখে শেখালেন নজরদারির পাঠ৷ বোঝালেন, বাড়ির মেয়েটার উপর কীভাবে নজর রাখতে হবে৷ তাতেই বাজিমাত৷ জি লুয়াং বলছেন, ‘প্রথমে আমি ভেবেছিলাম বাড়ির নিরাপত্তারক্ষীকে বাড়তি খাবার দিয়ে ওকেই বলব, মেয়েকে নজর রাখতে৷ কিন্তু পরে মনে হল, মেয়ে তো অত ছোটও নেই যে এর নজর গলেও ফাঁকি দেবে না৷ তখন মনে পড়ল ফান্টুয়ানের কথা৷ ভাবলাম, ওকেই ট্রেনিং দিই৷ ওকেই নজরদারির কাজে লাগাব।’
যেমন ভাবা, তেমন কাজ। এমনিতেই গৃহপালিত পশুদের মধ্যে কুকুর সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিমান৷ গবেষণা বলে, তাদের বুদ্ধির ধার মানুষের থেকে সামান্য কম৷ অর্থাৎ অন্য সব পশুর মধ্যে বুদ্ধির দৌড়ে কুকুর সবাইকে পিছনে ফেলে দেয়৷ তাই পোষ্যকে যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে মেয়ের নজরদারিতে বহাল করলেন জি লুয়াং৷ তারপর পরিস্থিতির আমূল বদল।
রোজ হোমওয়ার্কের সময়ে লুয়াংয়ের মেয়ের টেবিলের উপর দু’পা তুলে দাঁড়িয়ে পড়ে ফান্টুয়ান৷ ঠায় তার দিকে তাকিয়ে থাকে৷ হাবেভাবে মোটেই নজরদারির ইঙ্গিত নেই৷ বরং ভাবখানা এমন – আমিও একটুআধটু পড়তে চাই তোমার সঙ্গে!
মেয়েও বেশ খুশি৷ রোজ রোজ পড়ার টেবিলে এমন এক সঙ্গী পেয়ে হোমওয়ার্ক তার শেষ হয়ে যাচ্ছে দ্রুত৷ সে বলছে, ‘হোমওয়ার্ক করতে আর তেমন বোর লাগছে না৷ ওর উপস্থিতিতে মনে হচ্ছে, ক্লাসে বসে বন্ধুর সঙ্গেই পড়াশোনা করছি৷’ এই না হলে বাবার বুদ্ধি।