রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১০:০৫:৫৯

রহমান

রহমান

পাঠকই লেখক ডেস্ক : আমার ভাতিজি ইতির বিয়ে ঠিক করেছে ওর বাবা। কিন্তু সে এখন বিয়ে করতে রাজি না। ইতি আমার কথা ফেলতে পারবেনা বলেই আমার বড় বোনসহ আমার ডাক পড়ল। জুম্মার নামাজ আদায় করে খাওয়া শেষ করে আমিই শুরু করলাম তবে......

আমি ইতির চোখ দেখে পরিষ্কার বুঝতে পারলাম যে সে অনিচ্ছা প্রচন্ড সত্ত্বেও শুধু আমার সম্মান রক্ষার জন্য হাঁ বললো। একটি ভাংগা লাগা বিয়ে আমি জোড়া দিতে পারার জন্য আনান্দে সিজান (আমার ভাই ও ইতির আব্বু) আল হামদুলিল্লাহ বলে আনন্দিত হয়ে আবার অধিকতর নিশ্চয়তার জন্য ইতিকে পুনরায় জিজ্ঞাসা করলো..... নাকি তোমার স্যার আব্বুর (এই ভায়ের মেয়েরা আমায় ছোট বেলায় আব্বু বলে বুদ্ধি হবার পর স্যার আব্বু বলো) মুখের দিকে তাকিয়ে ইতিবাচব কিছু বলছো?

আমি ইতির চোখের দিকে তাকালাম সে সত্যিই হাঁ বললো। আমি ইতি ও নিতুকে নিয়ে বাজারে গেলাম আম, কাঠাঁল, আমড়া কিনতে আনলাম (ইতি রোজা ছিল)। বাসায় এসে আরার ইতির আব্বু ফোন পেলাম মেজভাই সব ঠিক আছে তো? আমি পুনরায় দৃঢ় কণ্ঠে বললাম হাঁ তুই এগিয়ে যা (বর পক্ষের কাছে কনের সম্মতিসূচক কথা জানাতে)।

আমরা ১৬ বছরের ইতিকে অন্য একটি ছেলের সাথে সম্পর্ক রাখার অপরাধে বিয়ে দিতে চলেছি। বরের বয়স ২৮/২৯ হবে। সবার মাঝে একটা উৎসব উৎসব ভাব।

আমি ভুলটি এ জাগাতে করে ফেললাম, ওর সাথে সম্পর্ক থাকা ছেলেটিকে ফোন দিতে বললাম। সাথে সাথে শুধু ফোনই নয় ৬ বছর পর ইতিকে তারা বউ করে নেবে মর্মে অভিভাবেকর নিশ্চয়তা। (এমন নিশ্চয়তা ইতির আব্বুও বিশ্বাস করে) আমি দ্রুত ইতির বাবাকে ফোন দিলাম সবকিছু বললাম। করনীয় বর পক্ষের কাছে রাত্রে বললাম ইতি ছোট কাদাঁকাটি করছে আরো পড়তে চাচ্ছে........ ইত্যাদি বলে ক্ষমা চেয়ে আসলাম। (আর্থিক অবস্থায় বরপেক্ষর তুলনায় আমরা ফকির)।

তারা (বরপক্ষ) সত্যিই অমায়িক ব্যবহার করে জানিয়ে দিলেন সত্যিই তারা জাত ভদ্র। তখন আমি মনে মনে করলাম সত্যিই ইতি একটা ভুল করলো। আমার ভুলের জন্য একটা হওয়া বিয়ে ভেঙ্গে সবাই হতাশ হলো।

রাত ১২টার ট্রেনে ফিরে এলাম। রাত ৩.৩৫ টায় স্ত্রীকে বললাম। সে বললো সবাই তোমাকে বিয়ে ভাঙ্গার দোষ দেবে। আমি বিশ্বাস করলাম না। দুপুর ১২ টার দিকে ইতির আব্বুকে সান্ত্বনা দেবার জন্য ফোন দিলাম।

বড়ই কষ্ট পেলাম সে যখন বললো, তুমি যে আমার ক্ষতি করেছ, এর জন্য তোমাকে সারা জীবন ক্ষমা করবো না। ইতির যুক্তি হলো-
১. সে অনার্স শেষ করবে, তারপর বিয়ে করবে।
২. বিয়ের কথাবার্তা পাকা হবার আগে তার মতামত নেয়া হয়নি।
৩. আগের ভুলগুলি বুঝতে পারে। (যা এরইমধ্যে সে প্রমাণ করেছে)
৪. ছেলের ৬ বছর পর বিয়ের প্রতিশ্রুতি আমি, ইতির বাবা ও মা সকলেই বিশ্বাস করে।

আমার কথা হলো আমি কি বিয়ে ভেঙ্গেছি? ৬ বছর পর ইতি হবে ২২/২৩, ৬ বছর পর প্রতিশ্রুত বিয়ে যদি নাও হয় তবে আমার ইতি মামনির বিয়ে কি আটকে থাকবে? আমি কি কোন দোষ করেছি? আমি মনে করি এই ভুলটা আল্লাহ আমায় দিয়ে করিয়ে ধ্রুব সত্যটাকে সবার সামনে তুলে এনেছেন। আমি বিয়ে বিয়ে ভাঙ্গার কে? কে? কে? নামগুলি কাল্পনিক ঘটনা সত্য।

লেখক- সিরাজ রহমান
 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে