রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১০:১২:৪৮

পরাজয় কার, দন্ধ না ভালােবাসার?

পরাজয় কার, দন্ধ না ভালােবাসার?

পাঠকই লেখক ডেস্ক : শেষ মুহূর্তেও আমি মিথিলাকে নিষেধ করেছিলাম। বলেছিলাম আরেকটি বার ভাবতে। মিথিলা শোনেনি। আমি যে চাচ্ছিলাম না তা না, আমিও চেয়েছিলাম সব কিছু ছেড়ে সে আমার কাছে চলে আসুক।

আমার কাছে সে আর যা থাকুক তার বাবার পরিবারের মত স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারবেনা, মানে আমি রাখতে পারবোনা। কিন্তু সে শোনেনি, তার নাকি আমাকে হলেই চলবে ধন সম্পদ প্রাচুর্য তার লাগবেনা!

পাড়ায় এক বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল সে রাতে, বিয়ে বাড়ি থেকে আমাকে তলব করে ফোনে। আমি বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত হতেই আমাকে বলে উঠে,

চল, আমরা পালিয়ে যায়।
কি?
হ্যাঁ, আমার পরিবার এমনিতে কখনই তোমার সাথে আমাকে বিয়ে দিবেনা, পালানো ছাড়া উপায় নাই।
এ বাড়িতে বিয়ে হচ্ছে দেখে হিংসা হচ্ছে? আমাকে বিয়ে করলে খাবে কি?
তোমার ঠাট্টা তামাশা রাখো, আমি রেডি হয়েই এসেছি তুমিও রেডি হয়ে চলে আসো।
হুমম, সে রাতেই মিথিলার হাত ধরে পালিয়ে ছিলাম। আমার এক প্রবাসী বন্ধুর কিছু টাকা আমার কাছে ছিল, সে বন্ধুকে ফোন দিয়ে জানলাম তার টাকা গুলো খরচ করলে সমস্যা হবে কিনা? বন্ধু আমার কারণ টা জানতে চাইলে সত্যি টা বললাম তাকে। বন্ধু ওপ্রান্ত থেকে চিৎকার করে বলে, কি খুশির খবর দিলি রে দোস্ত, জলদি পালা আর আমাদের সিরিয়াল দে তাড়াতাড়ি, আর এ টাকা গুলো তোর বিয়েতে আমার উপহার, জলদি পালা, লাগলে আরও পাঠাবো।

আনন্দে চোখে পানি এসে গেল! বন্ধু গুলো এতো নিষ্ঠুর রকমের ভাল হয় কেন?

মিথিলার কাছেও কিছু ছিল, দুজনের যা ছিলো তা নিয়েই নিরুদ্দেশ হলাম। পরদিন ভোরে জানাজানি হয়ে গেছে ব্যপার টা। এতক্ষণে বাজারে কিংবা মোড়ের দোকান গুলোতে আমাদের নিয়ে গোলটেবিল আলোচনা চালু হয়ে গেছে, অন্য কারও বেলায় হলে হয়তো ওসব আলোচনায় আমিও থাকতাম। এলাকায় ফোন করে খবর নিলাম। মিথিলার বাবা, পরিবার কেউ মেনে নিবেনা এ বিয়ে। এমনকি মিথিলার ছায়াও না মাড়ানোর কথা বলেছেন তারা। আমার পরিবার মেনে নিবে, এরকম নামীদামি পয়সা ওয়ালা পরিবারে বিয়ে করানো আমার বাবা হয়তো স্বপ্নে দেখতেন। সন্দ্বীপ থেকে চট্টগ্রামে গিয়েই আমরা বিয়ে করেছিলাম আগে, তারপর এক বন্ধুর আত্মীয়ের বাসায় উঠলাম। এসব কাজে বন্ধু গুলো কেন জানি অনেক দয়ালু হয়ে কাজ করে!

দিন দশেক পরে ফিরে এলাম আমরা, না এসে উপায় নাই টাকা পয়সা প্রায় শেষের দিকে। মা বাবা আমার দিকে তাকিয়ে হোক কিংবা মিথিলা দের অর্থ সম্পত্তির কথা ভেবেই হোক আমাদের বরণ করে নিলেন। মনে মনে হয়তো তারা ভেবেছেন, মেয়ের পরিবার একসময় মেনে নিবে, তখন দেনা পাওনা হিসাব করা যাবে!

বড় ভাবির রুমটা আমাদের ছেড়ে দিলেন। আমাদের ঘরে খাট নেই, এখনো চৌকি ই সম্বল, মিথিলার বাসার কাজের লোকেরা ও খাটে থাকে! মিথিলার কাছে জানতে চেয়েছিলাম

তোমার তো থাকতে কষ্ট হবে চৌকিতে, জীবনে তো কখনও তো থাকো নাই।
তুমি পাশে থাকলেই হবে আমার, সব কষ্ট মাথা পেতে নিব। ভাবি নাস্তা নিয়ে এলেন আমাদের জন্য, নাস্তা বলতে আমাদের ঘরে সকালে চাল ভাজা আর আর রং চা তৈরি হয়! ভাবীর হাতে চায়ের কাপে চায়ের রং আজ অন্যরকম দেখাচ্ছে, নতুন বউয়ের সৌজন্যে আজ দুধ চায়ের আয়োজন হয়েছে, সাথে টোস্ট বিস্কুট ও রয়েছে।

পড়াশোনা বেশিদূর না আমার, ইন্টারমিডিয়েট পাশ, টুকটাক পোলাপাইন পড়াতাম। গ্রামে আর এসব করে বউ চালানো যায়না বড় চা সিগারেটের পয়সা হয়! প্রেমিকা থাকাকালীন মিথিলা সিগারেটের ব্যপারে কিছু বলেনি, বউ হতে না হতেই মানা করছে না খেতে। ছেড়ে দিবো বলেছি।
পাড়ার মাল্টিপারপাস এ একটা পোস্ট খালি হলে সেখানে যোগ দিলাম। অথচ মিথিলার বাবার ই নিজের একটা এরকম প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সমাজের বিচার সালিশ ও করে থাকেন, বলা যায় এলাকার মাথা। মিথিলা কে তারা মেয়ের খাতা থেকে বাদ দিয়েছেন! সেদিন মিথিলা মাকে খুব মিস করে কাঁদছিল, আমি বললাম ফোন করে কথা বলতে। মিথিলার কন্ঠ বুঝতে পেরেই ফোন কেটে দেয়, দ্বিতীয় বার করলে ধরে অনেক অপমান করে কথা শুনিয়ে আর কখনো ফোন করতে নিষেধ করে দেয়। এমনকি সেদিন মিথিলার ক্লাস ফাইভ পড়ুয়া ভাইকে একা পেয়ে বললাম,

তোমার আপু তোমাকে যেতে বলেছে। - আমার আপু নেই, আপুর সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই আর! এতটুকু পিচ্চি ও তার বোনের উপর নারাজ।

বিয়ের তিন মাস পর আমাদের প্রথম ঈদ ছিল। আমি সাতশো টাকায় মিথিলার জন্য একটা শাড়ি কিনলাম। এরচেয়ে কম দামে পাওয়া টা কঠিন। মিথিলা শাড়িটা দেখে কেঁদে দিলো! গত ঈদে যে জামাটা তার বাবা কিনে দিয়েছিল সেটা ছিল সাত হাজার টাকার। তবে সে কম দামের শাড়ির জন্য কাঁদেনি, কেদেছিলো আমার জন্য কিছু না কিনে তার জন্য কিনেছি বলে। মনে মনে একটা প্রতিজ্ঞা করলাম যে করেই হোক আগামী ঈদে মিথিলার জীবনের সবচেয়ে দামী শাড়ি টা কিনে দিব।

আগে দু পা ছিলাম যা খুশি করতে পারতাম, এখন চার পা চাইলে পারিনা। মিথিলার পরিবার না মানায় আমার পরিবারে ও তাকে টুকটাক কথা শুনতে হচ্ছে। শুধু তাদের মুখ বন্ধ করতেই অমানুষিক পরিশ্রম করে সংসারে টাকা পয়সা দিচ্ছি।

সেদিন ভর দুপুরে মিথিলা ফোন করে তাড়াতাড়ি বাড়ি আসতে বললো, দৌড়াতে দৌড়াতে আসলাম, হাফাচ্ছিলাম, কিন্তু মিথিলা যে খবরটা দিল আমার হাসফাঁস যেন খুশিতে আরও বেড়ে গেল। মুখ দিয়ে কথা আসছিল না শুধু মিথিলা কে কোলে তুলে নাচতে ছিলাম।

এমন খুশির খবর মেয়েরা তাদের মায়ের সাথে শেয়ার করে আগে, মিথিলার মা থেকেও নেই। আমার জন্য সে আজ মা বাবা সহ সব আপনজন হারিয়েছে। অনেক খারাপ লাগে মিথিলার জন্য, তাই চেষ্টা করি ওকে ওসব ভুলিয়ে রাখতে।

আমাদের পাশে আমার চাচাতো ভাইয়ের ঘর, চাচাতো ভাবি টা ও অন্তসত্তা। সে ভাবিটাকে দেখতে সকালে ভাবীর ভাই আসে তো বিকালে বাবা আসে, আর ভাবীর বোন দুটো তো পালাক্রমে এসে ভাবীর সাথেই থাকে। মিথিলার ও বাবা, ভাই, বোন আছে, আছে একদল কাজিন কিন্তু এখন আর তারা কেউই মিথিলা কে তাদের মনে করেনা। জানালা দিয়ে মিথিলা সেই ভাবীর আপনজনদের আসা যাওয়া দেখে আর দীর্ঘশ্বাস ফেলে, কখনো ফোটা ফোটা জল! আমি এগিয়ে গিয়ে জলে কণা গুলো মুছে দিই কিছু বলতে পারিনা।

অফিসের সবাই মিলে আমরা মাসে এক হাজার টাকা করে জমা রাখছি এখন, প্রতি মাসে একজন পুরো টাকা টা নেয় লটারি করে। প্রথম মাসেই আমার নাম উঠে আমি না নিয়ে রাজিব কে দিয়ে দিলাম। এ টাকা গুলো নিয়ে আমার একটা প্ল্যান আছে! আগামী ঈদে মিথিলা আর আমাদের বাচ্চার জন্য শপিং করবো।

মিথিলার ফোন পেয়ে মাছ বাজারের দিকে গেলাম। বড় মাছের মাথা দিয়ে শিমের বিচি খেতে ইচ্ছা হয়েছে আজ তার। বড়সর একটা মাছ পেয়ে ও গেলাম। সাড়ে চারশ দাম চাইলেন, আমি সাড়ে তিনশো বলে দাড়িয়ে আছি ভাবলাম হয়তো চারশ দিয়ে নিতেই পারবো। আমাকে মাছটি দর কষাকষি করতে দেখে মিথিলার চাচাতো ভাই এসে মাছটি যা চাইলো তা দিয়ে নিয়ে নিল! অথচ সে মাছ কিনেই ফেলেছে আগে শুধু আমি যাতে না নিতে পারি এজন্য সে এ কান্ড টি করলো।

বাড়ি এসে মিথিলা কে বললাম ব্যপার টা। আমাকে স্বান্তনা দিয়ে বলে। আজ খেতে হবে এমন তো না! কাল নিয়ে এসো, কাল রান্না করবো। দেখতে দেখতে আমাদের পিতামাতা হবার সময় ঘনিয়ে আসতে থাকে। আমি মাঝেমধ্যে মিথিলার পেটে মাথা রেখে আলতো করে চোঁখ বন্ধ করে শুয়ে থাকি, মিথিলা বলে উঠে
কি করো ওখানে?
গান শুনি, আমার বাবু গান শুনাচ্ছে আমাকে।
এহহ! তোমার বাবু?
তো কার?
আমার, আচ্ছা যাও আমাদের দুজনের।
হুমম!
আচ্ছা বাবু কি গান গাইছে?
''আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান '' এই গানটি!
হ! তোমারে কইছে! বাবু গাইছে " মাগো মা, ওগো মা আমারে বানাইলা তুমি দেওয়ানা " এই গানটি!

বাবুকে নিয়ে আমাদের মাঝে খুনসুটি চলতে থাকে। অভাবে থাকলেও আমরা সুখে দিন কাটাচ্ছিলাম। মিথিলার ডেলিভারীর ডেট ঘনিয়ে আসতে লাগলো। খুশির পাশাপাশি দুঃচিন্তা ও হতে লাগলো। টাকা পয়সা হাতে রাখা দরকার, মালিক কে বলে রেখেছি দু মাসের টাকা অগ্রিম দেয়ার জন্য, দিবেন বলেছেন। মোবাইল বেজে উঠতেই দেখি বিদেশী কল, রাহাত ছাড়া আর কেউ না। যে আমাকে বিয়ের সময় টাকা দিয়ে সাহায্য করেছিল। প্রায় সে ফোন করে খোঁজ খবর নেয় আমাদের। আজ জানালো আমার একাউন্টে বিশ হাজার টাকা পাঠিয়েছে, কি জন্য বলেনি, মেসেজ দিয়ে জানাবে বলেছে। একটু পর মোবাইলে মেসেজ এলো একটা, রাহাত পাঠিয়েছে। দোস্ত, টাকাটা ভাবীর ডেলিভারীর সময় লাগলে খরচ করিস, শোধের ব্যপারে চিন্তা করিস না যখন পারিস শোধ দিয়ে দিবি। লজ্জা বা সংকোচ করিসনে। চোখের কোণায় বোধহয় কিছু জল ধড়ফড় করছে বের হবার জন্য। কিছু বন্ধু আছে অন্যরকম। এরা শুধু আপনাকে অবাক করে দিবে।

দেখতে দেখতে মিথিলার ডেলিভারীর সময় ঘনিয়ে এলো। প্রথম বার বলে বেচারি অনেক ভয়ে আছে। আমি সাহস দিতে থাকি। আমাকে বলতে থাকে, যদি বাচ্চা প্রসবের সময় ও মারা যায় আমি যেন আরেক টা বিয়ে করি এবং তা যেন আমার বাবা মায়ের পছন্দমত করি, বাচ্চা টা কে যেন ভাল একটা পরিবার দেখে দত্তক দিয়ে দিই । এসব বলার সময় আমি শুধু ওর মুখটা চেপে ধরতাম আর নিষেধ করতাম যেন আর না বলে।

রাত্রি প্রায় শেষের দিকে, মিথিলার প্রসব ব্যথা শুরু হয়। আমাদের সন্দ্বীপে অনেক বড় লোক, অনেক পয়সা ওয়ালা মানুষ থাকলেও তারা পারেনি একটা ভাল মানের হাসপাতাল গড়ে তুলতে। এতবড় একটা দ্বীপে নাই একজন গাইনোকলজিস্ট। পরিদর্শিকা, ধাত্রী ডেকে বাচ্চা প্রসব করাতে হয়। সব চেষ্টা যখন বৃথা তখন নদীপথে দৌড়াতে হয় চট্টগ্রামের দিকে।

মিথিলাকে চট্টগ্রামে নেয়ার ব্যবস্থা হলো। এত কিছু ঘটে যাচ্ছে মিথিলার পরিবারের কেউ উকি দিয়ে দেখতেও আসেনি। অনেক কষ্টে মিথিলা কে নিয়ে চট্টগ্রামে পৌছলাম। ডাক্তার সরাসরি লেবার ওটিতে নিয়ে গেল। আমরা অপেক্ষায় ছিলাম। চিন্তিত পায়চারী করতে লাগলাম। একসময় আমাদের অপেক্ষার অবসান ঘটলো। আমার মিথিলা সবকিছুর ঊর্ধ্বে চলে গিয়ে আমাদের সব অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে দিয়ে গেল। সাদা কাপড়ে ঢাকা মিথিলা কে দেখে আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না আমার সাথে সে আর কথা বলবেনা কখনো। আধা খোলা চোখ দুটি মনে হচ্ছে আমাকে বলছে - আমাদের বাবু টা কে আমার সাথে নিয়ে যাচ্ছি, তুমি ভালো থেকো.....

আমাদের ছোট্ট পরীটা কি সুন্দর, লাল টুকটুকে মুখ, তুলতুলে পা দুটি। পরী টা যেন আমাকে বলছে - যে পৃথিবী আমার মা কে স্বাভাবিক ভাবে মেনে নেয়নি, যে পৃথিবী তে ভালবাসা দম্ভের কাছে হেরে যায় সে পৃথিবী তে আমি থাকবো না। আমি আম্মুর সাথে চলে যাচ্ছি, তুমি ভালো থেকো বাবা ...

মিথিলার অনেকেই ছিল চট্টগ্রাম শহরে, কেউ আসেনি তাকে, প্রসব যন্ত্রণা তে সে মাগো মাগো করে মা কে ডেকেছে অনেক, দম্ভের দেয়াল সে চিৎকার তার মায়ের কানে পৌছাতে দেয়নি। মিথিলা চলে গিয়ে তাদের মুক্তি দিয়ে গেছে অপমানের গ্লানি থেকে। অসহায় আমি একা একা হাটি, বসে থাকি নির্জনে। দূর থেকে দেখি মানুষ ছুটে চলছে রুটিন মাফিক সবাই ব্যস্ত ঈদের কেনাকাটায় । রাজিব কে দেখলাম আমার দিকে আসতে। হাতে কিছু টাকা। হুম, এ সেই টাকা টা যেটা আমি আগে নেয়নি ঈদের আগে নিব বলে! আমার মিথিলার জন্য ঈদের শাড়ি আর বাবুর জন্য জামা কিনবো বলে! এখন আমি কি করবো এ টাকা দিয়ে। রাজিব নিশ্চুপ, আমার কাধেঁ হাত দিয়ে পাশে বসে পড়লো। তার হাত এগিয়ে আসছে আমার চোখ থেকে গড়িয়ে পড়া অশ্রু গুলো আটকে দিতে .... আচ্ছা একটা কথার উত্তর দিবেন আপনারা? কে পরাজিত এখানে, দম্ভ না ভালবাসা?
(একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা অনুলিখন)
লেখক- Jahedul Alam (Jahed)

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে