বুধবার, ০৩ জুলাই, ২০১৯, ০৫:৩১:৩৮

তিনি ৪৩ বছর ধরে লড়ছেন ৫ পয়সা চুরির মামলায়!

তিনি ৪৩ বছর ধরে লড়ছেন ৫ পয়সা চুরির মামলায়!

বিচিত্র জগৎ ডেস্ক: সত্যিই এমন কথা শুনে বিস্মিত না হয়ে পারা যাবে না। এক ব্যক্তি ৪৩ বছর ধরে লড়ছেন মাত্র ৫ পয়সা চুরির মামলায়! সত্যিই বিস্ময়কর ঘটনা! মাত্র ৫ পয়সা চুরির অভিযোগে চাকরি খুইয়ে আবার দীর্ঘ ৪৩ বছর ধরে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ভারতের দিল্লির বাসিন্দা ৭৩ বছরের বৃদ্ধ রণবীর সিং যাদব।

যে পয়সার জন্য তাকে দীর্ঘদিন লড়তে হচ্ছে সেই ৫ পয়সাও অচল হয়ে গেছে অনেক আগেই। ভারতে বছরের পর বছর ধরে মামলা চলার নজির রয়েছে অনেক। তবে রণবীর সিংয়ের মামলাটি যেনো আগের সব নজিরকে ছাপিয়ে গেছে সেটি নিশ্চিত করে বলা যায়।

সালটা ছিল ১৯৭৩।  সেই ৪৩ বছর আগের কথা। আজকের ৭৩-এর বৃদ্ধ রণবীর সিং যাদব তখন দিল্লি ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের (ডিটিসি) তরুণ বাস কন্ডাক্টর ছিলেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠেছিল, এক নারী যাত্রীর কাছ থেকে নাকি তিনি টিকিট বাবদ ৫ পয়সা বেশি নিয়েছিলেন।  ওই টিকিটের দাম ছিল ১০ পয়সা।  রণবীর ওই নারীর কাছ থেকে ১৫ পয়সা নিয়ে ১০ পয়সার টিকিট দিয়েছিলেন তাকে।  ৫ পয়সা নাকি নিজের পকেটে রেখে দেন রণবীর সিং যাদব।

ওই নারী ৫ পয়সা বেশি নেওয়ার জন্য ডিটিসি-তে অভিযোগ করেন।  অভ্যন্তরীণ তদন্তে রণবীর দোষীও প্রমাণিত হন। ১৯৭৬ সালে তাকে চাকরি হতে বরখাস্ত করা হয়।  চাকরি চলে যাওয়ায় ডিটিসি’র বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন রণবীর সিং যাদব। তারপর শুরু হয় শুনানি।

এভাবে দীর্ঘ ৪৩ বছর কেটে গেছে। যুবক রণবীর এখন বৃদ্ধ মানুষে পরিণত হয়েছেন। ৫ পয়সার মামলা চালাতে গিয়ে রণবীর সিং যাদবের খরচ হয়ে গেছে এ পর্যন্ত ৪৭ হাজার টাকা।

কিন্তু রণবীর সিং যাদব ১৯৯০ সালে শ্রমিক আদালতে মামলা জিতে যান।  শ্রমিক আদালত জানায়, রণবীরকে বরখাস্ত ছিল বেআইনি। আদালতের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চতর আদালতে যায় ডিটিসি।  দিল্লি হাইকোর্টও মামলাটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে খারিজ করে দেয় এবং রণবীরকে ৩০ হাজার টাকা, গ্র্যাচুইটি বাবদ ১ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা এবং প্রভিডেন্ট ফান্ড বাবদ ১ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা দেওয়ার জন্য ডিটিসিকে নির্দেশ দেয়।  তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো ডিটিসি ৫ পয়সা আদায় করার জন্য আবার মামলা করে!

বৃদ্ধ রণবীর সিং যাদব বলেছেন, ‘৫ পয়সা বা ২ পয়সা বড় নয়, তবে আমার প্রতি যে অবিচার করা হয়েছে, তা কয়েক লক্ষ টাকার সমান। আমার নাতি-নাতনিরা মনে করে, আমি চোর।  এভাবে কী বাঁচা যায়?’ জানা গেছে এই মামলাটির পরবর্তী শুনানির সঠিক তারিখ জানা যায়নি।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে