পাঠকই লেখক ডেস্ক : শাওনের ফোন সেই সকাল থেকে বন্ধ। লাবণ্যে কখন থেকে ফোনে ট্রাই করেই যাচ্ছে আর ওপাশ থেকে বেরশিক রোবটিক মহিলার কন্ঠ শোনা যাচ্ছে।
লাবণ্যের এখন খুব বেশি কষ্ট হচ্ছে..কেন যে ছেলেটা এমন করে? কাঁদতে কাঁদতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিল সে বুঝতেই পারেনি..নোকিয়ার সেই চিরচেনা রিংটোনের শব্দে ঘুমটা ভেঙ্গ গেল। ফোনটা হাতে নিয়েই দেখে শাওন ফোন করেছে।
লাবণ্যের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে.. মনে মনে ভাবছে যে আজ গাঁধাটাকে খুব করে বকে দিবে..তাই সে কল রিসিভ করেই চুপ করে রইল ওপাশ থেকে..
: হ্যালো
-হুম!
: হ্যালো ম্যাম
-হুম!
: শুধু হুম হুম করছো কেন? কিছু বলো?
-কোথায় ছিলেন?
: ওওও এই কথা! স্যরি আমার ফোনের ব্যাটারি ডেড ছিলো আর লোড শেডিং এর জন্য চার্জ দিতে পারিনি..প্লিজ রাগ করোনা লক্ষ্নী বউ আমার
- এহহ সকাল থেকে খবর নেই কিছু নেই আর উনি আসছে এখন বউ বউ ডাকতে! কে তোমার বউ? আমি অবিবাহিত কারোও বউ না..
: এতো অভিমান! আচ্ছা ব্যাটারি যদি ডেড থাকে সেটা কি আমার দোষ তুমিই বলো!
-থাক আর বলতে হবেনা। খাইছো?
:হুম। তুমি?
-নাহ
:কেন?
-ইচ্ছে করছিলো না তাই
:এখন ইচ্ছে করছে
-হুম : তাহলে এখন ফোন রেখে খেতে যাও
-নাহ!
:না কেন?
-তোমার সাথে কথা বলবো
:হুম খেয়ে এসে কথা বলো
-নাহ
:কেন!
-খেতে গেলে এই সময়টুকু তোমার সাথে কথা বলাটা মিস হয়ে যাবে আর এটা আমি চাইনা..বুঝলা গাঁধা? হিহি
:হুম বুঝলাম!!
-কি বুঝলে
:এটাই যে তুমি একটা পাগলী
-হুম আমিতো পাগল আমার শাহরুখ খানের জন্য
:শাহরুখের বিয়ে হয়ে গেছে অনেক আগে। বেহায়া মেয়ে শাখরুখ-গৌরীর সংসার ভাঙ্গতে চাও ..
- হিহিহি আরে গাঁধা আমিতো আমার শাহরুখের জন্য পাগল
:এহহ কি দরদ..
-কি খুব হিংসে হচ্ছে? হিহি
:না না হিংসে হবে কেন..আমার তো তোমার শাহরুখ খানের কথা ভেবে হাসি পাচ্ছে বেচারার কপালে যে কি লিখা আছে..
-এই ভালো হচ্ছেনা কিন্তু বলে দিলাম।
:হাহাহা বেচারা!!
-এই যে শোনো এতো খুশি হওয়ার কিছু নেই কারণ বেচারা তুমিই কিনা।
..হিহি করেই লাবণ্যে তার লাবণ্যে ভরা হাসিতে ফেটে পড়লো আর ওপাশে শাওন মুচকি মুচকি হাসছে আর ভাবছে মেয়েটা আসলেই পাগল...
১০বছর পর..
শাওন কম্বলের ভিতর থেকে কচ্ছপের মত মাথা একটু বের করেই দেখে যে এক রাগত নারী তার সামনে খুঁনতি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আর সমানে বকেই চলছে..দুরু দুরু বুকে সে রাগত নারীটির দিকে তাকায় আর তার রাগী রাগী মুখটা দেখে হঠাত্ হেসে ফেলে..
-এই এই তুমি হাসছো কেন?
:কেন..বিয়ের পর কি হাসতে মানা! বলেই আবার হেসে দেয়
-এমন দাঁত কেলিয়ে গাঁ জ্বালানো হাসি দিবানা বলে দিলাম :-@
:ওওও কিন্তু আমিতো দাঁত না কেলিয়ে হাসতে পারিনা..বলেই শাওন আবার হেসে ফেললো
-এই এই ছেলে তোমাকে এমন করে দাঁত কে কেলিয়ে হাসতে আমি নিষেধ করলাম না। আরেক আর হাসলেই খুনতি দিয়ে চোখ গেঁলে দিবো..আর হাঁতুরি দিয়ে দাঁত ভেঙ্গে দিবো। বুঝলা?
: এ কেমন শাস্তি জর্জ সাহেবা। এই অধমের প্রতি কি আপনার একটুও দয়া হয়না? শাওনের কথা শুনে কিছু বলতে গিয়েই লাবণ্যে ফিক করে হেসে দিলো আর তার হাসির সাথে আরোও একটি হাসির আওয়াজ যোগ হলো.. পুরোই ঘরেই এখন শাওন-লাবণ্যের হাসির আর খুনসুটির আওয়াজ..
লেখক: ছন্নছাড়া রাজপুত্র
বি:দ্র: সম্পাদক দায়ী নয়
২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি