পীদিম
পাঠকই লেখক ডেস্ক: দুদিন আগে রাত ৯ টার দিকে বাসায় ফিরছিলাম। বাসে মুখোমুখি বসা ছিল আমার এক প্রাক্তন ছাত্র। অনেকদিন পর দেখা হওয়ায় দুজনেরই খুব ভাল লাগছিল। ও অনেকটা ফরমাল টাইপ আগে থেকেই। এখন মাত্রা আরো বেড়েছে দেখছি। দুজনেই ভাঙ্গা ভাঙ্গা, টুকরা টুকরা কথা বলছিলাম। এই যেমন কেমন আছো? কোন সেমিস্টার চলছে? ক্যাম্পাস লাইফ কেমন চলছে? ওর ও উত্তরগুলো ছিল কাটা কাটা। ভাল। ৫ম সেমিস্টার। ক্যাম্পাস লাইফ ভালই কাটছে স্যার। আপনার পরিবারের সবাই ভলোতো? আমি বললাম আলহামদুলিল্লাহ্।
এসব কথাবার্তা কিছুক্ষণ চলল। হঠাৎ আমি প্রসঙ্গ ঘুরালাম। এত রাতে ব্যাগ পিঠে নাইটে ক্লাস হয় নাকি? আমার প্রশ্নের জবাবে ও যা বলল তাতে আমি এতটাই খুশি হয়েছি যে হয়তো ও খুব ভাল একটা চাকরি পেলেও আমি এতটা খুশি হতাম না। ধরি ছাত্রটির নাম রাহাত। রাহাত একটি স্বনামধন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। ওদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ছেলেগুলো দিনে চায়ের দোকানে কাজ করে, আরো কিছু পথ শিশুদেরকে ওরা সন্ধ্যার পর পড়ায়। স্কুল সিস্টেমের মতো। ওদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ব্যাচ বিভিন্ন ক্লাস ভাগ করে নিয়ে ওরা পড়ায়। বলল এদের অনেকেই স্যার বেশ মেধাবি। দেখি ওদের জন্য কি করা যায়। ক্যাম্পাসের এ উদ্যোগটি আমার ভাল লেগেছে তাই নিজের পড়াশুনার পাশাপাশি একটু সসময় দেই।
সত্যি কী মহৎ উদ্যোগ!
রাহাত একসময় আমার খুব ঘনিষ্ঠ ছাত্র ছিল। ও পসিটিভ মাইন্ডেট একজন মানুষ। ওর মতো আমিও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া অবস্থায় এরূপ কাজ করতাম। আমি রাহাতের জীবনের সাফল্য কামনা করি।
শিক্ষক হিসেবে আমরা শুধু ছাত্রছাত্রীদের A+ ই পাওয়াচ্ছি না। রাহাতদের মতো মানুষও ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করছি। যারা নিজেরা শিক্ষার আলোয় প্রজ্বলিত হবে আর আলো জ্বালাবে সম্ভাবনাময় বাংলাদেশের। জ্বালাবে আলো সেই অন্ধকার ঘরে যে আলোটি হবে আমাদের শেষ অন্ধকার দূর করার পীদিম।
বেঁচে থাকুক সম্ভাবনা জেগে থাকুক আলো।
২৮ ডিসেম্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস
�