পাঠকই লেখক ডেস্ক:
- এই নেইলপালিশ একটু কম দিতে পারো না?
- ওমা, কেন? আমার নেইলপালিশে তোমার কি সমস্যা?
- মারে, মা! যে বোটকা গন্ধ আসে নেইলপালিশের।
- আমি গেলাম।
- আরে, কই যায়? আমি তো এমনি বললাম।
- তাই?
- আচ্ছা, নখ নষ্ট হয়ে যাবে তো! এতো কড়া করে নেইলপালিশ নাই বা দিলে!
-আচ্ছা, আর দিবো না।
নিশাত কয়েকদিন নেইলপালিশ দেয়নি। এই কয়দিনে আমি কি একটা যেন ভীষণভাবে মিস করেছি! তার পাশে গিয়ে যেন কিছু একটার গন্ধ পাওয়ার চেষ্টা করতাম। কিন্তু পাই না। কি সেটা? কি? নেইলপালিশ?
হুম। নেইলপালিশ। লাল রংগের নেইলপালিশ। ছোটবেলায় শুনেছিলাম, লাল কাপড়ের পিছনে ষাড়ঁ দৌড়ায়। কিন্তু আমি দৌড়াচ্ছি নিশাতের লাল রংগের নেইলপালিশের পিছনে!
প্রচন্ড জ্বরেও প্যারাসিটামল খেয়ে আমার অসুখ সারে না। নিশাতের লাল নেইলপালিশ দেওয়া ঠান্ডা কোমল হাতটা আমার কপালে লাগানো চাই! থার্মোমিটার যতোই দেখাক না কেন-আমার জ্বর নেই। কিন্তু লাল নেইলপালিশ দেওয়া হাতটা আমার কপাল না ছুয়েঁ দেওয়া পর্যন্ত মনে একটা খুতঁখুতেঁ ভাব থেকে যায়;আমার জ্বর কমেনি!
- জ্বর গায়ে আসার কি দরকার ছিল?
- ডাক্তারের কাছে রোগী যায়, আর আমি আসি তোমার কাছে!
-ইসসসস! ঢং দেখো!
-ঢং? কোথায়?
-এই যে!
এর মধ্যে সে তার যাদু মাখা কোমল হাতখানা লাগিয়ে দিয়েছে আমার কপালে!
- আচ্ছা, নিশাত। মনে আছে সে কথাটা?
- কোন কথাটা?
- ওই যে, আমার বাম চোখের কর্ণিয়া এক সময় অকেজো হয়ে যাবে।
- হুম। (নিশাত তার মায়াবী চোখের মায়া নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে)
- তারপরে ডান চোখে এফেক্ট আসবে! আচ্ছা, আমি কি অন্ধ হয়ে যাবো?
- আচ্ছা, আমরা এগুলো বাদ দেই?
- আমাকেও হয়তো এক সময় নিজের জীবন থেকে বাদ দিয়ে দেবে।
- উফফফ! ফর গড সেক। আর আজেবাজে বলো না, প্লিজ!
- আচ্ছা, যাও আর বলবো না।
নিশাত এখন মোটামুটি স্বস্তি পাচ্ছে। সে আমার অন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা সইতে পারে না। আচ্ছা, যদি অন্ধ হয়ে যাই! নিশাতকে কিভাবে চিনে নেবো আমি? নিশ্চয়ই নেইলপালিশ দিয়ে।
লাল রঙের সেই নেইলপালিশের গন্ধ দিয়ে!
লেখক: সাইফুল ইসলাম রাসেল
বি:দ্র: সম্পাদক দায়ী নয়
২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসবি/বিএসএস