বিচিত্র জগৎ ডেস্ক : প্রতিদিন মানুষের তৈরি আবর্জনা ফেলা হয় নির্দিষ্ট ময়লার ভাগাড়ে। ভিনগ্রহের প্রাণীরাও ঠিক একই কাজ করছে! নিজেদের গ্রহের যা কিছু জঞ্জাল, তা ছুড়ে ফেলছে আমাদের সৌরজগতে। শুনতে অবাক লাগলেও এমন দাবি করেছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক আভি লোয়েব।
এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল: দ্য ফার্স্ট সাইন অব ইন্টেলিজেন্ট লাইফ বিয়ন্ড আর্থ নামে তার যে বইটি আপাতত প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে সেখানেই এমন অদ্ভুত দাবি তুলেছেন ওই অধ্যাপক। এই দাবিকে অকাট্য প্রমাণ করার জন্য অধ্যাপক লোয়েব তার বইতে ২০১৭ সালের এক মহাজাগতিক ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন। ন্যাশনাল অ্যারোনটিকস অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (নাসা) অধীন নিয়ার আর্থ অবজেক্ট অবজারভেশন প্রোগ্রামের অন্তর্গত হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিস্কোপে ২০১৭ সালে ধরা পড়েছিল এক আশ্চর্য ঘটনা।
সে বছর অক্টোবর মাসের ১৯ তারিখে সৌরজগতে এক অদ্ভুত রকমের লম্বা আকৃতির এক বস্তুর অস্তিত্ব ধরা পড়ে। প্রথমে বিজ্ঞানী এবং জ্যোতির্বিদরা ভেবেছিলেন যে জিনিসটা একটা ধূমকেতু। তার নাম রাখা হয়েছিল ওউমুয়ামুয়া। প্রতি সেকেন্ডে ৮৭.৩ কিলোমিটার বেগে বস্তুটি সূর্যকে পাশ কাটিয়ে যায়। কিন্তু পরে যতই পরীক্ষা-নিরিক্ষা করা হয় ততই ধোঁয়াশা বাড়তে থাকে। কেন না, ধূমকেতুর মতো কোনো লক্ষণই ওউমুয়ামুয়ার ক্ষেত্রে খুঁজে পাওয়া যায়নি!
তাই ধরে নেওয়া হয়েছিল যে জিনিসটা খুব সম্ভবত কোনো গ্রহাণু হবে! কিন্তু এ ক্ষেত্রেও স্পষ্ট করে কিছু বলে ওঠা সম্ভব হয়নি বিজ্ঞানী এবং জ্যোতির্বিদদের পক্ষ থেকে। তাদের ক্রমাণ্বয়ে ভাবিয়ে তুলেছিল ওউমুয়ামুয়ার আকৃতি। জিনিসটা লম্বা এবং ছুঁচালো আকৃতির। গ্রহাণু সাধারণত এ রকমের দেখতে হয় না। ভালো করে দেখলে এটাকে একটা সিগারেটের আকৃতির সঙ্গে তুলনা দেওয়া যেতে পারে। প্রায় ৪০০ মিটার লম্বা এই ছুঁচালো, পাথুরে ওউমুয়ামুয়া আরও এক দিক থেকে বিস্ময়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তার গায়ে ছিল এক লালচে আভা যা সাধারণত গ্রহাণুদের মধ্যে বিরল!
ওই সময় বিজ্ঞানী এবং জ্যোতির্বিদরা বলেছিলেন যে, এ ধরনের অজানা জিনিসের অস্তিত্ব সৌরজগতের গঠন সম্পর্কে আমাদের আরও ভালো করে গবেষণার পথ প্রশস্ত করে দিল। যদিও এ রকম কোনো কিছুর অস্তিত্ব যে, এর আগে সৌরজগতে দেখা যায়নি, সেটাও স্বীকার করে নিয়েছিলেন তারা। অন্য দিকে, ২০১৭ সালের পরেও আজ পর্যন্ত এ রকম কিছুর হদিস সৌরজগতে খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি। এ কারণেই অধ্যাপক লোয়েবের দাবি, আমাদের সঙ্গে সংকেতের মাধ্যমে ভিনগ্রহের প্রাণীদের যোগাযোগ স্থাপনের যে চেষ্টা চলছে, এটাকেও তারই এক অংশ হিসেবে দেখছে।