পটুয়াখালী: হাঁচি দিলেই নাক থেকে পোকা বেরিয়ে আসছে। গত কয়েক দিনে হাঁচির সঙ্গে তার নাক দিয়ে জীবন্ত পোকা বের হয়েছে। শুধু তাই নয়, গত কয়েকদিন ধরে তার চোখ থেকে পানি ঝরছে অনবরত। পটুয়াখালী সদর উপজেলার কাকড়াবুনিয়া এলাকায় এক বৃদ্ধার সঙ্গে ঘটছে এমন ঘটনা।
ওই বৃদ্ধার নাম কুমুদিনী বালা (৯৫)। তিনি ওই এলাকার মৃত অমূল্য চন্দ্র হালদারের স্ত্রী। দীর্ঘদিন ধরে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত তিনি। এ কারণে হাত নাড়াচাড়া করতে পারেন না। এই সুযোগে পোকা তার নাক অথবা কান দিয়ে প্রবেশ করে বাসা বেঁধে সেখানে ডিম পেড়েছে।
অসুস্থ কুমুদিনী বালাকে বরিশাল নগরীর ব্রাউন্ড কম্পাউন্ডের রয়েল সিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ডা. খান আবদুর রউফের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছে তার।
চিকিৎসক জানিয়েছেন, কুমুদিনীর মাথার মধ্যে বাসা বেঁধেছে পোকা। এ কারণে হাঁচির সঙ্গে তার নাক থেকে পোকা বের হচ্ছে। চোখ দিয়ে ঝরছে পানি।
ইএনটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খান আব্দুর রউফ বলেন, বৃদ্ধার নাক থেকে তিনদিনের ব্যবধানে ৬০টি জীবন্ত পোকা বের করা হয়েছে। তার মাথার মধ্যে আরো পোকা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
কুমুদিনীর ছেলে মন্টু হালদার জানান, গত ২৭ মার্চ সকালে আকস্মিকভাবে তার মায়ের নাক থেকে একটি পোকা বের হতে দেখেন। এরপর বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে তারা ইএনটি চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দেন। ওই পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসক আব্দুর রউফের সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্লিনিকে ভর্তি করেন। ওই দিন থেকে গতকাল পর্যন্ত তার মায়ের নাক থেকে ৬০টি জীবিত পোকা বের করে দেখান চিকিৎসক। সর্বশেষ সোমবার বের করা হয় ২০টি পোকা।
ইএনটি বিশেষজ্ঞ খান আব্দুর রউফ বলেন, নাক, চোখ ও কপালের অভ্যন্তরে একাংশে ফাঁকা জায়গা থাকে। কোনোভাবে পোকা সেখানে প্রবেশ করে খালি স্থানে বাসা বাঁধে। সেখানে ডিম পাড়ে। পরে সেই ডিম থেকে বাচ্চা বের হওয়া শুরু করে। কুমুদিনী বালার ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটেছে। এ রোগের নাম হচ্ছে ‘ম্যাগোট ইন দ্যা নোজ অ্যান্ড প্যারানাজাল এয়ার সাইনাস’।
চিকিৎসকের ধারণা, কুমুদিনী বেশ কয়েক বছর ধেরে প্যারালাইসিসের কারণে দুই হাত নাড়াচাড়া করতে পারেন না। সেই সুযোগে পোকা তার নাক অথবা কান দিয়ে প্রবেশ করে খালি স্থানগুলোতে বাসা বেঁধেছে। তবে মাথার মধ্যে আরো পোকা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, নাক ও ভেতরের অংশ আরও কয়েকবার ওয়াশ করার প্রয়োজন হতে পারে। সব পোকা বের করা হলে সিটিস্ক্যান করে দেখা হবে। এরপর পোকার বাসাটি নির্ণয় করার পর ওষুধ দিয়ে ধ্বংস করা হবে। আশা করছি, আর পাঁচ থেকে সাত দিনের চিকিৎসায় কুমুদিনী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পারবেন।