রেজাউল করিম রেজা (সাংবাদিক ও লেখক): হঠাৎ দেখি সামনে অনেক মানুষের জটলা চিৎকার-চেঁচামেচি, ভিতরে গিয়ে দেখি সামান্য একটি বাটন মোবাইল চুরির অপরাধে সবাই মিলে তাকে বেঁধে এলো পাথালি মেরে তার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের করে ফেলেছে। এই ঘটনা দেখে আমার চোরটার উপর খুবই মায়া হলো । নাক মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছিল কিন্তু তার রক্ত আর দুরবস্থা দেখে মানুষটার উপর কারো কোন দয়া-মায়া বা রহম হচ্ছিল না। চোরটাকে মেরে সবাই নিজেকে খুব বাহাদুর ভাবছিল । কেও বলছিল চোরটাকে আমি আগে ধরেছি, কেউ বলছিল আগে দেখেছি, কেও বলছিলো দিছি শালার নাকটা ফাটাইয়া, কেউ বলছে কোমরের হাড্ডি ভাইঙ্গা লাইসি ইত্যাদি ইত্যাদি।
কিন্তু কেউ ভাবছে না তারও ঘর আছে সংসার কাছে মা থাকতে পারে, বউ সন্তান থাকতে পারে। এই ব্যক্তি যদি মরে যায় তার সংসারের মানুষদেরকে দেখবে কে? সন্তান হবে এতিম, স্ত্রী হবে বিধবা মা তার সন্তানকে হারাবে।
তখন এসব কথা ভাবার সময় এবং জ্ঞান কারো মধ্যেই ছিল না। সবাই তখন ব্যস্ত চোরটাকে কি করে চরম শাস্তি দেয়া যায় জাতে করে আর জীবনে চুরির নাম মনে না করে। কিন্তু হায় ওই মানুষগুলা হয়ত ভুলে গেছে যে ওই চোর এর আগেও অনেক বার চুরি করে ধরা পরে এমন মার খেয়েছে।কিন্তু আমি নরম মনের মানুষ তাই এমন অবস্থা দেখে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারছিলাম না। আমার চোখ দিয়ে পানি এসে গেল।
কিন্তু আজ অব্দি আমি কারো গায়ে একটা চড়ও দিতে পারি নাই। তবে ছোট বেলা থেকেই আমি জুতা ও সলার ঝাড়ু দিয়া অনেক মাছি মেরেছি।থালায় তেল মেখে সন্ধ্যায় ওই তেল মাখা থালা দিয়ে মশা মেরেছি শত শত ।আর আমাদের বাড়িতে যত মুরগী এনেছি তার ৯০ ভাগ আমি নিজ হাতে জবহ করছি। কিন্তু কাওকে মারতে দেখলে আমার খুব খারাপ লাকে। রক্ত দেখলে আমার আমার মাথা চক্কর দেয়।
ইচ্ছে করছিল জোর গলায় প্রতিবাদ করি কিন্তু কিছুই করার ছিল না আমার। তখন মানুষের অবস্থা এমন যে কেউ আমার কথা শুনবে না উল্টো আমাকেই চোরের দালাল বলবে। তাই মনটাকে শান্ত করে রুমাল দিয়ে চোখটি মুঝে চোরটির সামনে গেলাম। তাকে একটু ভয়ে ভয়ে অপরাধি মন নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম তোমার নাম কি ভাই? উত্তরে হাঁপাতে হাঁপাতে বললো স্যার আমার নাম সাহেব আলী। বাহ নামটি তো খুব সুন্দর- সাহেব আলি। মনে মনে একটু হাসি পাইতেছিল যে চরের নাম আবার সাহেব আলি! দেশের বাড়ি কোথায়? পদ্মার পাড়। কিন্তু তুমি চুরি করছো কেন? হেই কথা আপনার হইনা লাভ কি, মার্বার ইচ্ছা করলে মাইরা যান এত কিছু জাইনা লাভ নেই। জান সার জান অযথা সময় নষ্ট না কইরা মাইরা বাহাদুর সাইজা চইলা জান।এত প্যাচাল আর শুনতে ভাল্লাগে না।তার পর বির বির কইরা কি যেন বলছিল আমি বুঝতে পারলাম না। ভাই তুমি বল আমি শুনব তোমার কথা।
কি করবেন শুইনা, আমাগো গরীবের দুঃখ কেউ বোঝে না, কেউ জানতে চায় না, সবাই ধরা পড়লে লাথি মাইরা চাপার দাঁত ফালায়ে দেয়!এই দেহেন আমার চাপার দুই পাশে দুইটা দাঁত নাই । কেঁদে কেঁদে বললো জানেন কিছু খাইতে গেলে আমার খুবই কষ্ট হয়। ছোট বেলা থেইকা আমি গরু বা মুরগির হাড্ডি খুব সখ করে খাইতাম, কিন্তু গরীবের কপালে যে জুঠা হাড্ডি জুটে সে হাড্ডিটা খাইবার জায়গাও রাখেনাই মাইনসে, মাইরা আমার চাপার দাঁত ফালাইয়া দিছে। একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলে- কত দিন আমি হাড্ডি চাবাইয়া খাইনা, নাক টেনে ঢোক গিলে একটু আবেগ নিয়া বোললো, জানেন চাবাইতে না পারলে কি হইব আমি চাইটা চাইটা খাই, দুধের সাধ ঘোলে মিটাই আর কি, ছোট বেলার মত আমার চাপার দাঁত যদি আবার হইত তয় হাড্ডি চাবাবাইবার পারতাম!বলে হা হা হা করে হাঁসতে হাঁসতে কেঁদে ফেললো। তার কান্না দেখে আমার ও বুক ফেটে কান্না আসছিল।
কিন্তু আমি এত মানুষের সামনে কাঁদতে পারছিলেম না। তবে চোর টির হাত বাঁধা থাকার কারনে সে নিজ হাতে তার চোখের পানি মুছতে পারছিল না, কতটা অসহায় সে। তাই নাকের আর চোখের পানিতে তার বুক ভিজে গেছে। আমি পকেট থেকে টিস্যু পেপার নিয়ে চোরটির চোখের পানি সাথে নাক মুখ মুছে দিতেই সে আমার দিকে কেমন যেন মায়াবি নয়নে তাকিয়ে আছে। আমার একটু সংকোচ বোধ হচ্ছিল, তাই আসে পাসে তাকাচ্ছিলাম, তার চোখের দিকে আমার চোখ মিলাতে কেমন যেন বুকের ভেতর মোচড় দিচ্ছিল।
সার আপনি আমার বাবার কথা মনে কইরা দিলেন। ছোট বেলায় যখন আমি কান্না করতাম তখন আমার বাবা আমার চোখের পানি নিজ হাতে মুইছে দিতেন তখন আমার মনের সব দুঃখ কষ্ট দূর হইয়া যাইত আর সাথে সাথে আমার কান্না থাইমা যাইত। আপনি কে সার? আপনি মনে হয় খুব ভালা মানষ, তয় ভালা মানুষরে খারাপ মানুষ গুলা বেকুব ভাবে সুযোগ পাইলে খালি ঠকায়।মাথা ঝাড়া দিয়া বলছে- এতো মায়া দেহাইয়েন না, মারতে ইচ্ছা হইলে মারেন।
আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললাম, না ভাই আমি তোমাকে মারতে আসিনি তোমার এই অবস্থা দেখে আমার চোখে জল এসে গেছে। তাই তোমাকে এত কিছু জিজ্ঞেস করছি। হা হা হা হা হা হা করে হেসে বললো স্যার আমারে আপনি হাসাইলেন। আমাগো লাইগা কারো চোখে পানি আহে না। আহে ঘৃণা আর অপমান করার চিন্তা। শুধু নাক মুখ ফাটাইয়া শান্ত থাকে না , মা মাসি তুইলা গালাগালিও করে। আমাগো দেখলেই সবাই মারতে আহে, অনেকেই আইয়া মুখের উপর থু থু দিয়া যায়। হায় রে সৃষ্টির সেরা জীব।।
তবুও তুমি বলো আমার খুব জানতে ইচ্ছে করছে তুমি কেন চুরি করো? স্যার কি কমু - আমার একটা পোলা আছে তারে আমি শিক্ষিত বানানোর জন্য চূরি করি। আমি অবাক হয়ে বললাম- কি শিক্ষিত বানানোর জন্য! হ সার শিক্ষিত বানানোর লাইগাই চুরি করি। এটা তো ভালো কথা, তবে তুমি চুরি করছো কেন? আরও তো কত কাজ আছে দুনিয়ায়? সার, কয়দিন পর মেট্রিক পরীক্ষা, পরীক্ষার ফরম ফিলাপের টাকা জমা দিতে হইব, তাই আজকা উপায় না দেইখা চুরি করছিলাম। আমি চোর ছিলাম না, স্যার অভাবে পইরা চুরি করি। চাকরি বাকরি করো না কেন? হ চাকরি করতাম দারোয়ানের কিন্তু সেই খানে ভালো মানুষীর দাম পাইলাম না, চূরির সাক্ষী হতে গিয়া আমার চাকরি চইলা যায়। যিনি চুরি করেছিলেন তিনি ছিলেন মালিকের ভাইগ্না, চুরির কথা বড় বস কে জানানোর কারণে আমার চাকরি চইলা যায়। আমারে হইতে হয় অপমানিত। ওই চুরির অপবাদ উল্টা আমার ঘারে চাপাইয়া দেয়। আমারে পুলিশের ভয় দেহাইয়া আমার এক মাসের বেতন না দিয়া তাড়াইয়া দেয় । আর যে চুরি করেছিলো তার প্রমোশন হইয়া যায়, তার সম্মান আরো বাইরা যায়।।
আর কম শিক্ষিত হওয়ার কারণে কোথাও তেমন কোনো চাকরি আমি পাই নাই। চুরি না কইরাও আমার চাকরি গেলো, তাই আমি ভাবছি আমার পোলারে আমি শিক্ষিত চোর বানামু, দেশের সবচে বড় শিক্ষিত চোর। শুনে আমি তো অবাক, এ কি বলছে শিক্ষিত চোর বানাবে। এমন কথা আমি জীবনেও শুনি নাই। তাই একটু নড়েচড়ে আরাম করে বসে লোকটিকে জিজ্ঞেস করলাম ভাই তোমার কথাটা আমি বুঝলাম না ,শিক্ষিত চোর মানে কি? কেনই বা তুমি এমন চিন্তা করলে? সবাই তার সন্তানকে শিক্ষিত বানানোর চিন্তা করে কিন্তু তুমি একমাত্র ব্যক্তি যে সন্তানকে শিক্ষিত চোর বানাবে, ব্যাপারটা একটু খুলে বলোতো । হ সার ঠিকই হুনছেন- আমার পোলারে আমি সমাজের একজন শিক্ষিত চোর বানামু। কেন বানামু তাইলে হুনেন-- আমার পোলা পেটের দায়ে না, চুরি করবো তার বিলাসিতা ও মনের আনন্দের জন্য। টাকায় টাকায় সে হবে সমাজপতি সমাজের বরেণ্য গণ্যমান্য ব্যক্তি। কি বলছ? এটা তো ঠিক না অন্যায়। রাখেন মিয়া অন্যায়। পেটের দায়ে গরিব চুরি করলে হয় চোর সমাজ তার মুখে থু থু দেয় চোর বইলা মা মাসী তুইলা গালি দেয়, চাপায় লাত্তি মাইরা দাঁত ফালায়া দেয়, কিন্তু সমাজের শিক্ষিত ভদ্র চোরদের দেখলে সবাই কি করে কন? সালাম দেয়, সম্মান করে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে তাদের কদর থাকে সবার আগে। কিন্তু চোর তো আমরা দুইজনই। তাহলে এমন নিতি কেন সমাজের। আসলে পার্থক্য হইলো তারা শিক্ষিত আর আমরা মূর্খ।
বেশিরভাগ সময় চোরেরা পেটের দায়েও চুরি করে থাকে এবং তার কারণ তারা মূর্খ অথবা তাদের কোন কর্ম নাই। সেই মূর্খতার কারণে তাদের কোনো আরামের কাজকর্ম থাকে না। আর কেও কেও হয় অলস তাই তারা কষ্টের কাজও করতে চায় না। আবার কেউ সামাজিক প্রেক্ষাপট এবং সঙ্গদোষেও চুরির পথ বেছে নেয়। কেও নেশার টাকা যোগার করতেও বেছে নেয় চুরির পথ। মজার ব্যাপার হচ্ছে ওই নেশার আমদানি কারকও শিক্ষিত উঁচু তলার মানুষ।
তাদের মধ্যে কেউ খুব সহজ পেশা পকেটমার কেউ অস্র দেখিয়ে ছিনতাই অথবা দিনের বেলায় চুরির মত কাজটি করে থাকে। অন্য দিকে শিক্ষিতরা ফাইল আটকে টাকা আদায় করে অথবা কাজে ফাকি দেয়। মাঝে মাঝে সামান্য একটি রুটি চুরির অপরাধেও মূর্খ চোরদের যে কষ্ট নির্যাতন সহ্য করতে হয়, যে কারনে তাদের জীবনের চরম ভোগান্তিরও নেমে আসে। এমনও হয় এলোপাথালি মার খাওয়ার কারণে তাদের নাক মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়ে আসে। যার কারণে তারা কয়েক দিন অসুখে ও ভোগে। তাছাড়া চোরটি তার নিজের জীবনের চাকরির যে ঘটনাটি বলল সেটি একটি তার জীবনের মূল কারণ। কেউ হয় অভাবি চোর, কেউ হয় স্বভাবি।
এমন হাজারো চোরের কাহিনী মিশে হয়ে গেছে একাকার, তবু কেউ দেখেনি তাদের চোখের জল, মুছতেও আসেনি, জানতে চাইনি তাদের পেছনের ইতিহাস। জানতে চায়নি তাদের অপরাধ করার কারণ। তাই সাহেবে আলির মত চোর এখন বর্তমানে তাদের সন্তানদেরকে শিক্ষিত করার জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা চুরি করে এখন তাদের সন্তানদেরকে শিক্ষিত-মার্জিত চোর বানানোর চেষ্টায় নিমজ্জিত আছে। যেখানে পেটের দায়ে সামান্য একটি রুটি চুরির অপরাধে বুকে লাথি পড়ে, নাক মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়, সেই একই হাজার কোটি টাকা চুরির অপরাধে কোন শাস্তি হয় না। হয়ে যায় সমাজপতি বরেণ্য। সমাজে অশিক্ষিত চোরের কোন মূল্য নেই তাই তারা সন্তানদেরকে শিক্ষিত চোর বানানোর চেষ্টায় আছে। শিক্ষিত চোর মানেই রিক্স বিহীন কোটিপতি।
সাহেব আলীর মনের কথা--
পদ্মা নদীর ভাঙ্গনে অনেকেই হয়েছে ঘড় হারা সুখ হারা গ্রাম ছাড়া। তাদের মতই একজন সাহেব আলী যার জীবনে সব ছিল। সন্তান জন্মের পর মা বাবার ইচ্ছে ছিল সন্তানকে সাহেব বানাবে তাই তার নাম আদর করে রেখেছিল সাহেব আলি কিন্তু পরিবেশ এবং পরিস্থিতির নদীর ভাঙ্গনে তাদের ঘরবাড়ি উজাড় হয়ে যাওয়ার কারণে সবকিছু বদলে দিয়েছিল সাহেবের জীবনের, ছোটবেলায় তাকে ছাড়তে হয়েছে গ্রাম। অভাবের তাড়নায় তাকে করতে হয়েছে নানা রকমের ছোটখাটো কর্ম। না খেয়েও কাটাতে হয়েছে তার জীবনের অনেকটা সময়। আর চাকরি জীবনের ঘটনা তো আগেই বলা হয়েছে। সব মিলিয়ে সাহেবালির ইচ্ছা তার সন্তানকে শিক্ষিত চোর বানাবে। সে হবে শিক্ষিত সন্তানের বাবা। সন্তান চোর হয়েও বাবার চোরের উপাধি ও কলঙ্ককে সমাজ থেকে মুছে দিবে চিরতরে । পাবে সমাজে মাথা উঁচু করে বাচার সাহস। মানুষ ভুলে যাবে সাহেব আলী একদিন চোর ছিল। শুধু শিক্ষিত চোর হওয়ার কারণেই সমাজে মাথা উঁচু করে সম্মান নিয়ে বাঁচতে চায় সাহেব আলী। তারা পাবে সমাজে বরেন্য সম্মান। হবে নামি দামি সমাজ সেবক।
সাহেব আলি কথা গুলো শুনে নিজেকে শিক্ষিত বলে পরিচয় দিতে লজ্জা বোধ করছিল। আশেপাশে যেসব মানুষগুলো তাকে এতক্ষণ গালমন্দ এবং মারধোর করছিল তারা ও নিরব হয়ে গেল।
সাহেব আলী তখন চিৎকার করে কান্না করতে করতে বলছিলঃ- মারেন আমারেইতো মারবেন আমি যে সামান্য চোর কিন্তু যারা বড় বড় চোর যারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে দেশকে সর্বনাশের দিকে নিয়ে যাচ্ছে তাদেরকে তো আপনারা মারতে পারবেন না । পারেন শুধু আমাগোরে মারতে, ই আইছে বাহাদুর। তাদেরকে তো আপনারা সম্মান করেন তাদেরকে আপনারা ভয় পান, আমাদের মত চোরদের যেভাবে আপনার ধইরা মাইর দেন নাক মুখ ফাটাইয়া রক্ত বের করেন, তেমনটা যদি আপনারা ওই ধরনের শিক্ষিত চোর দের করতে পারতেন তাহলে আমাদের মত চোররা এত লজ্জা পাইতাম না কারন শিক্ষিত চোর দেখলে আমাগো লজ্জা হয়। আমার ইচ্ছে করে ওই শিক্ষিত চোরদের বলতে -ভাই আমরা তো অভাবে পড়ে পেটের দায়ে চুরি করি, আপনারা কেন শিক্ষিত হয়ে চুরি করেন?
যে সন্তানকে আমার আদর্শ শিক্ষা দেওয়ার কথা ছিল আমি সেই সন্তানকে এখন চুরি করার বড় চোর হওয়ার শিক্ষা দেই। কেন আপনারা পারেন না আপনাদের সন্তানকে সুশিক্ষিত বানাতে আদর্শ শিক্ষা দিতে, আপনারা না শিক্ষিত মানুষ? আমি না হয় অশিক্ষিত মানুষ অভাবে পইরা ভুল করছি, আপনারা কেন শিক্ষিত হয়ে ভুল করছেন? দয়া কইরা এইবার থামেন, সমাজটা কে আর আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দের আর লজ্জা দিয়েন না। শিক্ষিতরা নাকি জাতির বিবেক হয়, নিজের বিবেককে জাগান, নিজের সন্তান্দের জন্য একটি সুন্দর চোর মুক্ত ঘুশ ও দুর্নীতি মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন। আর যেন কারো সন্তান কে চোরের সন্তান বইলা গালি খাইতে না হয়। নিজের সন্তানের জন্য হলেও ভালো হন।
চোরের আর্তনাদ এবং কথাগুলো শুনে সবাই মাথা নিচু করে চলে গেল আমি নির্বাক হয়ে চোরটার দিকে তাকিয়ে আস্তে আস্তে তার হাতের বাঁধন খুলে তার হাতে কিছু টাকা তার ছেলের পরিক্ষার ফিসের জন্য দিয়ে আমিও মাথা নিচু করে চলে গেলাম। আমার যেন মনে হচ্ছিলো চোরটা আমাদের শিক্ষিত সমজের মাথা নিচু করে দিলো। এই মাথা নিচু এটা আমাদের সমাজের সবার মাথা নিচু হওয়ার মতো ব্যাপার। এ লজ্জা শুধু একটা চোরের নয় কোন একটা মানুষের নয় এই লজ্জা সারা শিক্ষিত জাতী, সারা মানবতা মানবতাবাদী প্রগতিশীল মানুষের। চলুন আমরা শত হই।
নিজে ভালো থেকে তুমি,
ভালো রাখ অন্যকে।
অসহায় মুখ গুলো,
ভরে দাও অন্নতে।
আমরাই আছি আমরাই থাকবো
সততার যুদ্ধে বিজয়ী হবো।।