বিচিত্র জগৎ ডেস্ক : মানুষ অন্যের খাওয়া দেখতেও যে এত ভালবাসে তা ইন্টারনেট বিপ্লব না হলে, ইউটিউবের (Youtube) জন্ম না হলে জানাই যেত না। ইউটিউব খুললেই এখন ফুড ব্লগের বন্যা! একায়, দোকায়, প্রেমিক-প্রেমিকায়, স্বামী-স্ত্রীতে, ভাইবোনে কচরমচর করে খাচ্ছে, আমরা দেখছি! খাবার বিভিন্ন। গ্রামের কুমড়ো ফুলের বড়া থেকে শহুরে পিৎজা পর্যন্ত। অধিকাংশ ফুড ব্লগই জনপ্রিয়। প্রচুর সাবস্ক্রাইবার তাদের। আন্দাজ হয়, ভালই আয় করেন এই ব্লগাররা। তাই বলে মাসে সাড়ে ৭ কোটি টাকা?
হ্যাঁ, ক্যামেরার সামনে স্রেফ খেয়ে মাসে সাড়ে ৭ কোটি টাকা আয় করেন এক ইউটিউবার। কানাডার অন্টারিওর বাসিন্দা ওই তরুণীর নাম নাওমি ম্যাকরে। ইউটিউবের দর্শক অবশ্য নাওমিকে চেনে হানিবি নামে। তাঁর চ্যানেলের নাম হানিবি এএসএমআর (HunniBee ASMR) তো এই হানিবি বা নাওমি পেশা জীবন শুরু করেছিলেন ফিটনেস ট্রেনার হিসেবে। তবে ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটিতে যখন পড়ছেন তখনই এএসএমআর কন্টেন্টে হাত পাকাতে শুরু করেন। এখন প্রশ্ন হল, এএসএমআর জিনিসটা কী?
এএসএমআর হল অটোনোমাস সেনসরি মেরিডিয়ান রেসপন্স। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সুক্ষ্ম শব্দ মস্তিষ্কে এক ধরনের অনুরণন তৈরি করে। যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করে, শরীরকে আরাম দেয়। খাওয়া-দাওয়ার সময় আমাদের মুখ থেকে যে শব্দ (খাবার দাঁতে কামড়ানোর, চেবানোর, গেলার) হয়, তাতেও একই কাজ হয়। এই কারণেই একজন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ হিসেবে ফুড চ্যানেলের ভাবনা এসেছিল নাওমির মাথায়। যেখানে কথা না বলে (বললেও ফিসফিস করে) এএসএমআর কনটেন্ট তৈরি করতে শুরু করেন তিনি।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ক্যামেরার সামনে নাওমি যা খান তাও কিন্তু স্পেশাল। নাওমি মূলত বিভিন্ন সাইজের চকোলেট খান। কোনওটা দেখতে মাছের মতো, কোনওটা যেন হেয়ারব্রাশ। সঙ্গে পানীয় হিসেবে শ্যা'ম্পেনের বোতল থাকে। আর সেই সব খাবার হয় চটকদার লাল-নীল-সবুজ রঙের। বোঝাই যায়, এই খাবার দর্শকের মন কাড়ার জন্য অর্ডার দিয়ে তৈরি করা। চুপিচুপি এএসএমআর ফুড ব্লগ শুরু করে মাস তিনেকের মধ্যে ১ লক্ষ সাবস্ক্রাইবারে পৌঁছে যান নাওমি। বর্তমানে সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা সাড়ে ৭৬ লক্ষেরও বেশি। আর মাসে আয় সাড়ে ৭ কোটি টাকা।
নাওমি বলেন, “আমার কাজ আমি ভীষণ ভালবাসি। বিশ্বের কোনও কিছুর বিনিময়ে এই কাজকে আমি বেচতে পারব না।” নাওমি ভালবেসে যে কাজ করছেন, তাতে যা আয় হচ্ছে, তাতে করে আর কিছু করারও প্রয়োজনও নেই তাঁর। সংবাদ প্রতিদিন