পাঠকই লেখক ডেস্ক: - হু ইজ হিমু বা হিমু কে-
হিমু।হলুদ কটকটে পকেট বিহীন পাঞ্জাবী উস্খখোস্ক চোল আর ময়লা দাত নিয়ে খালি পায়ে এলোমালো হেটে বেড়ানো এক উদভ্রান্ত যুবক।যার কাজ হল নানা জনের বাসায় বা দোকানে উপস্তিত হওয়া আর ফাজলামি করে বিরক্ত করা।তার ফুপা আর ফুপাত ভাই বাদল এবং খালা মাজেদা আর প্রেমিকা রুপাকে নিয়ে ই বলা চলে তার ঘনিষ্ট মহল।বিভিন্ন থানার হাজত খানায় রাত কাটানো আর ওসি সুবেদারদের নিয়ে ফাজালামো করে বেড়ানো তার কাজ।বিনা কাজে মহাব্যাস্ত থাকাটা তার অন্যতম স্বভাব।আজ সন ২০১৫র শেষের দিকে আমরা জানিনা সে বেচে আছে না মরে গেছে।আদৌ কি সে তার পাগলামি খেলা বন্ধ করেছে নাকি আজ অবদি চালিয়ে যাচ্ছে।তবে এটুকু জানি তার স্রষ্টা অমর সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ চলে গেছে এ ভবের দুনিয়া ছেড়ে।
##হিমুর প্রতি আমার ভালবাসা-
২০০৯সালের অক্টোবর মাসের ২৩ তারিখ।আমার জীবনের প্রথম হাওয়াই জাহাজে উড্ডয়ন তাও আবার এক্কেবারে বিলেতের উদ্দেশ্যে।মা-বাবা, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, প্রিয়জনেষুদের ছেড়ে আসছি। বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের সে ফ্লাইটে মোট যাত্রিদের গুটি কয়েক ছাড়া বাকি সবাই স্টুডেন্ট ভিসায় লন্ডনের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয়া বিভিন্ন বয়সের ছাত্রকুল।আমার লাগেজ যথারিতী বিমানের বেল্টে গেলেও হ্যান্ড বেগের ভেতরে অতি স্বযত্নে পুরে নিয়েছিলাম হুমায়ুন আহমেদের এক খন্ড ‘হিমু সমগ্র’।বিমানে বসে সবাই উত্তেজিতভাবে নানা গল্প গুজবে মত্ত থাকলেও জীবনের প্রথম উড়োজাহাজ ভ্রমনে আমি দু-টো কাজ অতি আন্তরিকতার সাথে করছিলাম।ঘুমানো আর হিমু সমগ্রে নিজেকে ঢুবিয়ে রাখা।অতি আন্তরিকতার সাথে কিন্তু গভির মনে আমি পড়ে যাচ্ছিলাম ‘হিমুকে’।অনেকে নানা কানাঘুষা আর ঠাট্রা মশকরা করতে না ছাড়লেও আমি ব্যাস্ত ছিলাম ‘হিমুকে’ নিয়ে।
## হিমুর স্রষ্টাকে নিয়ে-
নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে নানা জনে নানা কথা বলে।কেউ আছে হুমায়ুন আহমেদ বলতে পাগল হয়ে যায় তার ভক্তামির প্রেমে আবার কেউ কেউ তার নাম শুনলে বমি করে দেয় ভাব।আমি এই দু গ্রুপের কারো সাথে ই নেই।সাহিত্যিক ঔপন্যাসিক হুমায়ুন আহমেদের মুল্যায়ন আমার কাছে আকাশসম।জানি তাকে নিয়ে মুল্যায়নধর্মি লেখা লেখার মত যোগ্য লোক আমি নই। একজন হুমায়ুন মহান আর বিশাল পরিচিতি পেয়েছে কারন তার ছিল বহুগুন।সায়েন্স বেকগ্রাউন্ড থেকে উঠে আসা লোকটি সাহিত্য জগতে প্রবেশ করে আমৃত্যু সেখানে রাজত্ব করে গেছে উভয়বঙ্গে।তার ধর্মিয় বিশ্বাস কি তা নিয়ে নানা কথা চালিত আছে।তিনি নাস্তিক না আস্তিক। আস্তিক হলে আবার কোন প্রকারের।এটি অনেক রহস্যময় থাকলেও তার সরলতা আর সাহিত্যে রসবোধ আর সাহিত্যের পাঠক তৈরিতে তার বিশালতা আকাশসম।
##কামব্যাক হিমু প্লিজ –
জানি হুমায়ুনের হাত ধরে আর হিমু বয়ে বেড়াবেনা ঢাকার রাঝপথে কিংবা অলিতে গলিতে।আর হয়ত তরুনেরা শখের বসে হলুদ পাঞ্জাবি পরে খালি পায়ে হেটে হিমু দিবস বা হিমু সাজার কসরত করবেনা।হিমুর চরিত্র আমার কাছে ছিল অনেকটা চানাচুর টাইপ।চানাচুরের ভর্তা যেমন খেতে সুস্বাদু কিন্তু খাওয়ার পরে এর কোন উপকারিতা নেই ঠিক ক তেমনি হুমায়ুনের হিমুও পড়তে যে কি স্বাদ তা যারা পড়েছে বা পড়ে তারা বুজে কিন্তু উপকারিতা কিছু নেই।অনেকদিন হয় হিমু স্রষ্টার তিরোধানের পরে আমি হিমু পড়িনা।বৃষ্টি বাদলার দিনে বা শীতের রাতে কম্বল মুড়ি দিয়ে হিমু চর্বনের স্বাদ পাইনা সে অনেকদিন।এ যেন কয়েক যুগ।খুব ইচ্ছে করে চিতকার করে বলতে ‘হিমু,প্লিজ কামব্যাক এগেইন’।
লেখক: মাহবুব সুয়েদ, (পর্তুগাল প্রবাসী)
লেখকের ইমেল- [email protected]
(বি:দ্র: সম্পাদক দায়ী নয়)
১৯ জানুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস