রবিবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০৫:৫৮:৩১

ঐতিহাসিক মুজিবনগরে একদিন

ঐতিহাসিক মুজিবনগরে একদিন

পাঠকই লেখক ডেস্ক: ভ্রমন আমার কাছে খুবই আনন্দের, তাই কোথাও ভ্রমনের সুযোগ এলে এককথায় রাজি হয়ে যাই। সুযোগ চলে এল তাই চলে গেলাম ঐতিহাসিক মুজিবনগরে।

ফুকরা ক্লাস্টারের প্রাইমারি স্কুলগুলোর বার্ষিক পিকনিকে গিয়েছিলাম। আমার বাবা মা যেহেতু প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক, সেহেতু ঐতিহাসিক এ স্থানে যেতে পেরেছি।

৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ৭.২০ বাস ছাড়া হলো মেহেরপুরেরে মুজিবনগরের উদ্দেশ্যে যেখানে মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী সরকার গঠন করা হয়েছিল।

বাসে ওঠার পর থাকি মহান মুক্তিযুদ্ধের কথা, মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদদের আত্মত্যাগের কথা, ২ লক্ষাধিক অসহায় মা বোনের কথা, আমাদের বাংলার বিজয়গাঁথা।

এমন একটি যায়গায় যাচ্ছি যেখানে পাকিস্তানী বাহিনীর অন্তরালে বাংলাদেশের অস্হায়ী সরকার গঠিত হয়েছিল। ভাবতেই শরীর ও মনে শিহরন জাগে, মনে দেশপ্রেম জাগরিত হয়। মাগুরা, ঝিনাইদহ, চুড়াডাঙায় মাঠের পর মাঠ ভূট্টা আর কারপাস তুলার চাষ হয়, মনোরম এই প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে দেখতে আমরা ১.৩০ এ আমাদের গন্তব্যস্হল মুজিবনগরে পৌঁছলাম।

প্রথম চোখে পড়ল মহান মুক্তিযুদ্ধের সাথে সম্পর্কিত কিছু ভাস্কর্য। বঙ্গবন্ধুর ৭ ই মার্চের ভাষন,অস্হায়ী সরকারের শপথ গ্রহন, মুক্তিযোদ্ধাদের চোখ হাত বেধে গনহত্যা, বাঙ্গালীদের ঘরে অগ্নিসংযোগ, স্মামীকে বেধে স্ত্রীর সম্মানহানী। এসব ভাস্কর্য মনে করিয়ে দিল মুক্তিযুদ্ধের সেই করুন ইতিহাসকে।

তারপর দেখলাম বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ভূমিমানচিএ। এই মানচিত্র দেখার জন্য চারিদিকে সোপান (টাওয়ার) রয়েছে। এ মানচিত্রের বিশেষ বিশেষ যায়গায় মুক্তিযুদ্ধের ছোট ছোট ভাস্কর্য আছে। তার মধ্য একটা ভাস্কর্য দেখে চোখের পানি আটকানো যায়না। সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে একটা পরিবার প্রানভয়ে ভারতে হেটে চলে যাচ্ছে। দীর্ঘ পথশ্রমে তারা ক্লান্ত তবুও তারা প্রানপ্রনে হাটছে। বৃদ্ধ মাবাবাকে কেউ বা ঝাকায় কেউ বা ডোলে বহন করছে। কেউ কেউ সঙ্গে গৃহপালিত প্রানিও নিয়ে যাচ্ছে।

এর পর দেখলাম শহীদ স্মৃতিসৌধ আর আম্রকানন, আড়াই হাজারেরও বেশি আম গাছ আছে এখানে যেগুলো খুবই পুরোনো.এরপর গেলাম বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে।  প্রথমবারের মতো নিজ দেশ থেকে প্রতিবেশী দেশ দেখে খুবই ভালো লাগল। এরপর খাওয়া দাওয়ার পর ভাগ্যপরীক্ষা হলো গানের কলির মাধ্যমে। আমি আর মা বাদ পড়ে গেলাম। কিন্তু আমার বাবা প্রথম পুরষ্কার পেল। পুরষ্কার পেয়ে আমরা খুবই খুশি হলাম। কিছু কেনাকাটা করে রওনা হলাম বাড়ির দিকে আর সাক্ষী হলাম ঐতিহাসিক সব ঘটনার যা আমাদের অস্তিত্ব বহন করে, যা আমাদের জাতিসত্তার সাথে জড়িত।
লেখক: সুদীপ বিশ্বাস
৭ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে