সিলভিয়া মশিউর : ট্রয় নগরী ধ্বংস হয়েছিল এক নারীর কারণে। তার নাম হেলেন। এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু Stefanie Isak নামটি আমরা অনেকেই জানি না। ১৬ বছরের এই ইহুদী মেয়েটির কারণে সারা দুনিয়া ধ্বংস হবার উপক্রম হয়েছিল ।
সালটি ১৯০৬, Vienna শহরে বসবাসরত মেয়েটির বয়স তখন ১৬ ধনী ব্যবসায়ীর মেয়ে। একদিন রাস্তার ধাঁরে বসে থাকা এক artist কে দিয়ে শখ করে মেয়েটি তার একখানা portrait বানালো। অসম্ভব রূপবতী এই নারীর ছবি আঁকতে গিয়ে মনের অজান্তে artist তার প্রেমে পড়ে গেল। artist এর বয়স তখন ১৮ ছেলেটির স্বপ্ন চিত্রশিল্পী হওয়া। Academy of Fine Arts Vienna তে চেষ্টা করছে ভর্তি হবার জন্য। কিন্তু পারছে না। ছেলেটির অবসর কাটে রাস্তার ধাঁরে ছবি এঁকে।
আবার মাঝে মাঝে পথচারীদের portrait এঁকে দু’চার পয়সা রোজগার করে। শিল্পীদের মন অনেক রোম্যান্টিক হয়। এটাই স্বাভাবিক। তো পরদিন মেয়েটিকে সে propose করে। মেয়েটি হা বা না, কিছুই বলেনা। ছেলেটি মাঝে মাঝে মেয়েটির বাড়ির সামনে গিয়ে বসে থাকতো। একপলক দেখার জন্য। বিশাল বাড়িটি উচু প্রাচীরে ঘেরা। বিশাল লোহার গেট।
মাঝে মাঝে ছেলেটি তার পোষা কুকুরকে গেটের ফাঁক দিয়ে প্রবেশ করিয়ে দিত বাড়ির ভিতরে। কুকুরটির মুখে থাকত প্রেম পত্র। কুকুরটি ছিল ছেলেটির অনেক প্রিয়। ভিয়েনা আসার সময় তার মা এই কুকুরটিকে তার সাথে দিয়েছিল। বলা যায়, কুকুরটি ছিল মায়ের দেয়া শেষ উপহার। কারণ এরপর আর কোনদিন ছেলেটির দ্যাখা হয়নি তার মা Clara এর সাথে। তিনি মারা যান।
মেয়েটির পরিবার বিষয়টি আমলে নিলো। ছেলেটি চাল চুলোহীন, রাস্তার ছেলে। তার উপরে non-Jewish… এই সম্পর্ক কিছুতেই সম্ভব নয়। আর ছেলেটির future বলে কিছু নেই। তারা ছেলেটিকে বারবার বারণ করে দিলো।
কিন্তু প্রেম কি আর বারণ শোনে? ছেলেটি সুযোগ পেলেই মেয়েটিকে দূর থেকে দেখতো। উত্তর না এলেও প্রেম পত্র দিত। তো একদিন প্রেমপত্র সমেত কুকুরটিকে আবার পাঠালো মেয়েটির বাড়িতে। কিন্তু এইদিন আর কুকুরটি ফিরে এল না। ছেলেটি সারারাত অপেক্ষা করে, সকালে চলে গেল।
পরদিন আবার মেয়েটির বাড়ির সামনে গেল। বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে ছেলেটি তার সেই প্রিয় কুকুরটির মৃতদেহ খুঁজে পেল। নির্মমভাবে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। সেইদিন কাঁদতে কাঁদতে ছেলেটি চলে এলো। আর কোনদিন ওইবাড়ির সামনে যায় নি সে। চালচুলোহীন ওই রাস্তার ছেলেটি পরে যা করেছিলো তা ইতিহাস। বলা যায় রাস্তার সেই ছেলেটি নিজ হাতে গত শতাব্দীর ইতিহাস লিখে গেছে।
এমনকি, পরবর্তীতে তার পোষা কুকুর Blondi, এতটাই বিখ্যাত হয়েছিল যে তার wiki page এর সাইজ অনেক famous celebrity দের চেয়ে বড়! অনেক পরে মেয়েটি নাকি বলেছিল, সে ছেলেটিকে মনে মনে ভালবাসত। সাহস করে বলতে পারে নি। সে যা হোক, ছেলেটির নাম ছিল এডলফ হিটলার। হ্যাঁ; হিটলার ছোটবেলায় পোষ্ট কার্ড আঁকিয়েই জীবিকা নির্বাহ করতেন ।
(সংগৃহীত ও অনুবাদিত)
২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন