আরিফুর রাজু : পাক-ভারত ম্যাচ মানেই টান টান উত্তেজনা। সীমান্ত চৌকিতে কড়া পাহারা! ভক্তদের মাঝে হাতাহাতি কিংবা কখনও রেষারেষির জের ধরে খুন। কিন্তু এখন আর তা দেখা যায় না। কারণ ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেটকে নিজেদের সম্পদ মনে করে তাতে নোংরা রাজনীতি ঢুকিয়ে কলুষিত করেছে।
কোথায় কাসাবের মুম্বাই হামলা, আর কোথায় ক্রিকেট। হ্যাঁ, মানি এবং স্বীকার করি মুম্বাইয়ের হোটেল তাজমহলে পাক জঙ্গি কাসাবের হামলা ছিল ন্যাক্কারজনক। আবার পাকিস্তানের মাটিতে লঙ্কান টিমের ওপর জঙ্গী হামলা অনেক বেশি জগন্যতম। এ জন্য হামলাকারীদের আইনের কাঠ গড়ায় এনে শাস্তি দেয়া জুরুরি। তবে তাই বলে শান্তির খেলা ক্রিকেটে সঙ্গে সেই নোংরা রাজনীতি জড়ানো ঠিক? বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মত থাকতেই পারে। দেখা দিতে পারে ব্যাক্তি বিদ্বেষ। তাই আর সে দিকে এগোলাম না। ফিরে আসি ক্রিকেট ইস্যুতে। প্রসঙ্গ, পাক-ভারত ও বাংলাদেশ।
শুরু করি গেল ওয়ানডে বিশ্বকাপের বিষয়। সেবারে ভারতের ভেলকি আর আইসিসির চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্তে স্বপ্ন ভাঙ্গে কোটি কোটি টাইগারপ্রেমীর। তখন বিশ্বমিডিয়া খবর হয়েছিল ‘আইসিসির চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন ভঙ্গ, আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে হেরে গেল বাংলাদেশ।’ এমনকি ক্রিকেটে তিন মোড়লের বিপক্ষে যেতেও দেখা গেছে অনেক পত্রিকাকে। আর সেই ঘটনায় পাকিস্তানি আম্পায়ার আলিম দার ও ইয়ান গোল্ড বাংলাদেশি সমর্থকদের কাছে অলিখিত শত্রুতে পরিণত হয়। সেদিন এ দুই আম্পায়ার মাশরাফিদের সঙ্গে কি বেইমানিটা নাই করেছিল সেটি না হয় খুলে বললাম এদেশীয় ক্রিকেট পাগলদের(বিশেষ করে আমার মত ক্রিকেট পাগলদের)। সেই কলুষিত অধ্যায় গেল। এর পর ধোনি-কোহলিরা বাংলাদেশ সফরে এলো। সিরিজ হেরে সোজা দেশে ফিরতে হলো তাদের। তার আগে পরে পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকাও এসেছিল বাংলাদেশ সফরে। দলের সুযোগ পাওয়া নতুন পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের বিধ্বংসী বোলিংয়ে ভারতের মত বেহাল দশা হয় তাদেরও।
এর পরের অধ্যায় দেশের মাটিতে প্রথমবারের মত টি২০ ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত হওয়া এশিয়া কাপ। আসরটিতে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের মত গুরুত্বপূর্ণ দুইটি দলকে হারিয়ে ভারতের সঙ্গে ফাইনাল খেলে বাংলাদেশ।যদিও মুস্তাফিজ বিহীন হাই-ভোল্টেজ ম্যাচটিতে পরাজয় বরণ করে বাংলাদেশ।
আসি এবার মূল এবং শেষ কোথায়। ইন্ডিয়া পরিচালিত আইসিসির প্রসঙ্গে। তাসকিন ও আরাফাত সানির বোলিং অ্যাকশন প্রসঙ্গে। সুপারটেনে ষড়যন্ত্রের ফাঁদে ফেলে বাংলাদেশকে বাদ দেয়ার প্রসঙ্গে। আসলে কোনটা ছেড়ে কোনটা লেখবো? কারণ তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে সবই তো দেখেছে সাধারণ ক্রিকেট ভক্তরা। ভারত এবং বিশ্ব ক্রিকেটের মোড়লাররা আগে যেটা করতো পাকিস্তানের সঙ্গে এখন তা করছে বাংলাদেশের সঙ্গে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের উথানের বিপক্ষে তার উঠে পড়ে লেগেছে। তা না হলে কেন অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের দায়ে কেন বাদ পড়বে তাসকিনের মত বাংলাদেশের সম্ভবনাময় পেসার? সুপারটেনে বাংলাদেশের জয়ী ম্যাচে ‘ডিজিটাল চুরির’ মাধ্যমে রান রেটে হারানো হবে তকেন বাংলাদেশকে। তারপর বাংলাদেশকে নিয়ে আইসিসির ব্যঙ্গ (এক রানে হারের পর)। ভারতীয়দের মওকা মওকা ভিডিও। এসব কিসের আলামত? বিদ্বেষ নাকি ঠাট্টা?
আর যাই হোক আট দশ জনের মত আমিও মনে প্রাণে বিশ্বাস করি বাংলাদেশ দিনে দিনে ক্রিকেট পরাশক্তিতে পরিণত হচ্ছে। আর তাতেই তিন মোড়লের ঘুমও হারাম হচ্ছে। রুখতে চেষ্টা চলছে আমাদের অগ্রযাত্রাকে। লেখক: সাংবাদিক । একান্তই লেখকের মতামত।
৩১ মার্চ, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/আরিফুর রাজু/এআর