সোমবার, ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১১:১০:৩১

‘সোনা বন্ধু ভুইলো না আমারে’

‘সোনা বন্ধু ভুইলো না আমারে’

নাজমুন নাহার : ‘তুমি বিনে আকুল পরান
থাকতে চায় না ঘরে রে
সোনা বন্ধু ভুইলো না আমারে’ -

এত আকুতি শাহ আবদুল করিমের গানের প্রতিটি লাইনে লাইনে পাওয়া যায়। এই পরান আকুল, এই পরাণ ব্যাকুল, এই পরাণ ঘরে রয় না -

এখন সেই বন্ধু, সোনা বন্ধু যেন তারে না ভুলে যায় --আহারে কি আকুতি!! প্রতিটি শব্দে প্রতি ইঞ্চি ইঞ্চি সুরে এই হৃদয়ের যে আকুলতা সে আকুলতার ব্যথা কষ্ট সেই বুঝে যে এই ভ্রমে পড়ে যায়। ভ্রম কেন? ভ্রম এইজন্য যে এটা আসলেই একটা যন্ত্রণা। না কাজে মন বসে না ঘরে মন বসে , উড়ে যেতে ইচ্ছে করে এই চিত্ত। আহা কেন এমন?

‘সাগরে ভাসাইয়া কুলমান
তোমারে সঁপিয়া দিলাম দেহ মনো প্রাণ’

প্রেমের এমনি আকুলতা, এই প্রসঙ্গে আমাদের এক আত্মীয় মেয়ের কথা মনে পড়ছে। রুমা ( অন্য নাম তার ) যখন ঘর ছেড়ে বের হয়ে গেলো তাও এমন এক ছেলের সাথে তার জন্য তার শুধু পরিবার না তার পুরো আত্মীয় স্বজন এমনকি গ্রাম ও ছাড়তে হলো। তার মা একা একা চোখের জলে ভাসেন কিন্তু সমাজ এর বাইরে চলে যেতে হবে তাকে যদি মেয়ের সাথে সম্পর্ক রাখেন। রুমাও জানে এই পরিণতি। কিন্তু কি উপায়, এই হৃদয় তো কিছু বুঝে না । সাগরে কুল মান সব যাক, কিন্তু তারে ছাড়া তো চলে না -

‘আমারে ছাড়িয়া যদি যাও
প্রতিজ্ঞা করিয়া বলো আমার মাথা খাও’ -

আহা কি কথা!! ‘আমারে ছাড়িয়া যদি যাও প্রতিজ্ঞা করিয়া বলো আমার মাথা খাও’-‘আমার মাথা খাও’, গ্রাম বাংলার এই প্রচলিত কথাকে সুরে সুরে কি অসাধারণ আকুলতায় পর্যবসিত করা যায় সে এই কবিই জানেন।

বাউল কবি অথচ বুঝতে পারেন যার জন্য এই মন পাগল হয়, দিল পাগল হয় তখন মন কোনো যুক্তি বুঝে না।

‘কুল মান গেলে ক্ষতি নাই আমার
তুমি বিনে প্রাণ বাঁচে না কি করিব আর’

আসলেও তো কুল মান দিয়ে কি হবে? যদি প্রাণই তো না বাঁচে -

‘তোমারেই চাই রে সোনাবন্ধু
সোনাবন্ধু ভুইলো না আমারে’-

যুগ যুগ জিও সোনাবন্ধু-শাহ আবদুল করিমের মত কবি, গীতিকার সুরকার কতদিন পরে পরে আসেন এই পৃথিবীতে ?

শ্রদ্ধা প্রিয় কবি সুরকার গীতিকার শাহ আবদুল করিমের প্রতি। তিনি না থাকলে এই আকুল করা গান পেতাম না। লেখকঃ নাজমুন নাহার, কবি ও প্রফেসর
১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে