সবুজ আলম ফিরোজ: সময়টা ঠিক গত বছরের এই সময়, যখন বছর ঘুরে ফিরে আসে সবার মাঝে আম । তখন আমি একটি অনলাইনে নিউজ প্রোটালে জব করি । অফিস ছিল দক্ষিন বনশ্রি । অফিস শেষে বিকেলে যখন ক্লান্ত শরীর নিয়ে বাসার উদ্দেশ্য পা বাড়াই। দশ টাকার পথ অটোরিকশায় করে এসে আরও দশ টাকার পথ পায়ে হেটে বাসায় ফিরি। প্রতিদিনের খুব পরিচিত যাতায়াত কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ফুটওভার ব্রিজে যেন আমের মেলা। হাটতে পারছি না ক্রেতার ভিড়ে। এই সময়ের সেরা ফল আম নিয়ে দোকানিরা ব্যাস্ত। রঙ্গিন আমের সুমধুর ঘ্রানে দুর্গন্ধময় জায়গাটা যেন সুঘ্রানে ছড়িয়ে গেছে। প্রতিটি ব্যক্তিকে মুগ্ধ করে তুলছে সৃষ্টির সেরা এই নেয়ামত এই ফল।
হঠাৎ চোঁখের দৃষ্টি পড়ে এক দোকানির আমের দিকে। আমের চক চকে রঙ্গে আমার দৃষ্টি কেড়ে নেয়। সুমধুর ঘ্রানে আমি থমকে যাই। আমের রং দেখে আমার জিবে জল চলে আসে। স্থান ত্যাগ করতে পারছি না। সেই টুকরি বর্তী আমের দোকানে যেন বন্দি হয়ে আছি। না দোকানদার নয়। লাল টক টকে মধুর ঘ্রানে আম আমার দুই পা ধরে রেখেছে। এক কেজি ক্রয় করার মত বুক পকেটে টাকা না থাকলেও লোভনীয় মনকে তৃপ্তি দিতে মাত্র একটা আম ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নিলাম। দোকানিকে একটা আমের দাম কত জিজ্ঞেস করতেই মুচকি হেসে দিয়ে বলল ১৫ টাকা। দোকানির মুচকি হাসি আমাকে চরম ভাবে কষ্ট দেয়। তার হাসির কারনটা বুঝতে পেরেছি বিধায় তাকে আর জিজ্ঞেস করলাম না।
যাক একটা আম ক্রয়ের জন্য বুক পকেটে হাত দিতেই ঝনঝন শব্দ কর্ণদ্বয়ে বেজে উঠলো। অবশেষে হাতের মুঠোই কতগুলো চাবির চড়া আর পাঁচ টাকার একটা কয়েন দেখতে পেলাম। দুস্কৃতকারী চাবি আমাকে কঠিন হতাশ করছে। চোঁখে মুখে হতাশার চিত্র নিয়ে আবার পা বাড়ালাম বাসার পথে । পিছনে চোঁখ ফিরলেই দেখি এক বাদাম বিক্রেতা (মামা) দাঁড়িয়ে আছে। কি আর করা! সেই হাতাশকারী পাঁচ টাকার বাদাম নিয়ে চাবাতে চাবাতে গন্তব্যস্থল বাসায় পা রাখলাম।
লেখক: সবুজ আলম ফিরোজ
২২ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ