প্রবাস ডেস্ক : বিশ্বের অনেক দেশের নাগরিকরা নিজ দেশের বাইরে অন্যদেশে সেকেন্ড হোম গড়ে তুলছেন। অর্থনৈতিকভাবে উন্নত দেশ মালয়েশিয়ায়ও সেই সুযোগ রয়েছে। দেশটির এমএম২ এইচ কর্মসূচির আওতায় তৃতীয় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশিরা। এরই মধ্যে ৩ হাজার ৫শ’ ৪৬ বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম গড়েছেন।
এমএম২ এইচ’র আওতায় ২০০২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম গড়ার অনুমতি পেয়েছেন ১শ’ ২৬ দেশের ৩৩ হাজার ৩শ’ মানুষ। দেশটির সংবাদ মাধ্যম নিউ স্ট্রেইটস টাইমসের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে এমএম২ এইচ জাতীয় কর্মশালায় দেশটির পর্যটন ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী নাজরি আজিজ এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম গড়ার শীর্ষে রয়েছে চীন। দেশটির ৮ হাজার ৭শ’ ১৪ ব্যক্তি সেখানে সেকেন্ড হোম করেছেন। এরপরের অবস্থানে আছে জাপান, দেশটির রয়েছে ৪ হাজার ২শ’ ২৫ জন। আর তৃতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ। বসতি গড়েছেন ৩ হাজার ৫শ’ ৪৬ জন।
নাজরি আজিজ বলেন, যুক্তরাজ্য থেকে ২ হাজার ৪শ’ ১২ জন, ইরান থেকে ১ হাজার ৩শ’ ৩৬ জন, সিঙ্গাপুর থেকে ১ হাজার ২শ’ ৯৫ জন, তাইওয়ান থেকে ১ হাজার ২শ’ ৮ জন, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ১ হাজার ২শ’ ৬৬ জন, পাকিস্তান থেকে ৯শ’ ৭৩ জন এবং ভারত থেকে ৮শ’ ৯০ জন এমএম২ এইচ কর্মসূচির সুবিধা নিয়েছেন।
সেকেন্ড হোম কর্মসূচির আওতায় স্থাবর সুবিধা ও রাজস্ব হিসেবে মোট ১ হাজার ২শ’ ৮০ কোটি মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত জাতীয় অর্থনীতিতে যোগ হয়েছে।
পর্যটনমন্ত্রী আরো বলেন, অন্যদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় ঢুকার জন্য ভিসা ফি’তে ৫ কোটি ২০ লাখ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত আয় হয়েছে। এ ছাড়া ফিক্সড ডিপোজিট হয়েছে ৪শ’ ৯০ কোটি রিঙ্গিত। গাড়ি কেনা বাবদ ১৪ কোটি ৮০ লাখ রিঙ্গিত। স্থাবর সম্পত্তি কেনা বাবদ আয় ৪শ’ ৯০ কোটি রিঙ্গিত। আর এমএম২ এইচ সুবিধা নেয়া ব্যক্তিদের মাসিক হাত খরচ ১০ হাজার রিঙ্গিত।
তবে বাংলাদেশ থেকে যারা মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম গড়ে তুলেছেন তাদের কেউ বৈধ উপায়ে টাকা নিয়ে যাননি। ফলে এ প্রক্রিয়ার পুরো অর্থই দেশ থেকে পাচার হয়েছে। তবে এর নির্দিষ্ট কোনো পরিমাণ এখনও জানা যায়নি।
সেকেন্ড হোম গড়তে মালয়েশিয়া সরকারকে পরিষোধ করতে হয়েছে ৮ লাখ টাকা করে। সেই হিসেবে বাংলাদেশিরা দেশ থেকে নিয়ে গেছেন প্রায় ১ হাজার ৫শ কোটি টাকা।
আইন অনুযায়ী অন্য কোনো দেশে সেকেন্ড হোম করার জন্য অর্থ নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। অর্থ পাচারের ঘটনা তদন্ত করে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। তারা বলছে, গেলো বছর অর্থ পাচারের ৩২টি ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে মালয়েশিয়ায়ও রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনে এসব তথ্য পাঠানো হয়েছে।
এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস